গতকালের সড়ক দুর্ঘটনার পর রাতারাতি শহরের স্পিড ব্রেকারগুলো তুলে ফেলা হয়েছে! বালুভর্তি ট্রাকগুলো গতি না কমানোয় আর বালু ঢেকে না নেওয়ায় স্পিড ব্রেকারে ঝাঁকি খেয়ে রাস্তায় বালু পড়ে থাকে। কারো কারো ধারণা সেই বালুতে স্লিপ কেটে পাঠাও বাইকার বাইক থেকে পড়ে গিয়ে ট্রাকের নিচে চাপা পড়েন। তাই নাকি দাবি উঠেছিলো স্পিড ব্রেকার ভেঙে দিতে হবে! এ নিয়ে আজ সকালে নাকি প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনও হয়েছে!
স্পিডব্রেকার দেওয়া হয় গাড়ির গতি কমানোর জন্য। গতি না কমিয়ে কেউ দুর্ঘটনার শিকার হলে এটা তার দায়। সেজন্য আন্দোলনের মুখে স্পিড ব্রেকার তুলে নিতে হবে? রাস্তা পাড় হতে গিয়ে এরপর আবার কেউ মরলে তখন কি আবার স্পিড ব্রেকার বসাবেন? সরকারি অর্থের অপচয় নয় কি এসব?
বাইক রাইডারের দেখা উচিত ছিলো সামনে স্পিড ব্রেকার আছে, ধীরে যাওয়া উচিত ছিলো তার। সিসি ফুটেজ চেক করলে হয়তো দেখা যাবে তিনি গতি কমাননি, ট্রাকও গতি কমায়নি। প্রতিনিয়ত উচ্চগতিতে বালুভর্তি ট্রাক ঢাকনা ছাড়াই গতি না কমিয়ে ঐসব স্পিড ব্রেকারের উপর দিয়ে যায় আর বালু পড়ে রাস্তায়। সেই বালুতে স্লিপ কেটে উচ্চগতির বাইকার যদি সেই ট্রাকের তলে যায়, এখানে দোষটা ঐ চালকদের, স্পিড ব্রেকারের কী দোষ? ছোট ছোট স্পিড ব্রেকারের বদলে ওখানে আরও উঁচু একটা করে স্পিড ব্রেকার বসানো দরকার, যাতে গতি না কমিয়ে যত বড় যানবাহনই হোক কেউ যেতে না পারে।
শহরে কোনো ওভারপাস নাই, নাই জেব্রা ক্রসিং। রাস্তা পাড় হতে গিয়ে কেউ আবার চাপা পড়লে তখন কি আবার স্পিড ব্রেকার বসাবেন? ফিরিয়ে কি দিতে পারবেন হারানো জীবন? শ্রী অঙ্গন ও হাউজিং তথা মাইক্রোস্ট্যান্ড সংলগ্ন স্পিড ব্রেকার যে তুলে দিলেন, এখন ঐখান দিয়ে গাড়িগুলো তো আরও গতিতে চলবে। তখন রাস্তা পাড় হতে গিয়ে আমরা মরলে তার দায় কি আপনারা প্রশাসন-পৌরসভা নিবেন
গতকালের লেখা
ফরিদপুর ডিসি অফিস সংলগ্ন জেলা সাবরেজিস্ট্রি অফিসের সামনে বালুর ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে এক পাঠাও কুরিয়ার কর্মী নিহত হয়েছেন। তিনি বাইকে ছিলেন, বাড়ি পাবনায়। এখন তার শরীরের উপরের অর্ধেক খণ্ডবিখণ্ড হয়ে রাস্তায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে।
বেশ কিছুদিন ধরেই আমরা বালুর ট্রাকের অতিরিক্ত গতিতে চলাফেরা নিয়ে কথা বলেছি, কিন্তু কেউ আমাদের কথা কর্ণপাত করেনি। এখন কি শিক্ষা হলো? ডিসি অফিসের সামনে পরপর তিনটি স্পিড ব্রেকার থাকার পরেও পরপর তিনটি বালুভর্তি ট্রাক তাকে চাপা দিয়ে চলে যায়! এই শহরে এই মাস্তানদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কি কেউ নাই?
প্রশাসনের কাছে এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই। দায়ীদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। নিরাপদ সড়ক চাই ফরিদপুরে।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০২৪ সকাল ১১:৫৪