সেমি-বেজমেন্ট ছোট্ট ফ্ল্যাটে বসে অভুক্ত কিম পরিবার পিজ্জার ঠোঙ্গা বানায় আর একটিমাত্র জানালা দিয়ে দুনিয়া দেখে। প্রতিদিন একটা মাতাল এসে তাদের জানালার সামনেই প্রস্রাব করে যায়। ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবহার করে বাইরের দুনিয়ার সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে হয় তাদের। প্রতিটা দিন যেটুকু খাবার পায়, তা খেয়েই স্রষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে চার সদস্যের কিম পরিবার।
এই দুর্দশা থেকে তাদেরকে মুক্তি দিতে দেবদূতের মতো একদিন হঠাৎ কিমের ছেলে কি-উয়ের বন্ধু একটা সুন্দর প্রস্তাব নিয়ে আসে। প্রস্তাবটা এমন যে তার অবর্তমানে তার প্রিয় ছাত্রী ও পছন্দের মেয়েটিকে পড়ানোর দায়িত্ব কি-উকে নিতে হবে। কেননা শুধু তাকেই ভরসা করতে পারে সে।
এতেই কপাল খুলে যায় কিম পরিবারের। কি-উ শুরুতে মাস্টারি করতে গিয়ে মেয়ের মাকে পটায়, তারপর বন্ধুর বিশ্বাসভঙ্গ করে ছাত্রীর প্রেমে মজে। অতঃপর নানা ষড়যন্ত্র করে একে একে ছাত্রীর মায়ের সরলতার সুযোগ নিয়ে পরিবারের বাকিদের নিয়ে উঠে পড়ে ছাত্রীর বাড়িতে, আসল পরিচয় গোপন করে। কিম পরিবার পরজীবীর মতো আঁকড়ে ধরে পার্ক পরিবারকে।
এভাবে বেশ সুখেই কাটছিল কিমদের পরজীবী জীবন, যতক্ষণ না তারা আবিষ্কার করলো-- শুধু তারাই নয়, এই বাড়িতে পরজীবী আছে আরও! সেই থেকে রক্তারক্তি, রহস্য, থ্রিল চলতেই থাকে। কিন্তু সত্যি বেশিদিন চেপে রাখা যায় না; ছাইচাপা আগুনের মত ফুলকি ছড়িয়ে একদিন সে সবার সামনে বেরিয়ে আসে। আগুনের ফুলকি রূপান্তরিত হয় আগ্নেয়গিরিতে, আবারও হয় রক্তারক্তি, পড়ে লাশও। পরজীবীরাই একদিন খেয়ে ফেলে মূল গাছটিকেই, যে গাছটি তাদেরকে আশ্রয়, বিশ্রাম ও আহার দিয়েছিলো। আবার কিছু পরজীবী বিদায়ও নেয়। তখন কি-উয়ের জীবনে শুরু হয় মাকে নিয়ে নতুন সংগ্রাম, যার নাম দেওয়া যেতে পারে "'খুনি' বাবাকে মুক্ত করার সংগ্রাম"!
৪টি বিভাগে অস্কারপ্রাপ্ত দক্ষিণ কোরিয়ার সুপারহিট এই ছবিটি দেখলে অনেক কিছু শিখতে পারবেন। খুব সম্ভবত এটি আমার দেখা তৃতীয় কোরিয়ান ছবি। ভাষাটা বুঝলে দেখে আরও আনন্দ পেতাম। -- দেব দুলাল গুহ