somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অতৃপ্ত হৃদয় [নাটক]

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


নিলয় খুব ভালো একটি ছেলে । ওর বাবা মারা গেছে ৫ বছর হয়েছে । ওরা খুব ধনী । ওর বাবার রেখে যাওয়া ওদের একটা গ্রুপ অব কোম্পানী রয়েছে । ওদের কোম্পানিটি এখন দেখাশুনা করে ওদের মা । নিলয় আশা ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ করে । ওর বন্ধু তন্ময়ও একই সাথে পরে । নিলয় আর তন্ময়ের বাসা একেবারেই কাছে ।অপরদিকে তন্ময় ও খুব সম্ভ্রান্ত পরিবারের ।
১ম দৃশ্য
[একদিন নিলয় আর তন্ময় ইউনিভার্সিটিতে যাচ্ছে]
তন্ময়ঃ- এই নিলয় দেখতো ঐ কাগজটি কিসের?
নিলয়ঃ-ওহ মাই গড,এতো ইডেন কলেজের একটি মেয়ের এইচএসসি পরিক্ষার প্রবেশপত্র ।(নিলয় অবাক হয়ে গেলো)
তন্ময়ঃ-তাই?মেয়েটির নাম কি নিলয়?
নিলয়ঃ-মেয়েটির নাম এখানে তো লেখা আছে পূষ্প আক্তার ।তন্ময় বন্ধু তুই ভার্সিটিতে যা,আমি এখনই বাইক নিয়ে যাচ্ছি ইডেন কলেজে । মেয়েটির আরেকটু পরেই পরিক্ষা শুরু হবে ।
তন্ময়ঃ- আচ্ছা বন্ধু ।
[এদিকে পরিক্ষার সময় হয়ে এলো । সবাই পরিক্ষার হলে প্রবেশ করছে । পূষ্প ও প্রবেশ করা শুরু করছে ।]
দায়িত্বরত কর্মকর্তাঃ- এই তোমার প্রবেশপত্র দাও?
[পূষ্প ওর ফাইল থেকে প্রবেশপত্র বের করতে গেছে । কিন্তু ফাইলের মধ্যে প্রবেশপত্র পাওয়া যাচ্ছেনা ।]
পূষ্পঃ- স্যার আমারতো প্রবেশপত্র পাচ্ছিনা ।(কেঁদে দিয়ে)
দায়িত্বরত কর্মকর্তাঃ- তাহলে তো তোমাকে হলে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবেনা ।
পূষ্পঃ- প্লীজ স্যার আমাকে হলে ঢুকতে দিন । আমার প্রবেশপত্র হারিয়ে গেছে ।
দায়িত্বরত কর্মকর্তাঃ- না আমার পক্ষে সম্ভব নয় ।
[এদিকে নিলয় বাইকে এসে নামলো]
নিলয়ঃ- ভাই এই মেয়েটিকে চিনেন?
জনৈক লোকঃ- না ।
নিলয় দ্রুত একটা মাইক নিয়ে এসে বলতে লাগলোঃ-পূষ্প আক্তার নামে এক পরিক্ষার্থীর প্রবেশপত্র হারিয়ে গেছে । দয়া করে কেউ শুনতে পারলে পুষ্প আক্তারকে খবর দিন ।
[এই মাইকিং পূষ্পের কানে গেল]
[নিলয় একদম কলেজের গেটে চলে আসছে]
পূষ্পঃ- ভাইয়া দ্রুত প্রবেশপত্রটি দিন । এটি আমার প্রবেশপত্র ।
নিলয়ঃ- এই নিন । আপনি দ্রুত পরিক্ষা দিতে যান ।
[পূষ্প দ্রুত পরিক্ষা দিতে চলে গেল]
[নিলয়ের প্রস্থান]
২য় দৃশ্য
[এদিকে রাত্রে নিলয়ের ঘুম আসছে না । শুধু পূষ্পকে নিয়ে সে ভাবছে]
নিলয়ঃ- এতো সুন্দর চেহারা আমি আমার জীবনে একটাও দেখি নাই । আমি সত্যিই পূষ্পের রুপে পাগল হয়ে যাবো । কিন্তু মেয়েটিকে খুঁজে পাবো কোথায়? দেখি ওর কলেজে পাওয়া যায় কিনা?(আস্তে আস্তে)
[অপর দিকে পুষ্পের ও ঘুম আসছে না । পূষ্প ছেলেটির কাছে কৃতজ্ঞ । কিন্তু এই বিশাল ঢাকা শহরে সে ছেলেটিকে কোথায় খুঁজে পাবে । ওর বিপদের সময় ছেলেটি ওকে যা সাহায্য করলো তা ভোলার মত নয় । তাছাড়া ও ছেলেটিকে একটা ধন্যবাদ ও দিতে পারেনি ।]
[নিলয়ের বাসায় তন্ময়ের আগমন]
তন্ময়ঃ-কিরে নিলয় মেয়েটিকে পেযেছিলি,প্রবেশপত্র দিয়ে এসেছো?
নিলয়ঃ- হ্যা দোস্ত প্রবেশপত্র দিয়েছি মেয়েটিকে । ক্নিতু মেয়েটিকে আমার বড় দেখতে ইচ্ছা করতেছে ।
তন্ময়ঃ- কেনো মনে ধরেছে বুঝি?
নিলয়ঃ- আর বলিসনা । মেয়েটির যা চেহারা তা মেয়েটিকে দেথলে এই জগত সংসারের সবাই প্রেমে পরে যাবে । একেবারে ডানাকাটা পরি ।
তন্ময়ঃ- বুঝছি মেয়েটির প্রেমে পরে গেছো তুই ।
নিলয়ঃ- হ্যা । চল তন্ময় মেয়েটির কলেজে গিয়ে দেখি ওকে পাওয়া যায় কিনা?
[ওরা দুজনে কলেজে এসে অনেক খোজাখুজি করলো কিন্তু পূষ্পকে খুঁজে পেলনা]
৩য় দৃশ্য
[পুষ্প আর আঁখি একই কলেজেই পড়ে । ওরা দুজনে খুবই ঘনিষ্ট বান্ধবী ।]
আঁখিঃ- কিরে পূষ্প তোর প্রবেশপত্র যে ছেলেটি দিয়ে গিয়েছিল তাকে খুঁজে পেয়েছ?
পূষ্পঃ- আরে না । ছেলেটি খুবই ভালো,দেখতেও বেশ হ্যান্ডসাম । ছেলেটিকে বড় দেখতে ইচ্ছা করতেছে ।
আঁখিঃ-যেভাবে কথা বলিস তাতে মনে হয় তুই ছেলেটির প্রেমে পরে গেছো?
পূষ্পঃ- বাদ দেতো আঁখি(হেসে দিয়ে) । আখি বলতো আমি ছেলেটিকে কিভাবে খুঁজে পাই?
আঁখিঃ- ছেলেটির নাম জানো?
পূষ্পঃ-না নাম জানিনা তবে ছেলেটির বাইকের নাম্বারটা মনে আছে-ঢাকা খ ১২৬৫ ।
আঁখিঃ- তাহলে এখন থেকে বাইক খোঁজা শুরু কর ।
পূষ্পঃ- ঠিক বলছো । আজ থেকে বাইকই খুজবো ।
[এদিকে পূষ্প আর আঁখি প্রতিদিন বাইক খোঁজে কিন্তু ঐ নাম্বারের বাইক সে কোথাও খুজে পায়না]
[অপর দিকে নিলয় আর তন্ময় প্রতিদিন রাস্তাঘাট কলেজে খোজাখুজি করে কিন্তু কোথাও পূষ্পকে খুঁজে পাওয়া যায়না]
৪র্থ দৃশ্য
নিলয়ের মাঃ- বাবা সারাদিন অফিসে থাকি তোর খোঁজ খবর নিতে পারিনা । তোর কি হয়েছে? তোর খাওয়া দাওয়া কমে গেল কেনো?
