somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিবির প্রতিভা(যাদের জীবন স্ত্রীময়)

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্ত্রীবুদ্ধির প্রতি পুরুষমানুষের ক্ষোভ অতি পুরোনো।প্রাচীন ঋষিরা বলেন স্ত্রীবুদ্ধিতে সর্বনাশ ঘটে।কিন্তু দুনিয়ায় এমন লোকের অভাব নেই,যারা বিবির বলে বলীয়ান হয়েই অকুলপাথার পাড়ি দিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে অনেকে আবার জগদ্বিখ্যাত।এতে রয়েছে এমন সব স্বামীর খবর, স্ত্রীবুদ্ধির কাছে রয়েছে অশেষ ঋণ।
সক্রেটিস:


সক্রেটিস বক্তৃতা করছেন। তার সামনে মুগ্ধ শ্রোতাদের দেখাচ্ছে পাথরের মূর্তির মতো। তন্ময় হয়ে তারা সক্রেটিসের যুক্তি-তর্ক আর জ্ঞানে উদ্ভাসিত বক্তৃতা শুনে যাচ্ছেন। জীবনের জটিলতম সমস্যার সমাধান বের হয়ে আসছে সরল পদ্ধতিগত পরামর্শে। সারাদিনে এ রকম আরও অসংখ্য সভায় পরিভ্রমণ করতে হচ্ছে সক্রেটিসকে। ফলে সময়ের অভাব দেখা দিয়েছে তার। সংসারের রুটি-রুজি নিয়ে ভাবার তার সময় মোটেও নেই। তাহলে চলবে কীভাবে সংসার?
সক্রেটিস পাথর কাটার কাজ শিখেছিলেন। কিন্তু পেশা হিসেবে সেই কাজটি কখনও করেননি তিনি। এথেনীয় তরুণদের পড়াতে গিয়ে কখনও সম্মানী বা বেতন দাবি করেননি। ফলে তাকে পারিবারিকভাবে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে যেতে হয়। কিন্তু পরিবারের কর্তা হিসেবে সংসারের দায়ভার তিনি কখনও বহন করেননি। সংসার চালানোর জন্য এগিয়ে আসেন তার স্ত্রী। পরিশ্রম করে তিনিই এ মহান দার্শনিকের সমস্যা দূর করেন। ম্যাক্সওয়েল অ্যান্ডারসন তার 'নগ্নপায়ে এথেনায়' নাটকে জানিয়েছেন, সক্রেটিসের স্ত্রী সংসার চালাতে ধোপানির কাজ করেছেন! ভাগ্যিস সক্রেটিসের স্ত্রী কঠিন পরিশ্রম করে সংসার টিকিয়ে রেখেছিলেন। না হলে এই দার্শনিকের কী যে হতো!
ডেভিড ডগলাস:


ডেভিড ডগলাস বিয়ে করেন জ্যামাইকার লুইস হ্যালামের বিধবা স্ত্রীকে। এসময় মিসেস ডগলার তার প্রয়াত স্বামীর থিয়েটার কোম্পানীটি সঙ্গে নিয়ে আসেন।ঐ থিয়েটারে তিনি ছিলেন স্টার।ডগলাস সেই কোম্পানীর ম্যানেজার বনে যান।
বেন দানিওয়ে:
স্বামী এক দূর্ঘটনায অচল হয়ে যাওয়ার পর আবিগেইল দানিওয়ে অকুল পাথারে পড়েন।৬ সন্তান ও স্বামীকে বাঁচানোর জন্য তিনি স্কুলে পড়ানোর কাজ নেন এবং টুপির একটা দোকান খোলেন।সেই সঙ্গে ১৮৭১ সালে তিনি পোর্টল্যান্ডে নারীদের জন্য নিউ ওয়েস্ট নামে একটি পত্রিকা প্রতিষ্ঠা করেন।আবিগেইল তার বাকী জীরন নারীদের ভোটাধিকার বিষয়ে উপদেশ দিয়ে কাটান।
উইলিয়াম কার্টার:
১৭৭১ সালের ১৫ই মার্চ ভার্জিনিয়া গেজেটে উইলিয়াম কার্টার ও সারাহ এলিসনের বিয়ের ঘোষনা প্রচারিত হয়।এ বেশ জলের মত বোঝা যাচ্ছিল যে তার স্ত্রীর পয়সাতেই বেঁচে বর্তে থাকতে চান।গেজেটে লেখা হয় জন কার্টারের ২৩ বছর বয়সী ৩য় পুত্র উইলিয়াম কার্টার ৩০০০ পাউন্ডের সৌভাগ্যের বিনিময়ে পরিনয় সূত্রে আবদ্ধ হলেন মৃত জেরার্ড এলিসনের বিবাহ পত্নী ৮৫ বছর বয়সী বৃদ্ধা সারাহ এলিসনের সাথে।
অ্যাইজ্যাক পিনখ্যাম:


