somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কাঞ্চনজংঘা সংসার

০৫ ই জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সাল ২০১২, ১৫ই মে, সন্ধ্যেবেলা,
তোমারই এক বন্ধুর সাথে আলাপকালে বলেছিলাম,
রাবিন্দ্রীক নারী চাই, খুজে দিবি একটা,
কে জানে কোন প্রহসনে, ভাগ্যের কোন নির্মম পরিহাসে,
মহাবিশ্বের মত ঘুরে ঘুরে সে লেখা গিয়ে পড়ল তোমার ইনবক্সে,
তোমার বন্ধুটি চতুরতা করে আমার এ বিজ্ঞাপন, নিজদায়িত্বে পৌছিয়ে দিল তোমায়
তারপর তো সারারাত তর্কে-বিতর্কে ,রবী ঠাকুরকে ব্যাবচ্ছেদ করে করে
যখনই ভোরের আজান হল, দুজনের হুশ হল, অচেনা কারো সাথে বোধ করি
এর বেশী তর্ক টেনে বেড়ানো ঠিক হবে না,তাই এরপর দুজনেরই সম্মতিতে
প্রথম পরিচয়টা অসমাপ্ত রেখে দুজনে সেদিনের মত বিদেয় নিলাম।
সেদিন রবী বাবুকে নিয়ে যে তুমুল গবেষনা চলছিল তোমার আমার
এই একবিংশ শতাব্দীতে দুই নবীন তরুন তরুনী এভাবে ঐ বুড়োকে নিয়ে ভাবছে
জানলে তিনিও হয়তো খুশীতে আত্মহারা হয়ে দাড়ি মোচ কেটে বাবু সাজতেন।
হা হা হা , , ,
এক মাস বাদে, তোমার সেই বন্ধুটি যে আমারো বন্ধু তার সাথে দেখা,
কথা প্রসঙ্গে যে প্রসঙ্গ না তুললেই নয় সেটিই তোলা হল, যে ক্ষতিটি সে
প্রথমবার তোমার সাথে আলাপ করিয়ে করে নি,সেটি আজ ষোল-আনা পূরন করলো,
জিগেস করলো, " কিরে কথা হয়েছিল আর ওর সাথে? সাবধানে থাকিস, জ্বলন্ত আগুন,
সুযোগ পেলে পুরিয়ে মারবে" বলে মিটিমিটি হেসে চলে গেল। ওর প্রথম কথাটি কর্ণে প্রবেশ
করল ঠিকই তবে সাবধানবানী কানজোড়া শুনতে পেল কিন্তু মস্তিষ্ক আর সেটাকে গ্রাহ্য করল না।
ততক্ষনে দশ বিলিয়ন নিউরনের অনেকেই ঠিক করে ফেলেছে কি করতে হবে আজ,
ঘরে পৌছে খানিকটা ঘুমিয়ে নিয়ে ,ঘুম থেকে উঠতেই তোমার প্রোফাইলে গিয়ে মেসেজে দিলাম
নাড়া, "কেমন আছেন রাবিন্দ্রীক নারী?"। তখন কেই বা জানত বিনোদিনীর মত তুমি এই মাহেন্দ্রকে
পুড়িয়ে মারবে? তারপর কত চন্দ্রভূক আমাবশ্যা গেলে, কত কাব্যময়, শিল্পের মত রাত্রি পার হলো,
কতো প্রেম,কত ভালোবাসার উপন্যাস হয়ে ছিল তোমার আমার অল্প বয়সী প্রেম,
কোন কবি যদি দেখতে তবে মহাকাব্য লিখত, যদি বঙ্কিম চন্দ্র জানতো তবে বাংলা সাহিত্যে নতুন
উপন্যাসের অবতারণা হত।

