somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বইমেলার নতুন বই - লাশ কাটার ঘরে

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



কাহিনি সংক্ষেপ: লাশ কাটার ঘরে

পিতৃমাতৃহীন অনাথ শিশু কালিদাসকে রেখে আসা হয়েছিল ময়মনসিংহে খ্রিস্টান মিশনারি কর্তৃক পরিচালিত একটা আশ্রয়স্থলে। সেখান থেকে কালিদাসকে ফাদার ম্যাথিউ পালতে নিজের বাসায় নিয়ে আসেন ও দেখাশুনার পাশাপাশি লেখাপড়াও করান। কিন্তু কিছুদিন পরেই ফাদার ম্যাথিউ ও তার সহকারি একটা ছেলেকে নির্মমভাবে খুন করে কালিদাস সহ আরো কয়েকটা ছেলে সেখান থেকে যে যার মতো পালিয়ে চলে যায়। ফাঁসির ভয়ে আতঙ্কিত কালিদাস ওর বাবার পূর্ব পরিচিত ডোম হরিদাসের কাছে আশ্রয় চাইলে, উনি ওকে নিয়ে চট্টগ্রামে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডোমের কাজ শেখানোর জন্য নিয়ে আসেন।
.
অল্প বয়সে ভয়ঙ্কর সেই ট্রমার প্রভাব কাটাতে কালিদাস নিজেই দেহের ভেতরে তৈরি করে সম্পূর্ণ নতুন কিন্তু একেবারেই বিপরীত চরিত্রের আরেকটা সত্তা, দীপনকে। ক্রমশ নিজের অতীতের ইতিহাস গোপন করে ফেলার জন্য কালিদাস এই নতুন সত্তাকে পরিচিত করে তোলে সব জায়গায়। কালিদাসের পরিচিতি গোপন করে ফেলে লোকচক্ষুর আড়ালে! ডোম হিসাবে পরিচিত হয়ে উঠে দীপন!
.
অল্পবয়সী সুন্দরী সীতাকে দেখামাত্রই পছন্দ হয়ে যায় দীপনের।‌ নিজের পেশাকে গোপন করে দ্রুত বিয়ে করে ফেলে। কিন্তু বিয়ের একবছর পরেই বুদ্ধিমতী সীতা বুঝে ফেলে দীপনের পেশা কী? স্বার্থপর ও লোভী সীতা নিজের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে দ্রুত অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলে বিত্তশালী আর একটা ছেলের সাথে। সেই অবৈধ সম্পর্কে বাধা দিতে গেলে দীপনকে নির্মমভাবে অত্যাচার করা হয়। নতুন আরেকটা ভয়ঙ্কর ট্রমা দীপন সামলাতে না পেরে খুব দ্রুত ওর মানসিক অবস্থা ভেঙে পড়ে। দ্রুত তৈরি হয় বিভিন্ন মানসিক ভয়াবহ সমস্যা। কালিদাস আবার স্বরূপে ফিরে আসার জন্য অস্থির হয়ে উঠে!
.
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মর্গের লাশ কাটা ঘরে ইদানীং বেশ কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছিল, যার প্রেক্ষিতে দীপনকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ। একাধিক নারী লাশের উপর নির্মম যৌন নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশ পেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চরম বিপদে পড়ে যায়। নেক্রোফিলিয়াক হোমোসাইডাল কেসে জন্য তদন্ত শুরু করে পুলিশ। একপর্যায়ে হাসপাতালের মানসিক চিকিৎসক ডাক্তার জামিলুরের দীপনকে নিয়ে ঘোরতর সন্দেহ হয় এবং ওর মানসিক চিকিৎসা কাজ শুরু করতে চান। কিন্তু দীপন উনার কাছে চিকিৎসা না করে নিজের মানসিক চিকিৎসার জন্য সাহায্য চাইতে আসে দেশের প্রতিথযশা সাইকোলজিস্ট নাবিলা হকের কাছে।
.