৩০ বছর ধরে স্বামীর শেয়ার ব্যবসার আয় আদায়ের চেষ্টা করার পর মিসেস লিডিয়াই পিনখ্যাম ভিন্ন পথ ধরেন।বাণিজ্যিক বন্টনের উদ্দেশ্যে উদ্ভিজ্জ ও মদের সম্বনয়ে নতুন মিশ্রন তৈরি করেন যার মধ্যে অ্যালকোহল ছিল ১৮ শতাংশ।এর প্রথম বিক্রি শুরু হয় ১৮৭৫ সাল থেকে। এরপর ১৮৮৩ সালে তিনি যখন মারা যান তখন এই কোম্পানীর বার্ষিক মুনাফা দাঁড়ায় প্রায় তিন লক্ষ পাউন্ড।
হেনরি মাতিস:


একটা সময় মাতিস তার স্ত্রীর ওপর পুরোদস্তর নির্ভরশীল ছিলেন।তখন মাতিসের বাবা তার মাসোহারা বন্ধ করে দেন।এই নিদানকালে মাতিসের স্ত্রী প্যারিসে মেয়েলি সামগ্রীর একটি দোকান খুলে বসেন।যা তখন তাদের এক মাত্র আয় রোজগারের উপায় ছিল।
অস্কার ওয়াইল্ড:


অস্কার ওয়াইল্ড বিয়ের আগেই কবিতা ও নাটকের বই প্রকাশ করেছিলেন কিন্তু বিয়ের পর স্ত্রীই তার প্রধান অবলম্বন হয়ে দাঁড়ায়।তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বই “দি ইমপরটেন্স অব বিং আরনেস্ট” প্রকাশিত হওয়ার বছরই নিষিদ্ধ হয়ে যায়। কারণ তখন ওয়াইল্ডের এক যৌন কেলেঙ্কারী ফাঁস হয়ে যায়।এ ঘটনায় তার বিয়ে ও ক্যারিয়ার দুটোই ভেস্তে যায়।
পল লাফর্গ:


লরা লাফর্গ ছিলেন মহামতি কার্ল মার্ক্সের কন্যা। আবার তার স্বামী পল লাফর্গ “দ্য রাইট টু বি লেজি” নামের বিখ্যাত বইয়ের লেখক। পর চিকিৎসা পেশায় ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ সেটা ছেড়ে ফটোগ্রাফি ষ্টুডিওর ব্যবসায় নামেন। নতুন ব্যবসায় অর্থকরি এলেও তা পরিবারের জন্য মোটেও যথেষ্ট ছিল না। এই দম্পতির জীবিকার প্রধান উৎস ছিল ফ্রেডরিখ আঙ্গেলসের লরার জন্য উইল করে যাওয়া সম্পত্তি। ১৯১১ সালে সেটাও যখন ফুরিয়ে গেল, লফর্গ তখন দুবার অতিরিক্ত মরফিন নিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন।

পরবর্তী আকর্ষণ: “অদ্ভুতুড়ে মানুষগুলো”--নানা সময়ে এই দুনিয়ায় নানা রহস্যময় মানুষের আবির্ভাব হয়েছে। যাদের পরিচয় ও আসল চরিত্র নিয়ে এখনো সংশয় কাটে নি। এরকম কয়েকজনের গল্প....................
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×