নিলযঃ- মা এমনিতে । আমি আর খাবোনা মা ।(এই বলে নিলয় ডাইনিং রুম থেকে চলে গেল)
নিলয়ের মাঃ- বাকিটুকু খেয়ে যা বাবা ।
নিলয়ঃ- না মা আমি আর খাবো না ।
[উভয়ের প্রস্থান]
৫ম দৃশ্য
[আজ বিশ্ব ভালবাসা দিবস পার্কে অনেক তরুন তরুনীর সমাহার । কেউে এসেছে ঘুরতে,কেউ এসেছে প্রেম করতে,আবার কেউবা এসেছে প্রেমিক প্রেমিকা জোগাড় করতে । পার্কে তন্ময় এসেছে হাতে একটি লাল গোলাপ নিয়ে,অপরদিকে আঁখিও এসেছে । উভয়েই সিঙ্গেল]
[পার্কের মধ্য দিয়ে হেটে যাচ্ছে তন্ময় । এর মধ্যে আঁখির সাথে ধাক্কা খেয়ে দুজনেই মাটিতে পরে গেল । তন্ময় আঁখির গায়ের উপর পরলো । মেয়েটির ব্যাগ থেকে সবকিছু পরে গেল]
[তন্ময়ের অনেক ভালো লাগলো কারন সে জীবনে এই প্রথম কোনো মেয়েকে স্পর্শ করছে ।]
তন্ময়ঃ- স্যরি । ক্ষমা করবেন প্লীজ ।
আঁখিঃ- না এখানে ক্ষমা চাওয়ার কি আছে বলুন? আপনিতো আর ইচ্ছা করে করেননি । তাছাড়া আপনার একার ভুল হবে কেনো? আমার ওতো ভুল । আমিও স্যরি ।
তন্ময়ঃ- it,s ok dear. তা আপনার নামটা কি?
আঁখিঃ- আমার নাম আঁখি । আপনার নাম কি?
তন্ময়ঃ- বাহ আপনারতো বেশ চমৎকার নাম । আমার নাম তন্ময় । আপনি কি করেন?
আখিঃ- আপনার নামটা ও অনেক সুন্দর ।আমি এবছর এইচএসসি পরিক্ষা দিয়েছি । আপনি কি করেন?
তন্ময়ঃ- আমি আশা ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ করতেছি ।চলুন আমরা ঐপাশে গিয়ে বসি । আর এনিন আপনার ব্যাগটা । (তন্ময় মাটি থেকে আঁখির ব্যাগটা উঠিয়ে দিল)
আঁখিঃ- আপনাকে ধন্যবাদ । চলুন বসি ।
[দুজনে গিয়ে একটি বৃক্ষের ছায়াতলে বসলো]
তন্ময়ঃ- আজতো বিশ্ব ভালবাসা দিবস তাই আপনাকে একটা অনুরোধ করবো অসুবিধে আছে আপনার?
আঁখিঃ- না না কিসের অসুবিধে আপনি বলুন ।
তন্ময়ঃ- আমরা কী তুমি তমি করে কথা বলতে পারি?
আঁখিঃ- নিশ্চয়ই পারেন । আপনি শুরু করুন ।(হেসে দিয়ে)
তন্ময়ঃ- ধন্যবাদ তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আঁখি ।
আঁখিঃ- আচ্ছা তন্ময় তোমার হাতে ফুল কেনো? কারো জন্য এনেছো?
তন্ময়ঃ- ফুল এনেছি,কিন্তু ফুল দেওয়ার আমার তো কোনো মানুষ নাই ।
আঁখিঃ- তাই? আমি যদি বলি ফুল দেওয়ার মানুষ আছে?
তন্ময়ঃ- কে সে মানুষ?
আঁখিঃ- সেই মেয়েটি তোমার সামনে বসা ।
তন্ময়ঃ- তার মানে তুমি । কেনো তোমার কোনো রিলেশন নেই?
আাঁখিঃ- না আমি কোনো রিলেশন করিনা । তবে তোমার মত ছেলে পেলে আমি রিলেশন করবো ।
তন্ময়ঃ-হাটু ভেঙ্গে গোলাপটি আঁখিকে দিয়ে বললো আই লাভ ইউ আঁখি ।
আঁখিঃ-আই লাভ ইউ টু তন্ময় ।
[এই বলে দুজন হারিয়ে গেল গানের ভূবনে]
তোমাকে পেয়ে আমি আনন্দে আত্মহারা,
দিশেহারা,হে প্রিয়া আমি তোমার প্রেমে দিশেহারা ।
চিরজীবন আমার বুকে আগলে রাখবো আমি তোমায়,
হে প্রিয়া চিরকাল তুমি ভালবেসে যেও আমায় ।
হে তোমাকে পেয়ে আমি আনন্দে আত্মহারা,
দিশেহারা,হে প্রিয় আমি তোমার প্রেমে দিশেহারা ।
চিরজীবন আমার বুকে আগলে রাখবো আমি তোমায়,
হে প্রিয় চিরকাল তুমি ভালবেসে যেও আমায় ।
[গান শেষে দুজন দুজনাকে জড়িয়ে ধরলো]
তুমি ছাড়া আমি নিঃস্ব ।
তন্ময়ঃ- তোমার ফ্যমিলিতে কে কে আছেন?
আঁখিঃ- মা,বাবা ও একমাত্র ছোটভাই । বাবা সেনাবাহীনির অফিসার । আমাদের বাসা আজিমপুর ।তোমার ফ্যামিলিতে কে কে আছেন?
তন্ময়ঃ- আমার ফ্যামিলিতে মা আর বাবা আছেন । বাবা ব্যবসা করেন । আমি একমাত্র ছেলে । আমার বাসা রামপূরা । ওহ প্রিয়তমা তোমার ফোন নাম্বারটি দাও?
আঁখিঃ-০১৭৬৭৭৮৯২৯৯ নাও জান ।
তন্ময়ঃ-ধন্যবাদ । এখন তুমি চলে যাও । আমি যাচ্ছি । ফোনে কথা হবে,বাই বাই ।
আঁখিঃ- বাই বাই জান ।
[উভয়ের প্রস্থান]
৬ষ্ঠ দৃশ্য
[নিলয আর তন্ময় ভার্সিটিতে যাচ্ছে,তার এখনও মনমরা অবস্থা । সে এখন ও প্রতিদিন পূষ্পকে খোঁজে]
তন্ময়ঃ- দোস্ত একটা সুখবর আছে ।
নিলয়ঃ- তুই আছো তোর সুখবর নিয়ে । আমি এখন পর্যন্ত পূষ্পকে খুজে পেলাম না । তা বল তোর সুখবরটা কি?
