তৃতীয় পর্ব: Click This Link
চতুর্থ পর্ব
নির্বাচনী ইশতেহার(যে আইন বিধি-বিধান আমরা রাজনৈতিক দল/সংসদকে দিয়ে করাতে চাই)
আইন ও বিচার
৩. উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগ দিতে হবে নিম্নরুপ: জেলার প্রধান বিচারকদের মধ্য থেকে ২৫%, আইনের অধ্যাপকদের (দেশ-বিদেশের বিচার ব্যাবস্থার উপর যথেষ্ট সংখ্যক প্রকাশনা থাকতে হবে ) থেকে ২৫%, প্রস্তাবিত তদন্ত ও বিশ্লষণ(FBI,CBI এর মত প্রতিষ্ঠান) থেকে ১০%, ভালো রেটিং পাওয়া আইনজীবীদের মধ্য থেকে ১০%(বিচারপতির পদ থেকে অবসর নেওয়ার পর কোন আইনজীবী সমিতির সদস্য থাকতে পারবে না এবং উকালতি পেশা পেশা চালিয়ে যেতে পারবে না।), সিনিয়র ডাক্তারদের মধ্য থেকে ৫%। ব্রীটিশ ব্যারিষ্টারী স্বীকৃতি বাতিল করা।
৪. কোন মামলার নিম্ন আদালতে(আপীল মামলা নয়) শুনানিতে ভাড়ায় উকিল রাখার(এ প্রথা এখানে ব্রীটিশরা সূচনা করে) প্রথা বাতিল(উকিল ছাড়া ভ্রাম্যমান আদালত যথেষ্ট কার্যকর) করা। কোন মামলার সময় ক্ষেপণ শুরু হয় এখান থেকে। এক্ষেত্রে আদালতের সহকারী হিসেবে সরকারী খরচে এবং আদালতের নিয়ন্ত্রনে শিক্ষানবীশ বিচারক/ উকিল থাকতে পারে। মানুষের দ্রুত এবং নিখরচায় ন্যায়বিচার পাওয়ার আকাঙ্খা এবং এই ন্যায়বিচার পাওয়ার প্রক্রিয়াকে ব্যাবহার করে উকিল সমাজের সব্বোর্চ আয়(সব পেশার মানুষই সব্বোর্চ আয় করতে চায়) করার আকাঙ্খা সাংঘর্ষিক নয় কি? আপীলের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র উকিল রাখার প্রথা থাকতে পারে।এক্ষেত্রে মামলায় জিতলেই শুধু একজন উকিল পারিশ্রমিক(সরকার নির্ধারিত) দাবি করতে পারবে। বিচারপ্রার্থীদের সাথে উকিলদের সমস্ত লেনদেন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে করতে হবে। উকিলদেরকে ফ্রিলানস্যারদের মত রেটিং নিয়ে আসতে হবে। এটা হলে সহজে জানা যাবে একজন ঊকিল কতগুলো বাদীর পক্ষ্যে এবং কতগুলো বিবাদীর পক্ষ্যে লড়েছে,সফলতার হার কত,বিচার প্রর্থীরা তাদের প্রতি ১০০তে কত নম্বর দিয়েছে,শিক্ষ্যাগত যোগ্যতা ইত্যাদি।একজন উকিল সর্বোচ্চ কতগুলো মামলা হাতে রাখতে পারবে তার একটি সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করতে হবে । উকিল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য বেসরকারী শিক্ষক নিবন্ধের মতো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা চালু করা।
৫. ১০ বছরের মধ্যে দুই এর অধিক বার সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীদের একটি দ্বীপ খালি করে বা বান্দরবনের থানচিতে বা আফ্রিকার দেশগুলোতে নির্বাসন দেওয়া। সম্ভব হলে বৃদ্ধ বয়সে ফেরত আনা। এসব অপরাধীদের ডিএনএ ডাটাবেস তৈরি করা। আমেরিকার মতো এদের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে হবে । খাদ্যে ভেজাল দিলে চায়নায় মৃত্যুদন্ড আছে আমাদের এখানে নেই কেন?কারণ আমাদের আইন অপরাধী বান্ধব।
