সাত নম্বরে উল্লেখকৃত লেখকেরপঞ্চম দলীলতা হল, সুনানে আবু দাউদের একটিহাদীস। যাতে বলা হয়েছে যে,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম একবার ফজরের সালাতঅন্ধকারে আদায় করলেন অতঃপরএকবার আদায় করলেন ইসফার করে।অতঃপর আমৃত্যু তাঁর সালাত ছিলঅন্ধকারে। তিনি আর ইসফারকরেননি।
লেখক হাদীসটির যে তরজমাকরেছেন এবং অতঃপর যে মন্তব্যকরেছেন তা নিয়ে পরে আলোচনাকরব ইনশাআল্লাহ।
তার পূর্বেহাদীসটি নিয়েই কিছু আলোচনাআছে।এই হাদীসটি আসলে লম্বা একটিহাদীসের টুকরা। পুরো হাদীসটিএইরূপ
:ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻣُﺤَﻤَّﺪُ ﺑْﻦُ ﺳَﻠَﻤَﺔَ ﺍﻟْﻤُﺮَﺍﺩِﻯُّ ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎﺍﺑْﻦُ ﻭَﻫْﺐٍ ﻋَﻦْ ﺃُﺳَﺎﻣَﺔَ ﺑْﻦِ ﺯَﻳْﺪٍ ﺍﻟﻠَّﻴْﺜِﻰِّ ﺃَﻥَّﺍﺑْﻦَ ﺷِﻬَﺎﺏٍ ﺃَﺧْﺒَﺮَﻩُ ﺃَﻥَّ ﻋُﻤَﺮَ ﺑْﻦَ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟْﻌَﺰِﻳﺰِﻛَﺎﻥَ ﻗَﺎﻋِﺪًﺍ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﻤِﻨْﺒَﺮِ ﻓَﺄَﺧَّﺮَ ﺍﻟْﻌَﺼْﺮَ ﺷَﻴْﺌًﺎﻓَﻘَﺎﻝَ ﻟَﻪُ ﻋُﺮْﻭَﺓُ ﺑْﻦُ ﺍﻟﺰُّﺑَﻴْﺮِ ﺃَﻣَﺎ ﺇِﻥَّ ﺟِﺒْﺮِﻳﻞَ -ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ- ﻗَﺪْ ﺃَﺧْﺒَﺮَ ﻣُﺤَﻤَّﺪًﺍ -ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ- ﺑِﻮَﻗْﺖِ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓِﻓَﻘَﺎﻝَ ﻟَﻪُ ﻋُﻤَﺮُ ﺍﻋْﻠَﻢْ ﻣَﺎ ﺗَﻘُﻮﻝُ.ﻓَﻘَﺎﻝَﻋُﺮْﻭَﺓُﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺑَﺸِﻴﺮَ ﺑْﻦَ ﺃَﺑِﻰ ﻣَﺴْﻌُﻮﺩٍ ﻳَﻘُﻮﻝُﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺃَﺑَﺎ ﻣَﺴْﻌُﻮﺩٍ ﺍﻷَﻧْﺼَﺎﺭِﻯَّ ﻳَﻘُﻮﻝُﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ -ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪﻭﺳﻠﻢ- ﻳَﻘُﻮﻝُ » ﻧَﺰَﻝَ ﺟِﺒْﺮِﻳﻞُ -ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ- ﻓَﺄَﺧْﺒَﺮَﻧِﻰ ﺑِﻮَﻗْﺖِ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓِﻓَﺼَﻠَّﻴْﺖُ ﻣَﻌَﻪُ ﺛُﻢَّ ﺻَﻠَّﻴْﺖُ ﻣَﻌَﻪُ ﺛُﻢَّ ﺻَﻠَّﻴْﺖُﻣَﻌَﻪُ ﺛُﻢَّ ﺻَﻠَّﻴْﺖُ ﻣَﻌَﻪُ ﺛُﻢَّ ﺻَﻠَّﻴْﺖُ ﻣَﻌَﻪُ «.