ক্লাস টু তে মফস্বলের ও মফস্বলে ততোধিক নামহীন প্রাইমারী স্কুলে প্রথম যেদিন শ্লেট হাতে অ, আ আর ১, ২ লেখার পরীক্ষায় কোন কিছু না লিখতে পেরে কাদতে শুরু করেছিলাম , খোলা মাঠের সে পরীক্ষায় সূর্যের আলোর তীব্রতায় ঘামে ভিজে একাকার আমি, জীবনকে তখনো এতটা বুঝে উঠতে পারিনি, তবে পালানোর একটা প্রবল ইচ্ছে যে জেগেছিলো তাতে কোন সন্দেহ নেই।
না, পরীক্ষার শ্লেট আর খালি থাকেনি । এক মহান বন্ধু বেশে একজন হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলো। অ, আ আর ১,২ এ পূর্ণতা পায় আমার শ্লেট। জীবনের প্রথম পরীক্ষায় ভাল ভাবেই আমি উতরে যাই। অনেক চড়াই উতরাই পেরিয়ে আজ আমি ভার্সিটি শেষ করে উচ্চপদে কর্মরত। আমার সেই মহান বন্ধু এখন একজন পান দোকানদার!!!
গ্রাম পেরিয়ে যেদিন প্রথমে শহরে পা বাড়াই.........ইট-পাথর আর যান্ত্রিকতায় বাবার হাতটি এমন জোরে ধরে রেখেছিলাম যে , আমার কচি হাতের সেই চাপে বাবার হাতে দাগ পড়ে গিয়েছিলো। আমার সেই বাবাকে এখন পাজকোলা করে শহরের শত ব্যস্ত রাস্তা পার হয়ে কোন নামী ক্লিনিকে রেখে আসি, অথচ সেদিনও কি শক্তিশালীই না ছিলো আমার বাবা।
আমার মা, নিজ হাতে কত শত মজার রান্না করে নিজ হাতে খাইয়ে দিতেন । আমি না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি, এই ভয়ে আমার পড়ার টেবিলের পাশে বসে থেকেছেন কত শত রাত। কত যে বিরক্ত হয়েছি তার শেষ নেই। সেই মা এখন আমার দিকে ফেল ফেল চোখে তাকিয়ে থাকেন, আমি তার মুখে একমুঠো খাবার তুলে দিতে পারলেই খুশি । কিন্তু মা যে আমার অন্য জগতের মানুষ, আমি খাই বা না খাই তাতে মায়ের কিছুই আসে যায় না, সে আজ বাকহারা।
সবকিছু এত দ্রুত বদলে যায় কেন???????
প্রথম পর্ব
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ৯:০৫