যেমন করে অনেককাল মেঘে জমে থাকা আকাশ থেকে নামে মুষল বৃষ্টি,
তেমন করে যেন অনেককালের বুকে জমে থাকা তোমার আমার কথা গুলো রাত্রি হলে বেরিয়ে
আসত ফোনে, চ্যাটে। আস্তে আস্তে এই ভারচুয়াল প্রেম আর সঙ্গমে দিন আর যাচ্ছিল না,
দেখা করা চাই। দেখা করবার দিন ঠিক হল, আমি যখন নগরীর কোন এক প্রসিদ্ধ মোরে দাঁড়িয়ে
ছিলাম তোমার জন্য, ক্রমশ হ্রদয়ের সংকোচন-প্রসারন যে মাত্রায় হলে মানুষ মরে না ঠিক তার সর্বোচ্চ
বেগে তার কর্ম সম্পাদন করার চেষ্টা চালাচ্ছিল। কি জানি কেন তুমি আমাকে খেয়াল করলে না, আমাকে
পেরিয়েই সামনে হেটে যাচ্ছিল। তবে আমি বুঝতে পারছিলাম কাজটা তুমি ইচ্ছে করেই করেছিল,
তোমার ঐশ্বর্য যাতে বিনষ্ট না হয়, তোমার যে পুজনীয় স্বত্বা তাতে যাতে আঘাত না লাগে তাই জন্যে
নিজ থেকে আমাকে ডাকলেনা। আমাকে পেরিয়ে খানিকটা যখন এগিয়ে গেলে, আমি আস্তে আস্তে তোমার পেছন পেছন
হাটতে হাটতেই প্রশ্ন করলাম কেমন আছ? তুমি খুব একটা অবাক হওয়ার ভান না করে সাবলীলভাবেই
উত্তর দিলে। এরপর কিছু সময়ক্ষেপনের আলাপন, খুব ভালো করে খেয়াল করলাম যতটা পথ তুমি রাস্তায় হাটছিলে ঠিক
ততটা পথই পুরো রাস্তার সমস্ত লোক হা করে তাকিয়ে ছিল তোমার দিকে,আমাকে তোমার পেছনে
হাটতে দেখে হয়তো তাদের কারো কারো মনে জেগেছিল বিদ্রুপের হাসি। আস্তে আস্তে আমরা চলে আসলাম
তোমার বহুতল ফ্ল্যাটের নিচে, প্রশ্ন করলে ঘরের দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দেবে আমায়? আমি আর টুশব্দটি না
করে তোমার পিছু পিছু হাটা ধরলাম।তুমি লিফট এড়িয়ে গেলে,তোমার ৭ম তলার ফ্ল্যাটে লিফট এড়িয়ে
যখন তুমি সিড়ি বাইতে শুরু করলে তখনি হয়তো আমি ধরতে পেরেছিলাম কি চাচ্ছিলে তুমি মনে মনে,
আমি তোমার পিছু পিছু সিড়ি বেয়ে যাচ্ছিলাম, তবুও ইচ্ছে করেই বোকা সাধু সেজে শুধু শুধুই তোমাকে
অনুসরণ করছিলাম। দোতলা,তিনতলা আমি চুপচাপ অনুসরন করছিলাম দেখে তুমি হয়তো ভেবেছিল এই
বেকুবটিকে এভাবে হবে না, হঠাত আমায় দাড় করালো, মুহূর্তেই বুকের ওড়না সরিয়ে আমার হাতে দিলে
আমার হৃদস্পন্দন প্রায় বন্ধ হবার জোগাড়,তারপর কলেজের এপ্রোন খুলে ব্যাগে পুড়ে নিলে ওড়না আমার
হাতেই রয়ে গেল, আমার হাত থেকে ছিনিয়ে নিলে। হয়তো তখন আমার উপড় কিছুটা রাগ হচ্ছিল
তোমার হতচ্ছাড়া কিছুই বোঝেনা। ষষ্ঠ তলা বেয়ে তোমার সপ্তম তলার দিকে, খুব আস্তে আস্তে করে সিড়ি
বেয়ে উঠছিলে হয়তো এই ভেবে মৃত্যুর আগেও যেমন কেউ কেউ জেগে ওঠে ঠিক তেমনি ভাবে
এই প্রহর এভাবে নষ্ট হতে পারে না, এই কাব্য নিরস ভাবে ধ্বংস হওয়া ঠিক না। ঠিক সেই মুহূর্তে
আমি তোমাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলাম। তুমি যেন অজস্র বছর ধরে সাধনার পরম ধন পেলে, কি
ইনোসেন্ট শিশুর মত চোখ জোর বন্ধ করে খুব আস্তে করে "উহ" একটা শব্দ করে নিজের সমস্থ স্বত্বা
আমার কাছে সমর্পণ করলে। আমরা তোমার সাত তলা বেয়ে সিড়িঘরে উঠে গেলাম। জানিনা, কোন জনমের
ভূত আমার মধ্যে চেপে বসলো, কোন পাগলের আত্মা আমাকে বশ করলো, আমি পাগল হয়ে উঠলাম।
প্রথমবারের মত তোমার ঠোঁট স্পর্শ করলো আমার ঠোঁট। যেন রাত্রের অন্ধকার স্পর্শ করল
সকালের সূর্য কে আর ওমনি সূর্য তার সমস্ত দূতি নিয়ে জ্বালিয়ে দিবে এই বিশ্বকে। আমি ঠিক সেভাবেই
জ্বলে ঊঠলাম। কে এক অজানা শিহরনে নিজেকে এবং তোমাকে কাঁপিয়ে তুললাম।
সেদিন মনে হল ভালোবাসা আজ পূর্ণ হলো। আজ তুমি আমার হলে। তোমাকে আমি অর্জন করে নিলাম
কিন্তু সব প্রাপ্তি যে প্রাপ্য হয় না, কিছু মোহও হয় সেদিন তা আমার জানা ছিল না। তবে পাগলের মত সেদিন
তোমার ওপড় যে হামলা পড়া তা নিয়ে তোমার কত রসিকতা ছিল, কত গর্ব ছিল আমাকে নিয়ে।
এইসব যে একদিন গল্প হবে, একদিন মুছে যাবে স্লেটের চক পেন্সিলের দাগের মত কেই বা জানত।
তাহলে কেই বা যত্ন করে মনের মধ্যে সাজাতো একটা কাঞ্চঞ্জংঘা ঘুরতে যাবার স্বপ্ন, তোমাকে নিয়ে
বাকিটা জীবন গল্প-কবিতা সংসারের??
(এই গল্প চলবে কিনা জানিনা,গল্পের কিছু অংশ লেখা হল,বাকি অংশ লেখা হবে কিনা তাও জানা নেই।)
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:০৬
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগ লিখেছি: কথাটার পরে ভাসছে ১১ বছর ১১ মাস... কথাটা

লিখেছেন আবু ছােলহ, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৮

ব্লগ লিখেছি: কথাটার পরে ভাসছে ১১ বছর ১১ মাস... কথাটা

গুগল থেকে নেয়া ছবি।

সামুতে মাল্টি নিক নিয়ে অনেকেই কথা বলেন। অনেকের কাছে মাল্টি যন্ত্রণারও কারণ। শুধু যন্ত্রণা নয়, নরক যন্ত্রণাও... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×