ﻳَﺤْﺴُﺐُ ﺑِﺄَﺻَﺎﺑِﻌِﻪِ ﺧَﻤْﺲَ ﺻَﻠَﻮَﺍﺕٍ ))ﻓَﺮَﺃَﻳْﺖُﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ -ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ-ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻈُّﻬْﺮَ ﺣِﻴﻦَ ﺗَﺰُﻭﻝُ ﺍﻟﺸَّﻤْﺲُ ﻭَﺭُﺑَّﻤَﺎﺃَﺧَّﺮَﻫَﺎ ﺣِﻴﻦَ ﻳَﺸْﺘَﺪُّ ﺍﻟْﺤَﺮُّ ﻭَﺭَﺃَﻳْﺘُﻪُ ﻳُﺼَﻠِّﻰﺍﻟْﻌَﺼْﺮَ ﻭَﺍﻟﺸَّﻤْﺲُ ﻣُﺮْﺗَﻔِﻌَﺔٌ ﺑَﻴْﻀَﺎﺀُ ﻗَﺒْﻞَ ﺃَﻥْﺗَﺪْﺧُﻠَﻬَﺎ ﺍﻟﺼُّﻔْﺮَﺓُ ﻓَﻴَﻨْﺼَﺮِﻑُ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﻣِﻦَﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ ﻓَﻴَﺄْﺗِﻰ ﺫَﺍ ﺍﻟْﺤُﻠَﻴْﻔَﺔِ ﻗَﺒْﻞَ ﻏُﺮُﻭﺏِﺍﻟﺸَّﻤْﺲِ ﻭَﻳُﺼَﻠِّﻰ ﺍﻟْﻤَﻐْﺮِﺏَ ﺣِﻴﻦَ ﺗَﺴْﻘُﻂُﺍﻟﺸَّﻤْﺲُ ﻭَﻳُﺼَﻠِّﻰ ﺍﻟْﻌِﺸَﺎﺀَ ﺣِﻴﻦَ ﻳَﺴْﻮَﺩُّﺍﻷُﻓُﻖُ ﻭَﺭُﺑَّﻤَﺎ ﺃَﺧَّﺮَﻫَﺎ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﺠْﺘَﻤِﻊَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُﻭَﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﺼُّﺒْﺢَ ﻣَﺮَّﺓً ﺑِﻐَﻠَﺲٍ ﺛُﻢَّ ﺻَﻠَّﻰ ﻣَﺮَّﺓًﺃُﺧْﺮَﻯ ﻓَﺄَﺳْﻔَﺮَ ﺑِﻬَﺎ ﺛُﻢَّ ﻛَﺎﻧَﺖْ ﺻَﻼَﺗُﻪُ ﺑَﻌْﺪَﺫَﻟِﻚَ ﺍﻟﺘَّﻐْﻠِﻴﺲَ ﺣَﺘَّﻰ ﻣَﺎﺕَ ﻭَﻟَﻢْ ﻳَﻌُﺪْ ﺇِﻟَﻰ ﺃَﻥْﻳُﺴْﻔﺮ((
আলোচ্য হাদীসটি ব্যকেট করা অংশের অংশ বিশেষ। আর এইআন্ডার লাইন করা অংশ তথাওয়াক্তের বিশদ বিবরণ সম্বলিতঅংশটুকুকে ইমাম আবু দাউদ রাহ.মা‘লূল বা দোষযুক্ত সাব্যস্তকরেছেন। কারণ, ইব্ন শিহাব যুহরীরশাগরেদদের মধ্য হতে এক উসামাইব্ন যায়দ আল-লাইছী ব্যতীত আরকেউ এই অংশটুকু বর্ণনা করেন না।মা‘মার, ইমাম মালেক, সুফইয়ান ইব্নউয়াইনাহ, শুআইব ইব্ন আবূ হামযাহ,লাইছ ইব্ন সা‘দসহ ইব্ন শিহাবযুহ্রীর অন্যান্য হাফেজে হাদীসশাগরেদগণ এই অংশটুকু বর্ণনাকরেন না। আবার উরওয়া হতে হিশামইব্ন উরওয়া ও হাবীব ইব্ন আবূমারযূকও যুহরীর এই শাগরেদগণেরঅনুরূপ বর্ণনা করেন। তাঁরা সকলেইﻳﺤﺴﺐ ﺑﺎﺻﺎﺑﻌﻪ ﺧﻤﺲ ﺻﻠﻮﺍﺕপর্যন্ত বর্ণনা করেন। পরবর্তীঅংশটুকু তাঁদের কেউই বর্ণনা করেননা। দেখুন, বুখারী ও মুসলিমরাহিমাহুমাল্লাহতাঁদের গ্রন্থেহাদীসটি সন্নিবেশিত করেছেন কিন্তুতাঁদের কেউই এই অংশ সম্বলিতহাদীসটি গ্রহণ করেননি। তার কারণ,সম্ভবত এই ইল্লাত বা দোষ। ইমামআবূ দাউদ রাহ.