তন্ময়ঃ- একটা মেয়ের সাথে আজ আমার প্রেম হয়ে গেছে । মেয়েটির নাম আঁখি । দেখতে খুব সুন্দরী ।
নিলয়ঃ- তাই নাকি? তা মিষ্টি খাওয়া ।
তন্ময়ঃ- না মিষ্টি আজ খাওয়াবোনা । মিষ্টি খাওয়াবো সেদিন,যেদিন তুই পূষ্পকে খুঁজে পাবি ।
নিলয়ঃ- আচ্ছা আচ্ছা ঠিকাছে ।
[উভয়ের প্রস্থান]
৭ম দৃশ্য
[এদিকে পূষ্প আর আঁখি কলেজে যাচ্ছে যাচ্ছে,পূষ্পের এখনও মনমরা অবস্থা । সে এখন ও প্রতিদিন সেই ছেলেটিকে খুঁজে বেড়ায়]
আঁখিঃ- পূষ্প একটা সুখবর আছে ।
পূষ্প- তুই আছো তোর সুখবর নিয়ে । আমি এখন পর্যন্ত সেই ছেলেটিকে খুজে পেলাম না । তা বল তোর সুখবরটা কি?
আঁখিঃ- একটা ছেলের সাথে আজ আমার প্রেম হয়ে গেছে । ছেলেটির নাম তন্ময় । দেখতে খুব সুন্দর ।
পূষ্প- তাই নাকি? তা মিষ্টি খাওয়া ।
আঁখিঃ- না মিষ্টি আজ খাওয়াবোনা । মিষ্টি খাওয়াবো সেদিন,যেদিন তুই সেই ছেলেটিকে খুঁজে পাবি ।
পূষ্প- আচ্ছা আচ্ছা ঠিকাছে ।
[উভয়ের প্রস্থান]
৮ম দৃশ্য
[এদিকে রাত্রে তন্ময় আঁখিকে ফোন দিল]
তন্ময়ঃ- হ্যলো জান আমি তোমার তন্ময় ।
আঁখিঃ- জান আমি তোমার ফোন পাওয়ার অপেক্ষায় অধির আগ্রহে বসে আছি । তুমি কেমন আছো জান?
তন্ময়ঃ- তোমাকে ছাড়া কি আর ভালো থাকা যায়? তুমি ছাড়া আমি নিঃস্ব ।
আঁখিঃ- হ্যা জান তুমি ছাড়া আমিও নিঃস্ব ।
তন্ময়ঃ- আাঁখি আমি আগামীকাল তোমার সাথে দেখা করতে চাই ।
আঁখিঃ- ঠিকাছে আমার লক্ষি সোনা বাবু । কিন্তু কোথায় দেখা করবে?
তন্ময়ঃ- আখি তোমার বাসা কোথায় তাতো এখনও জানলাম না? আমার বাসা রামপূরা ।
আঁখিঃ- আমার বাসা আজিমপূর ।
তন্ময়ঃ- ওহ আচ্ছা তাহলে তুমি কাল নিলক্ষেত আসো ওখানে নিজাম গাজী রেস্টুরেন্টে তোমার সাথে দেখা করবো ।
আঁখিঃ- আচ্ছা জান । কয়টার সময় আসবো?
তন্ময়ঃ- বিকাল চারটায় আসো ।
আঁখিঃ- আচ্ছা বাবা ঠীকাছে বিকাল চারটায়ই আসবো আমি আমার জানের সাথে দেখা করতে ।
তন্ময়ঃ- ওকে জান গুড নাইট । আগামীকাল দেখা হবে ।
আঁখিঃ- ওকে । গুড নাইট টু মাই ডিয়ার জান । এখন রাখছি বাই বাই ।
তন্ময়ঃ- ওকে বাই বাই ।
[ফোনে কথোপকথন শেষ]
৯ম দৃশ্য
[ দুপুরে পূষ্পদের বাড়িতে আখির আগমন]
পূষ্পঃ- কিরে তুই ?বস ।
আঁখিঃ- কি করো পূষ্প? আজ বিকাল চারটার সময় তন্ময়ের সাথে দেখা করবো । আমার সাথে তোর একটু যেতে হবে ।
পূষ্পঃ- না আমি যেতে পারবো না ।
আঁখিঃ- কেনো যেতে পারবি না? প্লীজ চল না দোস ।
পূষ্পঃ- তুইতো জানো বাবা আমাকে বিকালে বের হতে দেয়না ।
আঁখিঃ- আঙ্কেলকে আমি বুঝিয়ে বলবনে । তুই চল । হতে ওতো পারে পথে বা রেস্টুরেন্টে সেই ছেলেটির সাথে দেখা ।
পূষ্পঃ- এতদিন বসে সেই ছেলেটির খোঁজ পেলাম না আর আজ পেয়ে যাবো । অচ্ছা আমি যাবো তোর সাথে ।
আখিঃ- ধন্যবাদ মাই ডিয়ার দোস্ত ।আচ্ছা সাড়ে তিনটার সময় তুই রেড়ি হয়ে থাকিস । আমি এখন যাচ্ছি ।
পূষ্পঃ- আচ্ছা ।
[আঁখির প্রস্থান]
১০ম দৃশ্য
[এদিকে নিলয়ের বাড়িতে তন্ময়ের আগমন]
তন্ময়ঃ- নিলয় আরেকটু পর আঁখির সাথে দেখা করবো তুই আমার সাথে চল ।
নিলয়ঃ- তাই নাকি?আচ্ছা চল ।
[উভয়ের প্রস্থান]
১১ তম দৃশ্য
[রেস্টুরেন্টে আঁখি আর পূষ্প আগে এসেই বসে আছে]
[এদিকে তন্ময় আর নিলয় এসে ওদের মুখোমুখি বসে পড়লো ।নিলয় পূষ্পকে দেখে আর পূষ্প নিলয়কে দেখে দুজনই থ হয়ে গেলো]
পূষ্পঃ- এইযে আপনি । আপনাকে আমি এতটা মাস কি খোঁজা যে খুঁজেছি তাকি আপনি জানেন? এমন কোথাও নেই যে আমি আপনাকে খুঁজেনি । আঁখি এই হচ্ছে সেই লোকটা ।
নিলয়ঃ- কি আর বলবো তোমাকে আমি খুঁজতে খুঁজতে অসুস্থ হয়ে পরেছি । ঢাকা শহরের এমন কোথাও নেই যে তোমাকে আমি খুঁজেনি ।
তন্ময়ঃ- মাশাআল্লাহ তাহলে দেখা হয়ে গেলো দুজনার । আচ্ছা নিলয় তোরা কথা বল আমি আর আঁখি ঐ সাইডে যাচ্ছি ।
নিলয়ঃ- পূষ্প এই হচ্ছে আমার বন্ধু তন্ময় । যাকে নিয়ে এতটা মাস তোমাকে আমি খুঁজেছি । পরিচিত হও ।
পূষ্পঃ- হাই তন্ময় ।
তন্ময়ঃ-হাই পূষ্প ।
পূষ্পঃ-এই হচ্ছে আমার বান্ধবী আঁখি । যাকে নিয়ে এতটা মাস আপনাকে আমি খুঁজেছি । পরিচিত হন ।
নিলয়ঃ- হাই আঁখি আমি নিলয় ।
আঁখিঃ- হাই । আচ্ছা ভাইয়া আপনারা দুজনে কথা বলুন । আমরা ঐ সাইডে যাচ্ছি ।
[এখান থেকে তন্ময় ও আঁখির প্রস্থান]
নিলয়ঃ- আচ্ছা পূষ্প তুমি আমাকে এতদিন কেনো খুঁজেছো?
পূষ্পঃ- কি বলেন খুঁজবোনা তা কি করবো? আমার ঐ বিপদের মূহুর্তে আপনি যদি প্রবেশপত্রটি না নিয়ে যেতেন তাহলে আমি পরিক্ষাই দিতে পারতাম না । তাই আপনাকে একটা ধন্যবাদ দেওয়ার জন্য খুঁজেছি । আর ওদিন আমার মাথা ঠিক ছিলনা তাই ধন্যবাদ দিতে পারেনি ।
নিলয়ঃ- ওহ আচ্ছা শুধুমাত্র ধন্যবাদ দেওয়ার জন্যই খুঁজছো,অন্য কিছুর জন্য নয়?
