somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভুল নং-১৩: সহিহ হাদিসের অপব্যক্ষা নাকি যথার্থ ব্যক্ষা!

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

লেখক বলছেন, উক্ত হাদীসের ভুলব্যাখ্যা করে বলা হয় যে, ফর্সাহওয়ার পর ফজরের ছালাত শুরুকরতে হবে। কারণ এটাইসর্বোত্তম। এরপর তিনি হেদায়ারপ্রসঙ্গ টানার পর বলেছেন, অথচউক্ত ব্যাখ্যা চরম বিভ্রান্তিকরএবং ছহীহ হাদীসের প্রকাশ্যবিরোধী। কারণ,-(ক) ইমাম তিরমিযী (২০৯-২৭৯ হিঃ)উক্ত হাদীস বর্ণনা করে বলেন,ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﺸَّﺎﻓِﻌِﻰُّ ﻭَﺃَﺣْﻤَﺪُ ﻭَﺇِﺳْﺤَﺎﻕُ ﻣَﻌْﻨَﻰﺍﻟْﺈِﺳْﻔَﺎﺭِ ﺃَﻥْ ﻳَّﻀِﺢَ ﺍﻟْﻔَﺠْﺮُ ﻓَﻠَﺎ ﻳُﺸَﻚُّ ﻓِﻴْﻪِﻭَﻟَﻢْ ﻳَﺮَﻭْﺍ ﺃَﻥَّ ﻣَﻌْﻨَﻰ ﺍﻟْﺈِﺳْﻔَﺎﺭِ ﺗَﺄْﺧِﻴْﺮُ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓِইমাম শাফেঈ, আহমাদ ও ইসহাক্ববলেন, ‘ইসফার’ হল, ফজর প্রকাশিতহওয়া, যাতে কোন সন্দেহ না থাকে।তারা কেউ বর্ণনা করেননি যে,ইসফার অর্থ ছালাত দেরী করে পড়া।পর্যালোচনা:দেখুন, লেখক দাবী করছেন উক্তব্যাখ্যা চরম বিভ্রান্তিকর এবংসহীহ হাদীসের প্রকাশ্য বিরোধী।কীভাবে সহীহ হাদীসের প্রকাশ্যবিরোধী হল তার কারণ বর্ণনা করতেগিয়ে তিনি ইমাম তিরমিযী কর্তৃকউদ্ধৃত ইমাম শাফিঈ, আহমাদ ওইসহাকের ব্যাখ্যার উল্লেখকরেছেন অতঃপর ইমাম তাহাবী ওশায়খ আলবানীর বক্তব্য উদ্ধৃতকরেছেন। কোনো সহীহ হাদীসেরউদ্ধৃতি তিনি পেশ করেননি। তিনিসূক্ষ্মভাবে ইমাম শাফিঈ, আহমাদও ইসহাকের ব্যাখ্যা এবং ইমামতাহাবী ও শায়খ আলবানীরবক্তব্যকে সহীহ হাদীস বলেচালিয়ে দিলেন। লেখকের ধারণায়,পাঠক তাঁর এই সূক্ষ্ম কৌশলঅনুধাবন করতে পারবে না। এটাপাঠককে অবমূল্যায়ণ করার শামিল।আর আমানতের খিয়ানতের প্রশ্নতো থেকেই যায়। তাছাড়া কারওবক্তব্যকে, কারও ব্যাখ্যাকে হাদীসবলা, তাও আবার সহীহ হাদীস?নাউযুবিল্লাহ। এটা তো হাদীস জালকরার নামান্তর



