somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঘোড়াশাল তাপবিদুৎ কেন্দ্র- ৬ নং ইউনিটের দুরাবস্থা!!:(( আমাদের দায়বদ্ধতা??/:)(শুধু মাত্র দেশপ্রেমীদের জন্য)

২০ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ১২:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
গত সপ্তাহে industrial training এর সুবাদে ঘোড়াশাল তাপবিদুৎ কেন্দ্রে এক সপ্তাহ কাটিয়ে আসলাম।সেখানে সবকিছু ভাল লেগেছে কিছু কিছু অনিয়ম আর ৬নং ইউনিট বন্ধ থাকা বাদে।প্রথমে ঘোড়াশাল তাপবিদুৎ কেন্দ্র নিয়ে তারপর ৬নং ইউনিটটি নিয়ে আলোচনা করব।

যেখানে বিদ্যুৎ না থাকায় কৃষকরা জমিতে সেচ দিতে পারছে না, কলকারখানায় বিঘ্ন হচ্ছে উৎপাদন, তীব্র গরমে মানুষকে পোহাতে হচ্ছে অসহনীয় যন্ত্রণা, অবস্থা মোকাবিলায় সরকার হিমশিম খাচ্ছে। এমনই পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় দেশের সর্ববৃহৎ নরসিংদীর ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুটি ইউনিট বন্ধ রয়েছে অনেক দিন ধরে। বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে পড়া ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে প্রকৃত উৎপাদন ক্ষমতার অর্ধেকের বেশি বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না।

৯৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ঘোড়াশাল বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থেকে বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ৪৫৮ মেগাওয়াট। যা কেন্দ্রটির মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের অর্ধেকেরও কম।
এই কেন্দ্র থেকে বর্তমানে ৫৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ১ নম্বর ইউনিট দিয়ে ৪৮ মেগাওয়াট, ২১০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৩ নম্বর ইউনিট দিয়ে ১২০ মেগাওয়াট, ২১০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৪ নম্বর ইউনিট দিয়ে ১১০ মেগাওয়াট ও ২১০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৫ নম্বর ইউনিট দিয়ে ১৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। ফলে এই কেন্দ্রের ছয়টি ইউনিটের মধ্যে বর্তমানে চারটি ইউনিট দিয়ে ৪৫৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে।
বন্ধ রয়েছে ২০১০ সালের ১৮ জুলাই টারবাইন জেনারেটরে আগুন লেগে বন্ধ হয়ে যাওয়া ২১০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৬ নম্বর ইউনিট। দীর্ঘসময় সংস্কার না করায় একই বছরের এপ্রিল থেকে ৫৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার ২ নম্বর ইউনিটটি বন্ধ রয়েছে।

এখন আসি ৬ নং ইউনিটটি কেন বন্ধ হয়ে গেল…

১)ইউনিটের সিস্টেম প্রটেকশন ঠিকমত কাজ না করা
২) নির্ধারিত সময়ে জেনারেটর ও টারবাইনের প্রটেকশন সিস্টেম মেরামত না করা
৩)সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাব
৪) দক্ষ লোকের অভাব ও প্রশিক্ষনের যথাযথ ব্যবস্থা না থাকা


ঠিক আছে একটা ইউনিট অকেজো হয়ে যেতে পারে কিন্তু আজ প্রায় ২ বছর চার মাস হয়ে গেল এটা মেরামত করা হয় নি, এটা কেমন কথা। মাত্র ১৮০ কোটি টাকা হলেই এটা মেরামত করা সম্ভব, বরঞ্চ আগের থেকে উন্নত প্লান্ট করা সম্ভব।১৮০ কোটি টাকা বেশি লাগছে তাই না। একটু হিসাব বলে দেই বেশি মনে হবে না। একজন ফোরম্যানের সাথে কথা বলে জানতে পারি এই ৬ নং ইউনিট থেকে দৈনিক যে পরিমান বিদ্যুত উৎপন্ন হত তার বাজার মুল্য প্রায় এক কোটি টাকা।আর উৎপাদন খরচ ৫০লাখের মত। তার মানে দাড়াচ্ছে মাত্র এক বছরে মেরামতের টাকা উঠে আসত।তাহলে কেন এটা চালুর উদ্যোগ নেয়া হই নি? উদ্যোগ নেয়া হই নি এ কথা বল্লে ভুল হবে, কয়েকবার দরপত্র আহবান করা হলেও বিভিন্ন জটিলতায় মেরামতের কাজের দরপত্র দুই বার বাতিল হয়।

৬ নং ইউনিট চালু না হওয়ার পিছনের কারনঃ

# প্রথমত যদি বলতে হয় তবে বলব মন্ত্রির আসাধুতা।কিভাবে?? বিষয়টি হল, আমাদের দেশে সরকারি বাদে বিভিন্ন বেসরকারি পাওয়ার প্লান্ট আছে।তারা সব সময় চাইবে সরকারি গুলো বন্ধ হয়ে যাক।এতে তাদের চাহিদা বেড়ে যাবে।তারা অধিক মুনাফা অর্জন করতে পারবে। আর এ জন্য মন্ত্রিকে দমিয়ে রাখতে কি করতে হয় তা তাদের ভালো করে জানা আছে। আর আপনারাও বুঝে নিন।

#ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে রাজনীতি অনেক সক্রিয়। বিএনপির প্রাধান্য বেশি। তারা চাইবে না এটা এই সরকারের আমলে চালু হোক।সেটাকে এই সরকার নির্বাচনী ইস্যু বানাতে পারে।

#এত দিনও যখন হয় নি। এই সরকার আর এটা নিয়ে আর মাথা ঘামাবে না। কারন এটা ঠিক করতে প্রায় দু-বছরের মত সময় লাগবে। তাহলে এখন কাজ শুরু হলে শেষ হবে নির্বাচনের পরে।পরের বার এনারা আসবেন কিনা তার নিশ্চয়তা নেই। তাই তারা এখন কাজ শুরু করবে না মনে হয়।

#মেরামত বাংলাদেশের কোন কোম্পানি করতে পারবে না।কারন এখানে রাশিয়ান প্রযুক্তি ব্যাবহার করা হয়েছে। আর তাদের দিয়েই ঠিক করতে হবে। সেক্ষেত্রে কতগুলো ধাপ অতিক্রম করে কাজটা করতে হবে, সেজন্য এটা বিলম্বিত হচ্ছে।


পরিশেষে, ঘোড়াশাল দেশের অন্যতম সাশ্রয়ী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। পরিকল্পিত পরিকল্পনার মাধ্যমে বিপুল অবকাঠামো কাজে লাগিয়ে সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে চলমান সংকটে ভূমিকা রাখতে পারে ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।তাই সরকারে উচিত দল কিংবা নিজ স্বার্থ না দেখে দেশের মানুষের স্বার্থে ৬ নং ইউনিটের মেরামত কাজ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শুরু করা।।

আরো কিছু ছবি

৬নং ইউনিটেরের পড়ে থাকা জেনারেটর

৬নং ইউনিটেরের টারবাইন

বয়লার

ট্রান্সফরমার

প্রটেকসন সিস্টেম
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ১২:০৭
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

সম্পর্ক

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২


আমারা সম্পর্কে বাঁচি সম্পর্কে জড়িয়ে জীবন কে সুখ বা দুঃখে বিলীন করি । সম্পর্ক আছে বলে জীবনে এত গল্প সৃষ্টি হয় । কিন্তু
কিছু সম্পর্কে আপনি থাকতে চাইলেও থাকতে পারবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×