পূষ্পঃ- আমিতো আপনাকে ধন্যবাদ দেওয়ার জন্য খুঁজেছি,তা আপনি আমাকে কেনো খুঁজেছেন?
নিলয়ঃ-Actually সত্য কথা বলত কি ঐদিন তোমাকে প্রথম দেখাতেই আমি তোমার প্রেমে পরে গেছি পুষ্প । কিন্তু তোমাকে কোথায় খুজে পাবো,আমি যে তোমার নামটি ছাড়া আর কিছুই জানিনা ।
পূষ্পঃ- নিলয় আসলে আমিও ঐদিন থেকে তোমাকে ভালবেসে ফেলেছি ।(কেঁদে দিয়ে) কিন্তু আমি তোমার বাইকের নম্বরটি ছাড়া আর কিছুই জানিনা । এমন কোনো বাইক নেই যে আমি খুঁজি নাই ।
নিলয়ঃ-I LOVE YOU PUSPO.
পূষ্পঃ- I LOVE YOU TOO NILOY.
[এই কথা বলে দুজনই কান্নারত ভাবে দুজনকে জড়িয়ে ধরলো । আর তারা হারিয়ে গেছে গানের ভূবনে]
হে অনেক কষ্টের পরে আমি তোমায় পেয়েছি,
সারা জীবন বিধাতার কাছে প্রিয়া আমি তোমায় চেয়েছি ।
তুমি আমার জীবন মরন,তমি আমার আশা,
তুমি আমার শুন্য হৃদয়ের পূর্ন ভালবাসা ।
হে প্রিয়া বাঁচবোনা আমি তুমি ছাড়া,
তুমি ছাড়া আমি যে দিশেহারা ।
হে অনেক কষ্টের পরে আমি তোমায় পেয়েছি,
সারা জীবন বিধাতার কাছে প্রিয় আমি তোমায় চেয়েছি ।
তুমি আমার জীবন মরন,তমি আমার আশা,
তুমি আমার শুন্য হৃদয়ের পূর্ন ভালবাসা ।
হে প্রিয় বাঁচবোনা আমি তুমি ছাড়া,
তুমি ছাড়া আমি যে দিশেহারা ।
[গান শেষ হয়ে গেল]
নিলয়ঃ- আচ্ছা পূষ্প তোমার ফোন নাম্বারটি একটু আমাকে দাও ।
পূষ্পঃ- ০১৭৫৯১৫৪১৭৪ এই নাও । আচ্ছা নিলয় তোমার ফ্যমিলিতে কে কে আছেন?
নিলয়ঃ- ধন্যবাদ জান । আমার ফ্যমিলিতে আমার মা ছাড়া আর কেউ নেই । আমার বাবার রেখে যওয়া মতিঝিলে একটা গ্রুপ অব কোম্পানি আছে ঐটার চেয়ারম্যান আমার মা সালেহা খাতুন । তোমার ফ্যমিলেতে কে কে আছেন?
পূষ্পঃ- আবার বাবা বিশিষ্ট শিল্পপতি ফয়েজ আহমেদ । বাবা ছাড়া আমার আর কেউ নেই ।
নিলয়ঃ- আজ হতে যে আমি আছি তোমার ।
[ওদিকে তন্ময় আর আঁখির মধ্যে প্রেমালাপ চলতেছে]
পূষ্পঃ- হ্যা জান তোমায় পেয়ে আমি খুঁশি । তুমি ছাড়া আমি বাঁচবোনা ।
[তন্ময় আর আঁখি চলে আসলো ওদের কাছে]
তন্ময়ঃ- কিরে তোরাতো একদম প্রেম মজাইয়া ফালাইছিস ।
আঁখিঃ- হ্যা তাই তো । আচ্ছা এখন আমরা কিছু খাই ।
নিলয়ঃ- নিশ্চয়ই সবাই মিলে অনেক মজা করে খাবো । আসো সবাই মিলে পিৎজা খাই ।
[সবাই মিলে অনেক মজা করে খেলো]
[রেস্টুরেন্ট থেকে সবার প্রস্থান]
১২ তম দৃশ্য
[ডাইনিং রূমে পূষ্প ও পূষ্পের বাবার আগমন]
পূষ্পের বাবাঃ- পূষ্প মা তুমি এবছর এইচএসসি কমপ্লিট করেছো তাই আমি চাই তোমাকে ভালো একটা ছেলে দেখে বিয়ে দিয়ে দিতে । তোমার কোনো পছন্দ থাকলে বলো । না হয় আমি ছেলে দেখা শুরু করবো ।
[পূষ্প চূপ]
পূষ্পের বাবাঃ-কিরে চূপ করে আছো কেনো কিছু একটা বলো ।
পূষ্পঃ- বাবা আমি নিলয় নামে একটি ছেলেকে ভালবাসি ।
পূষ্পের বাবাঃ-নিলয় কি করে,ওর ফ্যমিলিতে কে কে আছে?
পূষ্পঃ- বাবা নিলয় এবছর বিবিএ শেষ করছে । ওর ফ্যামিলিতে শুধু ওর মা আছেন । ওদের মতিঝিলে একটা গ্রুপ অব কোম্পানী আছে । যেটি পরিচালনা করেন ওর মা ।
পূষ্পের বাবাঃ- গুড । নিলয়কে বলিস আগামীকাল আমি তোকে নিয়ে ওদের বাসায় যাবো ।
পূষ্পঃ- ঠিকাছে বাবা ।
[উভয়ের প্রস্থান]
১৩ তম দৃশ্য
[নিলয়ের রুমে নিলয়ের মায়ের আগমন]
নিলয়ের মাঃ- বাবা তুই বিবিএ কমপ্লিট করেছো তাই আমি চাচ্ছি তোকে বিবাহ দিয়ে কোম্পানির সব দায় দায়িত্ব তোর হাতে তুলে দিতে ।
নিলয়ঃ- মা আমি সবেমাত্র বিবিএ কমপ্লিট করলাম এখন আমি তোমার কোম্পানির দায়-দায়িত্ব নিতে পারবো না ।
নিলয়ের মাঃ-আচ্ছা ঠিকাছে কিন্তু বিয়েটা কিন্তু তোর করতেই হবে । পছন্দের কেউ থাকলে বল,না হয় আমি মেয়ে দেখা শুরূ করে দেই ।
নিলয়ঃ- মা আমি পূষ্প নামে একটা মেয়েকে ভালবাসি । আমি ওকে বিবাহ করবো ।
নিলয়ের মাঃ-পূষ্প কি করে,ওর ফ্যামিলিতে কে আছে?
নিলয়ঃ- পূষ্প এবছর ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেছে মা । ওর বাবা বিশিষ্ট শিল্পপতি ফয়েজ আহমেদ ।
নিলয়ের মাঃ- ওহ পূষ্প ফয়েজ সাহেবের মেয়ে । তুই পূষ্পকে বল ফয়েজ সাহেব যেনো আগামীকাল পূষ্পকে নিয়ে আমাদের বাসায় আসেন ।
নিলয়ঃ- আচ্ছা ঠিকাছে মা ।
[নিলয়ের মায়ের প্রস্থান]
১৪ তম দৃশ্য
[এদিকে পার্কে তন্ময় ও আঁখির আগমন]
তন্ময়ঃ-জান নাও এই গিফটা তোমার জন্য ।
আঁখিঃ- ধন্যবাদ । এর মধ্যে কি আছে তন্ময়?