-এর মন্তব্যটি হুবহুতুলে ধরছি, দেখুন।ﻗَﺎﻝَ ﺃَﺑُﻮ ﺩَﺍﻭُﺩَ ﻭَﺭَﻭَﻯ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﺤَﺪِﻳﺚَ ﻋَﻦِﺍﻟﺰُّﻫْﺮِﻯِّ ﻣَﻌْﻤَﺮٌ ﻭَﻣَﺎﻟِﻚٌ ﻭَﺍﺑْﻦُ ﻋُﻴَﻴْﻨَﺔَﻭَﺷُﻌَﻴْﺐُ ﺑْﻦُ ﺃَﺑِﻰ ﺣَﻤْﺰَﺓَ ﻭَﺍﻟﻠَّﻴْﺚُ ﺑْﻦُ ﺳَﻌْﺪٍﻭَﻏَﻴْﺮُﻫُﻢْ ﻟَﻢْ ﻳَﺬْﻛُﺮُﻭﺍ ﺍﻟْﻮَﻗْﺖَ ﺍﻟَّﺬِﻯ ﺻَﻠَّﻰﻓِﻴﻪِ ﻭَﻟَﻢْ ﻳُﻔَﺴِّﺮُﻭﻩُ ﻭَﻛَﺬَﻟِﻚَ ﺃَﻳْﻀًﺎ ﺭَﻭَﺍﻩُﻫِﺸَﺎﻡُ ﺑْﻦُ ﻋُﺮْﻭَﺓَ ﻭَﺣَﺒِﻴﺐُ ﺑْﻦُ ﺃَﺑِﻰ ﻣَﺮْﺯُﻭﻕٍﻋَﻦْ ﻋُﺮْﻭَﺓَ ﻧَﺤْﻮَ ﺭِﻭَﺍﻳَﺔِ ﻣَﻌْﻤَﺮٍ ﻭَﺃَﺻْﺤَﺎﺑِﻪِঅতএব বোঝা গেল, আলোচ্যহাদীসটি উসামা ইবন যায়দ আল-লাইছীর শায বা দল-বিচ্ছিন্ন বর্ণনা।আর হাদীস সহীহ হওয়ার পথেদলবিচ্ছিন্নতা একটি বড় বাধা। যেসম্পর্কে পূর্বে আমি বিশদআলোচনা করে এসেছি। কাজেইতাগলীস বিল ফাজরের পক্ষে দলীলহিসাবে এই হাদীসটিকে উপস্থাপনকরা সঠিক বলে মনে করি না।প্রসঙ্গত বলছি, লেখক হাদীসটিরﺛﻢ ﺻﻠﻰ ﻣﺮﺓ ﺍﺧﺮﻯ ﻓﺎﺳﻔﺮ ﺑﻬﺎ এইঅংশের তরজমা করেছেন এইরূপ :‘অতঃপর একবার পড়তে পড়তেফর্সা করে দিয়েছিলেন।’ তরজমাটিভুল বলে মনে হয়। অংশটির তরজমাএইরূপ হওয়া উচিত: অতঃপরআরেকবার তিনি সালাত আদায়করলেন, তো ফর্সা করে আদায়করলেন। লেখক এরপর লিখেছেন :উক্ত হাদীস প্রমাণ করে যে, একবারতিনি দীর্ঘ ক্বিরাআত করে ফর্সাকরেছিলেন। যা সর্বাধিক উত্তম।এরপর থেকে অন্ধকার থাকতেইছালাত শেষ করতেন।বিস্ময়কর! যা সর্বাধিক উত্তমরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম তা একবারমাত্র পালনকরে সারাজীবন তা পরিহার করেগেলেন? হাঁ কোনো কারণে তা হতেপারে, কিন্তু কী সে কারণ? লেখককেন তা উল্লেখ না করে এড়িয়েগেলেন? এড়িয়ে গেলেন, না তার নিকটএ সম্পর্কে কোনো জ্ঞানই নেই?আল্লাহই ভাল জানেন।
তাগলীস বিল ফাজরের পক্ষে লেখকেরপেশকৃত দলীলসমূহের আলোচনারএকটি পর্যায় এখানে শেষ হল।