দীপনের চিকিৎসার সময় রোগীর দেওয়া বিভিন্ন তথ্যের অসঙ্গতি ও ঘাটতি দেখতে পেয়ে নাবিলা দীপনের ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করলে একের পর এক অনুসন্ধানে বের হয়ে আসে ভয়ঙ্কর সব অতীতের ঘটনার। নাবিলা আবিস্কার করে একাধিক সত্তার ক্রমশ বিবর্তনের ঘটনা ও গোপন নির্মম কিছু কাহিনী।
.
খ্রিস্টান মিশনারি চার্চ সেই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালায়।‌ মাল্টি পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার বা এমপিডি রোগে আক্রান্ত দীপনের সুচিকিৎসার জন্য নাবিলা সাইক্রিয়াটিস্ট জামিলুর রহমানের সাথে যৌথভাবে ওর মানসিক চিকিৎসার জন্য কাজ শুরু করেন।
.
নাবিলার অনুরোধে পুলিশের এএসপি মারুফ সাহেব এগিয়ে আসেন এবং জামিলুর সাহেবের সাথে উনিও যোগ দেন এই রহস্যময় ঘটনার তদন্ত কাজে। সবার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধায়নে প্রায় সুস্থই হয়ে উঠেছিল দীপন! কিন্তু কারো ভাগ্যে অশুভ কালসর্পের দোষ থাকলে সেটা কাটানো খুব কঠিন হয়ে যায়।
.
আচমকা দিনে দুপুরে শান্তশিষ্ট ও সুবোধ স্বভাবের দীপন প্রকাশ্যে খুন করে ফেলে একটা ছেলেকে! প্রকাশ্যে রাস্তার উপর থেকে একটা মেয়েকে কিডন্যাপ করে দীপন হারিয়ে যায় লোকচক্ষুর আড়ালে! কোনোভাবেই সেই মেয়েটার হদিশ না পেয়ে পুলিশ উদ্ধার কাজের জন্য সাহায্য চায় পুলিশের সাথে কাজে অভ্যস্ত ক্রিমিনাল সাইকোলজিস্ট নাবিলার কাছে!
.
কালিদাসের সাথে মানসিক যুদ্ধে জয়ী দীপন কেন হুট করেই এত বদলে আবার ফিরে গেল অতীতের কাছে? কালিদাসকে ঠেকানো জন্য এতসব প্রচেষ্টা কেন শেষে এসে ব্যর্থ হলো?
.
নাবিলা কি পারবে কালিদাস ওরফে দীপনের হাত থেকে সেই মেয়েকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করতে?
.
নেক্রোফিলিয়াক হোমোসাইড, মাল্টি পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার, মেইন ও অক্সিলারি ক্যারেক্টার, হোস্ট ও অল্টারের একই দেহে অদলবদল, হারম্যান রোকশাক ইঙ্কব্লট টেস্ট, ল্যাজারাস সিন্ড্রোম, সাইকিক-ইভালিউশন, প্যারাফেলিয়া, হ্যালুসিনেশন একের পর এক সাইকোলজিক্যাল টপিকে পাঠক হারিয়ে যাবেন পড়ার সময় অন্যভূবনের অচেনা মানসিক এক জগতে!
.
.
বইয়ের নাম: লাশ কাটার ঘরে
লেখক: মহিউদ্দিন মোহাম্মাদ যুনাইদ
জনরা: সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার, সাইকোলজিক্যাল ফিকশন
প্রচ্ছদ: মাসরু
প্রকাশনা সংস্থা: বাংলার প্রকাশন-Banglar Prokashon
পৃষ্ঠা: ১২৭
প্রকাশ কাল: বইমেলা ২০২৪
মুদ্রিত মূল্য: ৩৪০ টাকা

স্টল নাম্বার: ২০৭-২০৮

#থ্রিলার #ফিকশন #সাইকোলজি #একুশেবইমেলা #নেক্রোফেলিয়াক #এমপিডি #সাইকোলজির_বই
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:৪৪
১৮টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

=মৃত্যু কাছে, অথবা দূরেও নয়=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



©কাজী ফাতেমা ছবি
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দিয়ে বলি, আমারও সময় হবে যাবার
কি করে চলে যায় মানুষ হুটহাট, না বলে কয়ে,
মৃত্যু কী খুব কাছে নয়, অথবা খুব দূরে!
দূরে তবু ধরে নেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×