তন্ময়ঃ- খুলে দেখনা ।
আঁখিঃ- ওহ এতা সেন্টার ফ্রুট । খুব সুন্দর একটা গিফট তুমি আমাকে দিয়েছো । ধন্যবাদ জান ।
তন্ময়ঃ- আঁখি তুমি ছাড়া আমি বাঁচবোনা টিয়াপাখি ।
আঁখিঃ- আমিও তোমাকে ছাড়া বাঁচবোনা পরানপাখি ।
তন্ময়ঃ- জান আমার কোলে একটু মাথা রাখো ।
আঁখিঃ- আচ্ছা ঠিকাছে জান মাথা রাখলাম । ওহ তোমার কোলে মাথা রাখলে তো একদম স্বর্গীয় মজা ।
তন্ময়ঃ- তাই নাকি? আমায় কখনও ভুলে যেওনা জান । আমি চিরকাল আমার বুকে তোমায় আগলে রাখতে চাই ।
[উভয়ের প্রস্থান]
১৫ তম দৃশ্য
[নিলয় পূষ্পকে ফোন দিল]
নিলয়ঃ- পূষ্প দ্রুত তুমি আমার সাথে দেখা করো পার্কে । আমি এখনই পার্কে আসতেছি ।
পূষ্পঃ- আচ্ছা ঠিকাছে আমি আসতেছি ।
[পার্কে নিলয় ও পূষ্পের আগমন]
নিলয়ঃ- প্রিয়তমা পূষ্প তুমি দেখতে ঠিক পূষ্পের মতই সুন্দর ।
পূষ্পঃ- তুমিও অনেক সুন্দর প্রিয়তম ।(মুচকি হেসে দিয়ে)
নিলয়ঃ- প্রিয়তম তুমি একটু আমার কোলে মাথা দাও ।
পূষ্পঃ- আচ্ছা দিচ্ছি প্রিয়তম ।(নিলয়ের কোলে পূষ্প মাথা দিল । নিলয়ের খুব ভালো লাগতেছে)
নিলয়ঃ-প্রিয়তমা তুমি হাঁসলে আমি হাঁসিনা,শুধু সুখ পাই,
তুমি কাঁদলে আমি কাঁদিনা,শুধু ব্যথা পাই ।
তুমি ভালবাসলে আমি ভালবাসি,কারন তুমি আমার ভালবাসা ।
হয়তো একদিন তুমি ভুলে যাবে আমায়,
কিন্তু আমি জীবনে ও ভুলবো না তোমায় ।
পূষ্পঃ- বাহ দারুন হয়েছে । না আমি তোমায় কখনও ভুলবোনা ।
নিলয়ঃ- পূষ্প তুমি একটু ওঠো আমার মাথা যন্ত্রনা করতেছে ।
পূষ্পঃ- কি বলো মাথা যন্ত্রনা করবে কেনো?দাড়াও আমি তোমার মাথায় একটু পানি দিয়ে দিচ্ছি । তুমি ডাক্তার দেখাইও নিলয় ।(এই বলে পূষ্প বোতল থেকে নিলয়ের মাথায় একটু পানি দিয়ে দিল)
নিলয়ঃ- আরে না ডাক্তার দেখাতে হবেনা । এ ব্যথা আমার মাঝে মধ্যে হয় । আবার সব ঠিক হয়ে যায় । শোনো তোমাকে একটা গুরুত্বপূর্ন কথা বলার জন্য ডেকেছি প্রেয়সী ।
পূষ্পঃ- কি কথা?
নিলয়ঃ- আমার মা চায় আমি যেনো তোমাকে বিয়ে করি । তাই মা কালকে আমাদের বাসায় তোমাকে নিয়ে তোমার বাবাকে যেতে বলছেন ।
পূষ্পঃ- ওহ দারুন সবকিছুতো মিলেই যাচ্ছে । কোনো কিছু তো অতৃপ্ত রইলনা । আমার বাবা ও আমাকে তোমার সাথে বিয়ে দিবে বলে আগামীকাল তোমার মায়ের সাথে কথা বলতে বাবা আমাকে নিয়ে তোমাদের বাড়িতে যাবে ।
নিলয়ঃ- ওহ দারুনতো । হ্যা সবকিছুই মিলে গেলো । আচ্ছা তুমি এখন বাসায় যাও প্রিয়তমা । আগামীকালতো দোখা হচ্ছে ।
পূষ্পঃ- ওকে প্রিয়তম আমি যচ্ছি তুমি যাও ।
[উভযের প্রস্থান]
১৬ তম দৃশ্য
[পরেরদিন সকালে নিলয়ের বাসায় পূষ্প ও পূষ্পের পিতার আগমন]
[তারা নিলযের বাসায় ফলসহ অনেক মিষ্টি নিয়ে আসছে]
নিলয়ের মাঃ-আস সালামুআলাইকুম ফয়েজ সাহেব । বসুন ।
পূষ্পের বাবাঃ- ওয়ালাইকুম আস সালাম । কেমন আছেন আপনি?
নিলয়র মাঃ- জ্বী আলহামদুলিল্লাহ ভালো । আপনি ভালোতো?
পূষ্পের বাবাঃ-হ্যা ভালো । শোনেন আপা ওরা একে অপরকে পছন্দ করে তাই আমি চাচ্ছি ওদের বিয়ে দিতে । আপনার কোনো আপত্তি আছে ।
নিলয়ের মাঃ- না আপত্তি থাকবে কেনো? পূষ্পতো মাশআল্লাহ দেখতে অনেক সুন্দর । আমি ওকে আমার পূত্রবধু করতে চাই ।
পূষ্পের বাবাঃ- আপনার কথাশুনে খুঁশি হলাম । তাহলে বিয়ের দিন তারিখটা ঠিক করে ফেলেন ।
নিলয়ের মাঃ- আমি চাচ্ছি আগামি মাসের ১২ তারিখ শুক্রবার বিয়ের অনূষ্ঠান হবে ।
পূষ্পের বাবাঃ-আচ্ছা ঠিকাছে আমার কেনো আপত্তি নেই । তাহলে কথা রইল ।
নিলয়ের মাঃ- আচ্ছা কথা রইল । ফয়েজ সাহেব আজ না খেয়ে কিন্তু আমার বাসা থেকে যাওয়া যাবেনা ।
পূষ্পের বাবাঃ-হাহাহা আচ্ছা ঠিকাছে ।
নিলয়ের মাঃ- আমার ছেলেকে কি আপনার পছন্দ হয়েছে? আপনার মেয়েকে তো আমার খুব পছন্দ হয়েছে ।
[একথা বলে নিলয়ের মা পূষ্পকে জড়িয়ে ধরলো]
পূষ্পের বাবাঃ-পছন্দ হবেনা কেনো?আপনার ছেলেতো যথেষ্ট হ্যান্ডসাম ।
[খাওয়া দাওয়া কমপ্লিট]
পূষ্পের বাবাঃ- আচ্ছা আপা তাহলে এখন আমরা উঠি ।
নিলয়ের মাঃ- আচ্ছা ঠিকাছে । সাবধানে যেয়েন ।
[সবার প্রস্থান]
১৭ তম দৃশ্য
তন্ময়ঃ- দেখছো আঁখি নিলয় ও পূষ্পের তো একটা গতি হয়ে গেলো । কিন্তু তোমার আমারতো কিছুই হলোনা ।
আঁখিঃ- ধৈর্য ধরো লক্ষিটি । বাবা আমেরিকা । আমেরিকা থেকে আসলে আমাদের বিয়ের ব্যাপারে সব খুলে বলবো । তাছাড়া আমাদের প্রেমতো খুব ভালোই চলতেছে ।
তন্ময়ঃ- হ্যা পাখিটি । তোমাকে ছাড়াতো আমার এই বসূধায় বেঁচে থেকে কোনো লাভ নেই । তুমি ছাড়া আমি নিঃস্ব ।
আঁখিঃ- হ্যা জান তোমাকে ছাড়া আমারও এ ভূবনে বাঁচা সম্ভব নয় । তুমি ছাড়া আমিও নিঃস্ব ।
[উভয়ের প্রস্থান]
১৮ তম দৃশ্য
[রাত্রে নিলয় পূষ্পকে ফোন দিল]
পূষ্পঃ- হ্যালো নিলয় কেমন আছো পরানপাখি?
