এক ব্লগারের সঙ্গে ই-কথোপকথনের অংশ-
4:23 AM neel: kemon asen
4:25 AM msg pan nah ???
4:32 AM me: oh, ghotona hoilo...
neel: ki
me: gmail-e msg dile ring baje.....amar maa gotokal seita dhore felchilo
4:33 AM amare bokaboki korchilo raat jege ache boila
tai ajke sound off kore rackchi, buji nai aage apni msg dichen
neel: ohhhh. loll
4:34 AM me: 2-din por biya korbo, mother-e tarpor-o jhamela kore, kuthai jamu?
4:35 AM neel: hahaha, lock kore nen dorja
me: are bhai lock to achey, amar maa tarpor-o sob buje jai
4:36 AM neel: hahaha, shadhu shabdhan
4:37 AM me: hu
রাতজাগা আমার পুরনো অভ্যাস। আমার অফিসে বিকেলে গেলে চলে। ফলে কম্পিউটার এবং তার ভেতরে ইন্টারনেট নিয়ে পড়ে থাকতে অসুবিধার কিছু দেখি না। কিন্তু আমার মা এসব বুঝতে চান না। কিভাবে আমাকে ঘুম পাড়ানো যায়- এটা যেন ওনার জীবনের প্রধানতম সমস্যা। আমি আকারে ইঙ্গিতে তাকে বোঝাতে চেষ্টা করি যে, এই আমার অফিস, এই আমার বেতন এবং এমনকি সাম্প্রতিককালে বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে আমাকে অতিথি হবার প্রস্তাব পর্যন্ত এসেছে। কিছুদিন আগে আমি রীতিমতো "বুদ্ধিজীবী" কোটায় একটি প্লটের মালিকও হয়েছি। কিন্তু কিসের কী! এইসব উনি থোড়াই কেয়ার [www.care.org] করেন। পাঁচ পয়সার যেন মূল্য নেই আমার।
এ পরিস্থিতিতে অনেক ভেবেচিন্তে আমি একটা উপায় বের করি। সাধারণত রাত ১১টা-১২টার দিকে আমি এমন ভাব করি, যেন আমার ভীষণ ঘুম পাচ্ছে। যেন কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘুমের রাজ্যে তলিয়ে যাবো। রুমের দরজা বন্ধ করে আমি বাতি নেভাই। মশারির ওপর লম্বা তোয়ালে বিছিয়ে দেই, যেন আলো বাইরে যেতে না পারে। তারপর ল্যাপটপটা নিয়ে বসি মশারির ভেতরে। ছোটবেলা থেকেই আমি একা রুমে থাকতে পছন্দ করি। এখনো তাই। সাধারণত অফিস থেকে ফিরে রাতের বেলা আমি মশারি টাঙিয়ে ফেলি বিছানার ওপরে। অর্ধশোয়া বা অর্ধমৃত অবস্থায় ল্যাপটপ ব্যবহার করা আমার অভ্যাস। আগে যখন ডেস্কটপ ছিল, মনিটরের দু পাশে দু পা তুলে কোলের ওপর কিবোর্ড নিয়ে কম্পিউটিং চালাতাম।
এভাবে ভালোই চলে যাচ্ছিল রাতগুলো। ছেলের তথাকথিত সুমতি ফিরেছে ভেবে মা খুশি। সমস্যা দেখা দিল কয়েকদিন আগে। জিমেইলে চ্যাট করছিলাম এক ব্লগারের সঙ্গে। সাধারণত নতুন ম্যাসেজ আসলে জিমেইল চ্যাটে টুং করে একটা শব্দ হয়। বেখেয়ালে সাউন্ড অফ করতে ভুলে গিয়েছিলাম সেদিন। ফজরের নামাজের জন্য উঠে মা বিষয়টা ধরে ফেললেন। তৎক্ষণাৎ দরজার ওপাশ থেকে শুরু হল বাণী বর্ষণ- "এখনো তুই জেগে আছিস?" এত সতর্কতার পরও কোনো লাভ না হওয়ায় মেজাজটাই গেল খারাপ হয়ে। সবচেয়ে দুঃখ লাগল এটা ভেবে- আমার ফাঁকিটা উনি বুঝে গেছেন। এবং এরপর হাতেনাতে আর কোনো প্রমাণও উনার জন্য জরুরি নয়!
ধর্মকর্মে আমার তীব্র অনাগ্রহ উনার দ্বিতীয় অসন্তুষ্টির কারণ। প্রায়ই তিনি বলেন, "তুই হাশরের ময়দানে কী হিসাব দিবি?" আমি স্পষ্ট জবাব দেই, এইগুলা নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। প্রয়োজন পড়লে চার্টার্ড একাউন্ট্যান্ট দিয়ে হিসাবপত্র বানিয়ে নেব।" উনি দীর্ঘশ্বাস ফেলেন।
অথচ আগামী কিছুদিনের মধ্যে নিশ্চিত বিয়ে করতে যাচ্ছি। মা নিজেই মেয়ে দেখছেন এখানে-ওখানে। তার ছেলে যে বড় হয়েছে জানেন নিশ্চয়ই। কিন্তু না, উনার সুমতি হয় না।
হায়, বড়ো দুঃখের দিন যাচ্ছে আমার!