ইমাম তিরমিযী রাহ. রাফে‘ ইবন
খাদীজের রা. হাদীসটি উল্লেখ করার
পর যা বলেছেন লেখক তার অর্ধেক
উদ্ধৃত করেছেন আর অর্ধেক গোপন
করে গেছেন। ইমাম তিরমিযীর পুরো
কথাটি এইরূপ :
ﻭَﻗَﺪْ ﺭَﺃَﻯ ﻏَﻴْﺮُ ﻭَﺍﺣﺪٍ ﻣِﻦْ ﺃَﻫْﻞِ ﺍﻟْﻌِﻠْﻢِ ﻣِﻦْ
ﺃَﺻْﺤَﺎﺏِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ
ﻭَﺍﻟﺘَّﺎﺑِﻌِﻴْﻦَ ﺍَﻟْﺈِﺳْﻔَﺎﺭَ ﺑِﺼَﻠَﺎﺓِ ﺍﻟْﻔَﺠْﺮِ ﻭَﺑِﻪِ
ﻳَﻘُﻮْﻝُ ﺳُﻔْﻴَﺎﻥُ ﺍﻟﺜَّﻮْﺭِﻱ ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﺸَّﺎﻓِﻌِﻲُّ ﻭَ
ﺃَﺣْﻤَﺪُ ﻭَ ﺇِﺳْﺤﻖُ ﻣَﻌْﻨَﻰ ﺍﻟْﺈِﺳْﻔَﺎﺭِ ﺃَﻥْ ﻳَّﻀِﺢَ
ﺍﻟْﻔَﺠْﺮُ ﻓَﻠَﺎ ﻳُﺸَﻚُّ ﻓِﻴْﻪِ ﻭَﻟَﻢْ ﻳَﺮَﻭْﺍ ﺃَﻥَّ ﻣَﻌْﻨَﻰ
ﺍﻟْﺈِﺳْﻔَﺎﺭِ ﺗَﺄْﺧِﻴْﺮُ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓِ
অর্থাৎ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম সাহাবীগণের মধ্য হতে
এবং তাবেঈগনের মধ্য হতে একাধিক
আহ্লে ইল্ম সাহাবী ও তাবেঈ
ইসফার বিল ফাজ্র তথা ফজরকে
ফর্সা করে আদায় করার মত পোষণ
করেছেন। সুফ্ইয়ান সাওরীও এই মত
ব্যক্ত করেন এবং ইমাম শাফিঈ,
আহমাদ ও ইসহাক্ব বলেন... (উপরে
দেখুন)
আসল ব্যাপার হল, ইমাম তিরমিযী
রাহ. প্রথমে একটি অনুচ্ছেদে
তাগলীস বিল ফাজর সংক্রান্ত
হাদীস উল্লেখ করে ইমাম শাফিঈ,
আহমাদ ও ইসহাকের মত উল্লেখ
করেছিলেন যে, তাঁরা তাগলীস বিল
ফাজরকে মুস্তাহাব বলেন। অতঃপর
পরবর্তী অনুচ্ছেদে তিনি ইসফার
বিল ফাজর সংক্রান্ত হাদীস
উল্লেখ করে বললেন যে, একাধিক
সাহাবী ও তাবিঈ - যাঁরা ইলমের
অধিকারী- ইসফার বিল ফাজরের
পক্ষে মত পোষণ করেন। এদিকে
ইসফার বিল ফাজর সংক্রান্ত
হাদীসটি যেহেতু ইমাম শাফিঈ,
আহমাদ ও ইসহাকের মতের বিপক্ষে
যায় সেহেতু তাঁদের নিকট এই
হাদীসের কী ব্যাখ্যা আছে তা জানান
দেওয়ার জন্য ইমাম তিরমিযী তাঁদের
কৃত ব্যাখ্যাটি এখানে উল্লেখ করে
দিলেন।
একাধিক আহলে ইলম সাহাবী ও
তাবিঈ ইসফার বিল ফাজরকে
মুস্তাহাব বলে মনে করেন। একাধিক
অর্থ দুই চারজন নয়। দুই চারজন
হলে ইমাম তিরমিযী তাঁদের নাম
উল্লেখ করে দিতেন, যেমনটা
উল্লেখ করেছেন তাগলীস বিল
ফাজরের পক্ষে মত
পোষণকারীগণের নাম। ﻏﻴﺮ ﻭﺍﺣﺪ বা
একাধিক বলে সাধারণত প্রচুর
সংখ্যক বোঝানো হয়। তাগলীস বিল
ফাজরের পক্ষে মত পোষণকারী
কোনো সাহাবী আছে কি নাই বা
থাকলে তাদের সংখ্যা কী পরিমান
সেটি ভিন্ন বিষয়। আমাদের
আলোচনা চলছে ইমাম তিরমিযীর
মন্তব্য নিয়ে। তো ইমাম তিরমিযীর
বক্তব্য অনুযায়ী বহু সংখ্যক সাহাবী
ও তাবিঈ ইসফার বিল ফাজরের
প্রবক্তা। আমাদের দেশে বা পৃথিবীর
বিভিন্ন জায়গায় যাঁরা ফজরকে
ইসফার তথা ফর্সা করে আদায়
করাকে মুস্তাহাব বলে জ্ঞান করেন
এবং সেই অনুযায়ী আমল করেন
লেখকের বক্তব্য মতে তাঁরা যদি
জাল হাদীসের ভিত্তিতে এবং সহীহ
হাদীসের অপব্যাখ্যা করে এরূপ
আমল করেন তাহলে ঐ সকল সাহাবী
ও তাবিঈগণও কি জাল হাদীস
অনুযায়ী আমল করতেন? তাঁরাও কি
সহীহ হাদীসের অপব্যাখ্যা করে
ইসফার বিল ফাজর করতেন?
নাউযুবিল্লাহ। কথা বলতে বা লিখতে
অসাবধানতাবশত ভুল হতেই পারে।
কিন্তু তারও একটা মাত্রা থাকা
উচিত। নইলে সেটাকে
অসাবধানতাজনিত ভুল বলা যাবে না,
ইচ্ছাকৃত জালিয়াতি ও ধৃষ্টতা বলতে
হবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৫
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×