নিলয়ঃ-ভালো না থেকে আর যাই কই টিয়াপখি?আর কয়েকটা দিন পর যে চিরকালের জন্য তুমি আমার হয়ে যাবে । আমার বুকে আছে যতো ভালবাসা জমা,
সব তোমায় দিয়ে দেবো হে প্রিয়তমা ।
পূষ্পঃ- বাহ! দারুন । তা আমাদের প্রথম সন্তান তুমি কি আশা করো ছেলে না মেয়ে?
নিলয়ঃ- আমি মেয়ে আশা করি । মেয়ে হলে ওর নাম আমি রাখবো ইসিতা জাহান মৌমি । তুমি প্রথম কি আশা করো ।
পূষ্পঃ- আমি ছেলে আশা করি । ছেলের নাম রাখবো হৃদয় ।
নিলয়ঃ- আচ্ছা দেখা যাক কি করা যায় ।
শোনো কাল আবার পার্কে তোমার সাথে দেখা করবো ।
পূষ্পঃ- আচ্ছা ওকে জান । এখন রাখি বাই ।
নিলয়ঃ-আচ্ছা । বাই ।
[মোবাইলের কথোপকথন শেষ]
১৯ তম দৃশ্য
[পার্কে নিলয় ও পূষ্পের আগমন]
নিলয়ঃ- এই নাও প্রিয়তমা তোমার জন্য গিফট ।
পূষ্পঃ- কি এর মধ্যে? এ কিসের ছবি?
নিলযঃ- এ হচ্ছে আমার মেয়ে মৌমি ও তোমার ছেলে হৃদয়ের ছবি । আমি কাল সারারাত না ঘুমিয়ে এই ছবি দুটি একেছি ।
পূষ্পঃ-অনেক সুন্দর হয়েছে জান । তুমিতো দারুন আঁকতে পারো । কিন্তু আমার কেমন যেনো তোমাকে হারানোর ভয় করতেছে ।
নিলয়ঃ-ও কথা আর মুখে এননা । আমি কখনও তোমার জীবন থেকে হারাবোনা পূষ্প । আমি তোমার হৃদয়ে আছি চিরকাল । তোমার হৃদয়ের মধ্যে আমি লুকিয়ে থাকবো ।
পূষ্পঃ- ধন্যবাদ তোমাকে হে প্রিয়তম ।নিলয় তোমার হাতে এ কিসের দাগ?
নিণয়ঃ- তা বলা যাবেনা । বললে তুমি কষ্ট পাবে ।
পূষ্পঃ- প্লীজ কি হয়েছে বলোনা?
নিলয়ঃ- শোনো আমি যেদিন পথে তোমার প্রবেশপত্র পাই সেদিন আমি বাইক খুব দ্রুত চালিয়ে যাচ্ছিলাম তোমাকে দ্রুত প্রবেশপত্রটি দিবো বলে । তখন আমি বাসের সাথে হাতে ঘসা খাই । (এই এক্সিডেন্টটা কল্পনায় দেখানো হবে ।)
পূষ্পঃ-oh my god. তুমিতো নিলয় সত্যিই মহান । আমি খুব গর্বিত তোমার মতো একটা ভালো মানুষকে জীবনে পেয়ে ।
নিলয়ঃ- আমিও তোমার মতো ভালো একটি মেয়ে আমার জীবনে পেয়ে খুঁশি । পূষ্প এখন তুমি চলে যাও বাসায় । আমিও যাচ্ছি । চিন্তা করোনা জান আর অল্প কয়টা দিন পরই আমাদের চিরবন্ধন হবে ।
পূষ্পঃ- আমিতো সেই দিনটার জন্য অপেক্ষায় আছি কবে তোমার বউ হয়ে তোমার ঘরে আমি যাবো । আচ্ছা পরান পাখি ঠিকাছে আমি যাচ্ছি,তুমিও যাও ।
[উভয়ের প্রস্থান]
২০ তম দৃশ্য
[এদিকে আঁখি ও তন্ময়ের প্রেমও খুব ভালোভাবে চলছে । ওরা প্রতিদিন ঘুরতে যায়,ফুচকা,চকবার খায় ইত্যাদী]
[হঠাৎ একদিন নিলয় অসুস্থ হয়ে পরলো । নিলয়ের মা তন্ময়কে ডেকে নিলয়কে হসপিটালে নিয়ে গেলো]
ডাক্তারঃ- নার্স ওনাকে জরুরী বিভাগে নিয়ে যান ।
নার্সঃ- আচ্ছা স্যার নিচ্ছি ।
[ডাক্তারের ট্রিটমেন্টের পরে নিলয় কিছুটা সুস্থ হলো । ভিতরে ওর মা ও তন্ময় প্রবেশ করলো]
নিলয়ঃ- মা ও তন্ময় তোমরা কথা দাও আমার অসুস্থতার কথা পূষ্পকে জানাবেনা ।
নিলয়ের মা+তন্ময়ঃ-আচ্ছা কথা দিলাম । টেনশন করিসনা ।
ডাক্তারঃ-আপনারা আমার চেম্বারে আসুন ।
২১ তম দৃশ্য
[ডাক্তারের চেম্বারে নিলয়ের মা ও তন্ময়ের প্রবেশ]
ডাক্তারঃ- শোনেন আমরা যতদূর বুঝতে পেরেছি তাতে ওনার মাথায় সমস্যা । ওনার মাথায় সিটি স্ক্যান করাতে হবে ।
নিলয়ের মাঃ- আচ্ছা ডাক্তার সাহেব আপনি সিটি স্ক্যান করার ব্যবস্থা করুর । যত টাকা লাগবে তা পাবেন ।
[পরবর্তিতে নিলয়ের মাথায় সিটি স্ক্যান করা হলো]
ডাক্তারঃ- শোনেন আপনার ছেলের ব্রেইন ক্যান্সার হয়েছে । এ রোগের চিকিৎসা নেই ।
নিলয়ের মাঃ- কি বলেন আপনি ।(কেঁদে দিয়ে)
ডাক্তারঃ- আমি ওনাকে কিছু ওষুধ লিখে দিচ্ছি । এগুলো খাওয়াবেন । আর ওনাকে বাসায় নিয়ে যান ।
[অবশেষে নিলয়কে বাসায় নিয়ে আসা হয়েছে । নিলয় জানেনা যে তার ব্রেইন ক্যন্সার হয়েছে । সে পূষ্পর সাথে অনেক মজা করে কথা বলতেছে ।]
২২ তম দৃশ্য
[ফোনে কথোপকথন]
নিলয়ঃ-পূষ্প তোমার জন্য আমি সবকিছুই করবে পারি এবং তোমার জন্য আমি মরতেও পারি ।
পূষ্পঃ- ওকথা বলেনা জান । আমি তোমাকে কখনও হারাতে চাইনা । তুমি কথা দাও নিলয় তুমি আমার জীবন থেকে কথনও হারাবেনা ।
নিলয়ঃ- হ্যা আমি কথা দিলাম । তোমার ভালবাসাকে জয় করার জন্য আমি সবকিছুই করতে প্রস্তুত ।
পূষ্পঃ- ধন্যবাদ পরানপাখি । এখন রাখো ।
[ফোনে কথোপকথন শেষ]
২৩ তম দৃশ্য
তন্ময়ঃ- আঁখি একটা স্যাড নিউজ আছে বলো কেউকে বলবেনা ।
আঁখিঃ- আচ্ছা আমি কেউকে বলবোনা । এখন বলো স্যাড নিউজটা কি?
