হন্তদন্ত হয়ে গ্রিনলাইন বাস কাউন্টারে ঢুকলাম। ঘড়ির কাটায় ২টা৫৫। ক্ষীণ আশাবাদী ছিলাম ৩টার বাসটা পাবো। টিকেট কাউন্টারে বসা মেয়েটার ব্যাচপ্লেটে লেখা সৈয়দা শিমলা।
জানতে চাইলাম, খুলনার বাস কখন আছে?
শিমলা: বিকাল ৪টাতে।
শীতের বিকেল ৪টা মানে প্রায় সন্ধ্যা। বললাম, এর আগে আর কোনো বাস শিডিউল নেই?
শিমলা জানালেন৷ জ্বি না ম্যাডাম।
জিজ্ঞেস করলাম, সাতক্ষীরার কোন সিডিউল বাস আছে?
জ্বী আছে, সাড়ে চারটায়।
শিমলা কম্পিউটার স্ক্রিন থেকে চোখ তুলে জানতে চাইলো আপনারা দু'জন কী একসাথে? আমি তো বাসা থেকে কাউকে নিয়ে আসিনি তাহলে! ঝটিকা পেছনে তাকিয়ে দেখলাম পারিবারিক দূরত্বে একজন দাঁড়িয়ে। লম্বা একটা ছেলে, নীল রঙের হুডি গলায় গিট দেয়া। সম্ভবত ছেলেটা আমার ওভার শোল্ডার ঝুঁকে চেহেরার দিকে তাকিয়ে খুব মনোযোগ দিয়ে আমার এক্সপ্রেশন দেখার চেষ্টা করছিলো। বার্জার রাউন্ডের মতো যথাসম্ভব দ্রুততার সাথে, বোধহয় খানিকটা অবজ্ঞার সাথে বললাম 'না'। ছেলেটাও একই সাথে বলে উঠলেন না! (না এর দ্বিরুক্তি আরকি)।
শিমলা হেসে ফেললেন। সামনে সিট প্ল্যান রেখে, আমার সিট চয়েজ শুনে আপার ডেকারে E-3 টিকেট প্রিন্ট করে দিলেন। ছেলেটার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো, স্যার কোথায় যাবেন? ছেলেটা জানালেন খুলনা। এবং প্রথমে আমার সামনের রোয়ের সিট পছন্দ করেও সিধান্ত পরিবর্তন করে লোয়ার ডেকে সিট নিলেন। যাওয়ার আগে আমার দিকে খুব ঠান্ডা স্থির ভাবে তাকালেন। নিঃশব্দে বলে গেলেন, একটা না একজন বললেই যথেষ্ট, দু'জনের বলার দরকার নেই মিস অচেনা!
ছেলেটা কী আমার উপর রাগ করে; নাকি রাগ দেখিয়ে লোয়ার ডেকে সীট নিলেন, জানাতে খুব ইচ্ছে হচ্ছিল...
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৪:৪৪