৬. ঠিক একজন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়া রোগীর যেমন দ্রুত ডাক্তার দরকার, তেমনি একজন ন্যায় বিচার(ক্যান্সারের এর মত ব্যায়বহুল চিকিৎসার চেয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার জরুরী) প্রার্থীর ক্ষেত্রে ও দ্রুত বিচারক দরকার। এই জন্য সহকারী জজ / বিচারীক ম্যাজিষ্ট্যেট আদালতে কোন সাপ্তাহিক বন্ধ ছাড়া প্রতিদিন ১৬ ঘন্টা অন্তত একজন বিচারকের উপস্থিতী নিশ্চিত করা।এতে পুলিশের কাছে মামলা করতে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা কমে যাবে। এই আদালত দ্বয়ে কোন মামলার বয়স ১ সপ্তাহ পার হলে ঐ মামলা দায়রা জজ আদালতে চলে যাবে। প্রয়োজনে বিচারক পরিবর্তন না করে ঐ ১ সপ্তাহ ধরে টানা ১টি মামলার শুনানী চলবে। ভ্রাম্যমান আদালত ব্যতীত, যে কোন কোর্ট কল করলে রাষ্ট্রপতি ব্যতীত প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে যে কোন ব্যাক্তি ঐ কোর্টে হাজির হতে বাধ্য থাকবে। প্রতিটি আদালত মামলা গ্রহণ করার জন্য, ব্যাংক একাউন্ট খোলার ফর্মের মতো ,প্রয়োজনীয় তথ্য সংবলিত ফর্ম প্রস্তুত রাখবে।
৭. জনস্বার্থ এবং হত্যাকান্ডের মামলা ব্যতীত কোন মামলা শুধুমাত্র একবার আপিল করার সুযোগ থাকবে। চেম্বারে বসে বিচার করে, এরকম সব আদালতের বিচারক নিয়োগ/বদলি/অপসারণ/পদোন্নতির ক্ষমতা শুধুমাত্র সুপ্রীম কোর্টের কাছে থাকবে। ভ্রাম্যমান আদালতের জরিমানাকৃত অর্থ পুলিশের ট্রাফিক আইন ভঈের জরিমানার মত সরাসরি ব্যাংকে জমা হবে এবং সর্বোচ্চ জরিমানা(বার্ষিক মাথাপিছু আয়ের ২ গুণ হতে পারে) নির্ধারণ করে দেত্তয়া।এর অতিরিক্ত শাস্তি দিতে হলে ভ্রাম্যমান আদালতকে বাদী হিসেবে প্রচলিত আদালতে মামলা করতে হবে।
৮. প্রতিটি মামলায়(বিশেষ করে বাদী তদন্ত রিপোর্টে অনাস্থা দিলে) বিচারককে একবার ঘটনাস্থলে গিয়ে গণশুনানি(সম্ভব হলে শুক্রবার মসজিদের মধ্যে) করতে হবে(বাংলাদেশের অর্থ পাচারে ফিলিপাইনের বিচার ব্যাবস্থার শুনানির মতো)। বাদী/বিবাদী গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতাল/বাসায় থাকলে বিচারক হাসপাতাল/বাসায় গিয়ে বাদী/বিবাদীরর স্বাক্ষ্য নিবে। ইউনিয়নের চেয়ারম্যান-সদস্য–চৌকিদারদের বিচার প্রক্রিয়ার স্বাক্ষ্য-তদন্তে সর্বোচ্চ ব্যাবহার করা । মনে রাখা দরকার বিচারকরা ব্রীটীশ লর্ড নন যে তাদের ঘটনা স্থলে যেতে আপত্তি থাকবে।
৯. যেহেতু তদন্ত প্রক্রিয়া উঁচু মাত্রার বিশ্লষণধর্মী বিষয় তাই চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই ব্যতীত অন্য সব মামলা,সরকারি কর্মচারী,উকিল/বিচারক(মামলায় অযথা দেরি,প্রতারণা),রাজনীতিকদের(ক্ষমতার অপব্যাবহার) বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য CBI(India),FBI(USA) এর মত স্বাধীন সংস্থা গড়ে তোলা। এর নিয়োগ/বদলি/অপসারণ/পদোন্নতি হবে আয়কর প্রদানকারীদের নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি দ্বারা।নিশ্চিত করতে হবে যেন এখানে বেশি বেতন-ভাতা দিয়ে হলেও সর্বোচ্চ বিশ্লষণধর্মী-দূরদর্শী-মেধাবী-স্বাধীনচেতা লোক নিয়োগ পায়।
১০. কোর্টের নিদেশ ছাড়া পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপারকে তৎক্ষণাৎ জানাতে হবে এবং এর সমস্ত দায়দায়িত্ব পুলিশ সুপারকে বহন করতে হবে। সাদা পোশাকে পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করার পর স্থানীয় জনপ্রতিনিধীর/উপস্থিত জনতার নিকট পুলিশ নিজেদের ID card প্রদশন করবে,গ্রেফতারের কারন লেখা সংবলিত কাগজে ঐ জনপ্রতিনিধীর স্বাক্ষর নিবে এবং জনপ্রতিনিধী সাদা পোশাকের পুলিশের ছবি তুলে রাখবে। এর পর গ্রেফতার হওয়া ব্যাক্তিকে নিয়ে আসতে পারবে। এর ব্যাতিক্রম হলে ঐ ব্যাক্তিরা অপহরণকারী হিসেবে বিবেচিত হবে।
চলবে.........