তন্ময়ঃ- নিলয়ের ব্রেইন ক্যান্সার হয়েছে । ওর বাঁচার সম্ভাবনাই নাই । খবরদার এটি পূষ্পকে কোনোভাবেই জানাবেনা ।
আঁখিঃ- কি বলো তুমি এর কোনো চিকিৎসা নেই?
তন্ময়ঃ- না এর কোনো চিকিৎসা নেই । মৃত অবধারিত ।
[উভয়ের প্রস্থান]
২৪ তম দৃশ্য
[এদিকে নিলয়ের মা তার রুমে বসে কাঁদতেছে]
[নিলয়ের মায়ের রুমে নিলয়ের আগমন]
নিলয়ঃ- মা তুমি কাঁদো কেনো?
নিলয়ের মাঃ- কই আমি কাঁদি কই বাবা?
নিলয়ঃ- এইমাত্র দেখলাম তুমি কাঁদো?
নিলয়ের মাঃ- ওহ তোর বাবার কথা মনে পরেছে তো তাই একটু কাঁদলাম বাবা ।
[নিলয়ের প্রস্থান]
২৫ তম দৃশ্য
[সকাল হয়ে গেল । নিরবের মা আজ খুব সকালে ঘুম থেকে উঠছে । সে বড় বড় ডাক্তারদের কাছে যাবে বলে । তাই সে প্রথমে নিলয়ের রুমে গেলো]
নিলয়ের মাঃ- বাবা তুই ঘুম থেকে উঠে ব্রেকফাষ্ট করে নিস । আমি সব জোগাড় করে রেখেছি ।
নিলয়ঃ- মা তুমি এতো সকালে কোথায় যাচ্ছো?
নিলয়ের মাঃ-বাবা অফিসে যাচ্ছি ।
নিলয়ঃ-মা এতো সকালে তো আমি তোমাকে জীবনেও অফিসে যেতে দেখি নাই ।
নিলয়ের মাঃ- বাবা অফিসে মিটিং আছে ।
[নিলয়ের মা বড় বড় ডাক্তারদের কাছে যাচ্ছেন,কিন্তু সবাই এক কথাই বলে যে এ রোগের চিকিৎসা নাই ]
২৬ তম দৃশ্য
[এদিকে নিলয় সকালে উঠে প্রথমেই ওর মায়ের রুমে গেছে । গিয়ে দেখে ওর সিটি স্ক্যনের রিপোর্ট ওর মায়ের টেবিলের উপর । সেই রিপোর্ট পরে নিলয় জানতে পারে যে ওর ব্রেইন ক্যান্সার হয়েছে ।]
[এর মধ্যে নিলয়ের মায়ের প্রবেশ]
নিলয়ের মাঃ- কি হয়েছে বাবা?
নিলয়ঃ- মা আমার যে ব্রেইন ক্যান্সার হয়েছে তা আমি জানি ।
নিলয়ের মাঃ- কে বলছে তোকে? ঐ রিপোর্ট ভুল ।
নিলয়ঃ- না মা আমার কাছে মিথ্যা বলোনা ।
[তখন নিলয়ের মা নিলয়কে জড়িয়ে ধরে অনেক কান্নাকাটি করলো]
২৭ তম দৃশ্য
[নিলয় এবার জানে যে ওর মৃত্য অবধারিত । তাই সে যে করেই হোকনা কেনো তার পথ থেকে পূষ্পকে সরাবেই । কারন সে চায়না যে পূষ্প কষ্ট পাক ।]
[রাত্রে পূষ্প নিলয়কে ফোন দিলো]
নিলয়ঃ- কি খবর ফোন দিছিস কেনো?
পূষ্পঃ- এটা কেমন কথা নিলয়?তোমাকে আমি ফোন দিবনা?
নিলয়ঃ- শোন বেয়াদব মেয়ে তুই কে আমার যে তুই আমাকে ফোন দিবি?যা রেখে দে ।
পূষ্পঃ- নিলয় তুমি এ কেমন ব্যবহার করছো?তোমার কি মনে নেই দুদিন পর তোমার সাথে আমার বিয়ে?
নিলয়ঃ- তোর মতো খারাপ মেয়েকে আমি বিয়ে করবো না ।(এই বলে ফোনের লাইনটি কেটে দিল নিলয় । তার অনেক কষ্ট হয়েছে । কিন্তু কি আর করার ওর পথ থেকে যে পূষ্পকে সরাতেই হবে ।কারন সে মৃত পথযাত্রী)
[পূষ্প নিলয়ের মাকে ফোন দিল]
পূষ্পঃ- হ্যালো আন্টি আমি পূষ্প ।
নিলয়ের মাঃ- হ্যা বলো ।
পূষ্পঃ- আন্টি নিলয় আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে কেনো?
নিলয়ের মাঃ- শোনো পূষ্প তুমি আর ওকে ফোন দিবানা । তোমার সাথে ওর বিবাহ হবেনা । পারলে অন্য কোথাও বিবাহ করে নাও ।(এই বলে নিলয়ের মা ফোনের লাইনটি কেটে দিল)
২৮ তম দৃশ্য
[এদিকে পূষ্প খুব কাঁদতেছে]
পূষ্পের বাবাঃ- পূষ্প মা কি হয়েছে তোমার?
পূষ্পঃ- বাবা আমাকে নিলয় বিবাহ করবে না ।
পূষ্পের বাবাঃ-কি বলো আগামী পরশু বিয়ে আর এখন এই খবর । দাড়াও আমি ওর মাকে ফোন দিচ্ছি
নিলয়ের মাঃ-হ্যালো কে বলছেন?
পূষ্পের বাবাঃ- আমি পূষ্পের বাবা ।
নিলয়ের মাঃ- তা কি খবর?
পূষ্পের বাবাঃ-নিলয় নাকি পূষ্পকে বিবাহ করবে না?
