শেষ হতে চলেছে বিশ্বকাপ ক্রিকেট। চমৎকার একটা আয়োজনের চমৎকার একটা অংশ ছিলো আমাদের দেশ। কাল আবার হাই ভোল্টেজ ম্যাচ। ভারত-পাকিস্থান। আমার চারপাশে এই দুটি দেশের মারদাঙ্গা সমর্থকদের উল্লাসে এবং উৎসাহে পাকিস্থান বা ভারত চলে যেতে ইচ্ছে করছে। আমি মোটামুটি নিশ্চিত অন্তত তাদের উল্লাস আমার গায়ে জ্বালা ধরাবে না। কারন তারা যে উদ্দীপনা দেখাবে কালকের ম্যাচ ঘিরে তা তাদের নিজেদের দেশ বলে। আমাদের মত অন্য দেশের জন্যে জান কুরবান সিচু্য়েশনে তারা নেই। আমরা বোধহয় একটু বেশীই সমর্থন পারঙ্গম জাতি। যার প্রমান আমরা রাখি ফুটবল বিশ্বকাপ শুরু হলেও। তখন গোটা দেশ জুড়ে যত আর্জেন্টিনা ব্রাজিলের পতাকা উড়ে আমার দৃঢ় বিশ্বাস খোদ আর্জেন্টিনা ব্রাজিল মিলেও এতো পতাকা ওড়াতে পারে না। এবার আসি আমার লেখার মূল উদ্দেশ্যে। আর সেটা হলো আমরা বোধহয় সমর্থনের যায়গা থেকে একটু বাড়াবাড়িই করে থাকি। কিংবা ক্ষেত্র বিশেষে একটু বেশীই বাড়াবাড়ি করে থাকি। খেলাটা একটা বিনোদনের মত। আমাদের মত দর্শকদের বিনোদিত করার জন্যে খেলা। কেবল মাত্র যদি খেলাটায় অংশগ্রহনকারী দল নিজের দেশের হয়ে থাকে তখনই কেবল উন্মাদনাকে অনুমতি দেয়া যায়। কিংবা এই ক্ষেত্রে উৎসাহ উদ্দিপনা বেশী থাকাই উচিত। কিন্তু এমন যদি হয় খেলায় অংশ নেয়া কোন দেশই আমার নয় সেক্ষেত্রে আমার মনে হয় সমর্থকদের একটা সীমারেখার মধ্যে দাড়িয়ে সমর্থন করা উচিৎ। কেননা খেলাটা তখন শুধুমাত্র তার জন্যে আনন্দ গ্রহন করা বা বিনোদিত হবার একটি উপায় ছাড়া আর কিছুই নয়। মনে রাখতে হবে, আমরা খেলা দেখে বিনোদন গ্রহন করবো। আমরা এমন কিছু করবো না যেটা আক্ষরিক অর্থেই বাড়াবাড়ি। এই বাড়াবাড়ির রকমটা উদাহরন দিয়ে বোঝাতে চাইলে বলতে হয় আমরা পাকিস্থানের ম্যাচটার সময় যা করলাম তাই। অথবা ভারতকে নিয়ে যা করি মাঠে ঘাটে তাই। অখবা ব্রাজিল আর্জেন্টিনাকে নিয়ে যা করি তাই। ব্যাপারটা বাজারের নর্তকীর প্রেমে পড়ার সাথে তুলনা করতে বাধ্য হচ্ছি। কিছুটা নিষ্ঠুরতা আনতেই এই উপমা ব্যাবহার। বাজারের যে নর্তকীটি নাচে তার নাচ দেখে আমোদিত হওয়া যায়, একটু চিৎকার করে উচ্ছাস প্রকাশ করা যায়, কিন্তু তার প্রেমে পড়ে মগ্ন হওয়া যায় না। অন্তত সমাজ তাকে ভালো ভাবে দেখে না। খেলাটাও এমন। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার খেলা আমাদের জন্যে স্রেফ খেলা। আর কিছুই না। এর জন্যে ব্রাজিল আর্জেন্টিনাকে মাথায় তুলে রাখার কোন প্রয়োজন নেই। ভারত পাকিস্থান ও একই। আপনি যদি এই ক্ষেত্রে যুক্তি দেন ভারত পাকিস্থানেরর কথা বলে আমি রাজনীতি আর খেলাকে এক করছি তাহলে আমি বোঝাতে ব্যার্থ। আমার অনুভুতিটি হচ্ছে আমাদের সমর্থনের সীমা সম্পর্কে সচেতনতা। আমরা কেন তাদের পতাকা বুকে একে নিজেকে ছোট করবো। তারা আমদের আনন্দ দেয়ার জন্যে খেলছে। ব্যাস এটুকুই। আমি খেলায় সাময়িক উত্তেজনা পাবার জন্যে যেকোন একদলকে সমর্থন করতে পারি। মাঠে গিয়ে সমর্থনও জানাতে পারি। কিন্তু বুকে-মনে-প্রানে বিশ্বাসে স্থান দেয়ার কোন মানে হয়??? জান প্রান উজার করে ভীনদেশী দলকে সমর্থন করার কি মানে? এই সমর্থন করার সীমাটি একসময় অসুস্থতা পরিনত হয়। নিজের দেশের সাথে পাকিস্থান ভারতের খেলায় আমি এই ধরনের কিছু উগ্র সমর্থককে কষ্ট পেতে দেখেছি বাংলাদেশ জিতে যাওয়ায়!!!! এর মানে কি??? আমরা কি সমর্থন করার জোয়ারে নিজেদের সম্মানটি, নিজ দেশের সম্মানটি ভুলে যাবো????
খেলার সমর্থন ও বাজারের নর্তকীর প্রেমে হাবুডুবু খাওয়া
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন
হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...
হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন
'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন
হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?
হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?
হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন
হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!
হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।