নিলয়ের মাঃ- হ্যা করবেনা । বিয়ে করবেনা । এ বিয়ে হবেনা ।(এই কথা বলে লাইন কেটে দিয়ে নিলয়ের মা কান্না করতেছে)
[ওদিকে পূষ্প খুব কান্না করতেছে]
পূষ্পের বাবাঃ-কাঁদিসনে মা তোর বিয়ে শুক্রবারই হবে আমার বন্ধুর ছেলের সাথে ।
পূষ্পঃ- না বাবা আমি নিলয়কে ছাড়া আর কেউকে বিবাহ করবোনা ।
পূষ্পের বাবাঃ- বিবাহ তোমার করতেই হবে ।
[এদিকে পূষ্প নিলয়কে যতবার ফোন দেয় ততবারই নিলয পূষ্পের সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করে ।]
[পূষ্প রাগ হয়ে বিয়েতে রাজি হয়ে যায় । পূষ্প এখন খুব প্রতিশোধ পরায়ন । কারন সে বিয়ে করে নিলয়কে দেখাবে । তাই সে এই বিয়েতে রাজি ।]
২৯ তম দৃশ্য
[এদিকে বিয়ের পিড়িতে পূষ্প বসা,অন্যদিকে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়তেছে নিলয় । একদিকে পূষ্পের বিয়ের সানাই,অন্যদিকে মৃতপথযাত্রী নিলয়ের আহাজারি]
[এদিকে নিলয়ের খুব খারাপ অবস্থা । নিলয়ের পাশে আছে ওর মা,তন্ময় ও আঁখি]
নিলয়ঃ- তন্ময় দোস্ত এই চিঠিটা পূষ্পকে দিস । আর মা তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও । আমার যাবার সময় হয়ে গেছে ।(নিলয়ের কথা শুনে সবাই হাউমাউ করে কাঁদতেছে)
নিলয়ের মাঃ-বাবা নিলয়(চিৎকার দিয়ে)
নিলয়ঃ- মা,তন্ময়,আঁখি আমার খুব পূষ্পকে দেখতে ইচ্ছা করতেছে । তোমরা একটু পূষ্পকে এনে দাও । আমি পূষ্পকে একটু শেষ বারের মত দেখবো ।
তন্ময়ঃ- আঁখি তুমি পূষ্পকে গিয়ে সব খুলে বলো যে নিলয় মৃত্যুসজ্যায় সায়িত । এবং সে লাষ্টবার তোমাকে দেখতে চেয়েছে ।
আঁখিঃ- আচ্ছা আমি এখনই যাচ্ছি ।
[পূষ্পদের বিয়ে বাড়িতে আঁখির আগমন]
আঁখিঃ- পূষ্প চল নিলয়দের বাড়ি যাবি ।
পূষ্পঃ- আমি কেনো যাবো ঐ প্রতারকের বাড়ি?
আঁখিঃ- শোন পূষ্প,নিলয় ভাইয়ের ব্রেইন ক্যান্সার হয়েছে । তাই সে চায়না তোর সুন্দর জীবন তার অসুস্থ জীবনের সাথে জড়াইতে । তারাতারি চল সে তোকে লাষ্ট একবার দেখতে চাচ্ছে ।
[একথা শুনে পূষ্প নিলয় বলে চিৎকার করে দৌড় শুরু করছে]
নিলয়ঃ- মা আমি মনে হয় পূষ্পকে শেষ বার আর দেখতে পারবো না । তোমরা সবাই আমাকে ক্ষমা করে দিও মা । আর তন্ময় দোস্ত আমার চিঠিটা পূষ্পের কাছে দিস ।
[হঠাৎ নিলয় পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলো । তখন পূষ্প এসে পৌছালো । পূষ্প নিলয়ের মৃত দেহের দিকে তাকিয়ে একবারে নির্বাক হয়ে গেছে ।]
৩০ তম ও শেষ দৃশ্য
তন্ময়ঃ-পুষ্প এই চিঠিটা নিলয় তোমাকে দিতে বলছে । নাও পড়ো ।
[চিঠিটি নিয়ে পূষ্প পড়লো]
চিঠিতে যা লেখা ছিলঃ-প্রিয়তমা পূষ্প আমার ভালবাসার একরাশ শুভেচ্ছা নিবে । তুমি যখন এই চিঠিটা পড়বে তখন হয়তোবা এই দুনিয়ায় আমি থাকবোনা । কি করবো বলো? নিষ্ঠুর মৃত্যু আমাকে কেড়ে নিয়ে গেছে । বড় স্বাদ ছিল তোমাকে আমার ঘরনী করবো । কিন্তু তা আর হলোনা । মরনঘাত্বি ক্যান্সার আমায় কেড়ে নিয়ে গেলো । জানি আমার মৃত্যুর কারনে তোমার হৃদয়টা অতৃপ্তই রয়ে গেলো । কেঁদনা হে প্রেয়সী । তুমি কাঁদলে আমার আত্মায় কষ্ট পায় । তোমার সাথে আমি খারাপ ব্যবহার করেছি শুধুমাত্র আমার অসুস্থ জীবন থেকে তোমাকে সরানোর জন্য । প্রিয়তমা পূষ্প কেঁদনা । তুমি আমার মত ভালো একটা ছেলেকে জীবনে বিয়ে করে নিও । আর আমার কথা একেবারে ভুলে যেও । কোনো প্রকার ভুল হলে আমায় তুমি ক্ষমা করে দিও । তুমিতো জানো প্রিয়া মানুষ মরনশীল । তাই আমি মারা গেলাম কিন্তু বিধাতা বুঝি আমায় একটু আগে বাগেই কেড়ে নিয়ে গেল । যাহোক টিয়াপাখি তুমি ভালো থাকবে । তোমার আমার হৃদয়টা অতৃপ্তই রয়ে গেলো । আমার জন্য দোয়া করবে । আমি মৃত হলেও সর্বদা তোমার পাশে থাকবো । নিজের যত্ন নিবে । আর আমার আঁকা আমাদের ছেলেমেয়েদের ছবি চিরকাল যত্ন করে রেখো । ভালো থেকো প্রিয়তমা । আল্লাহ হাফেজ ।
[চিঠিটা পড়ার পরে পূষ্প চিৎকার দিয়ে মৃত নিলয়ের গায়ের উপর পরলো]
তখন আকাশে বাতাশে ধ্বনিত হয় সেই চিরায়িত গানটিঃ-
হৃদয়ের লেনাদেনা,
এপারেতে আর হবেনা ।
দেখা হবে,দেখা হবে ঐ পারে…..

[সমাপ্ত]







সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৩৩
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজকের ব্লগার ভাবনা: ব্লগাররা বিষয়টি কোন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪১


ছবি- আমার তুলা।
বেলা ১২ টার দিকে ঘর থেক বের হলাম। রাস্তায় খুব বেশি যে জ্যাম তা নয়। যে রোডে ড্রাইভ করছিলাম সেটি অনেকটা ফাঁকা। কিন্তু গাড়ির সংখ্যা খুব কম।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাপ, ইদুর ও প্রণোদনার গল্প

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৪

বৃটিশ আমলের ঘটনা। দিল্লীতে একবার ব্যাপকভাবে গোখরা সাপের উৎপাত বেড়ে যায়। বৃটিশরা বিষধর এই সাপকে খুব ভয় পেতো। তখনকার দিনে চিকিৎসা ছিলনা। কামড়ালেই নির্ঘাৎ মৃত্যূ। বৃটিশ সরকার এই বিষধর সাপ... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের সংগ্রামী জনতার স্লুইস গেট আক্রমণ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২১


(ছবির লাল দাগ দেয়া জায়গাটিতে গর্ত করা হয়েছিল)

শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

২৩শে এপ্রিল পাক সেনারা ফুলছড়ি থানা দখল করে। পাক সেনা এলাকায় প্রবেশ করায় মানুষের মধ্যে ভীতিভাব চলে আসে। কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাড়ির কাছে আরশিনগর

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫০


বাড়ির কাছে আরশিনগর
শিল্পকলা একাডেমির আশেপাশেই হবে চ্যানেলটার অফিস। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করল মৃণাল। কিন্তু খুঁজে পাচ্ছে না সে। এক-দু'জনকে জিগ্যেসও করল বটে, কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছে না।

কিছুদূর এগোনোর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×