somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বর্তমানের মায়েরা কেন মমতাহীন হয়ে যাচ্ছে ?

১২ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১২:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মা মমতাময়ী। মানব ইতিহাসের শুরু থেকে মা একটি গুরুত্বপূর্ণ শব্দ হিসেবে বিবেচিত। পৃথিবীতে সবচেয়ে প্রিয় এবং মধুরতম শব্দ মা। মা শুধু প্রিয় শব্দই নয়, প্রিয় বচন, প্রিয় অনুভূতি ,প্রিয় ব্যক্তি ,প্রিয় আদর, প্রিয় রান্না , যতগুলো প্রিয় আছে তার সব প্রিয় মাকে ঘিরে। মা নিয়ে বা মা এর মমত্ব নিয়ে লিখলে শেষ হবে না। মা কে ইসলামে যে কতটা গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে তা আমরা যারা মুসলিম তারা খুব ভালোভাবে জানি। মা শব্দটি নিয়ে অনেক অনেক গল্প , উপন্যাস , কবিতা , গান ,রচিত হয়েছে এখনো হচ্ছে।

মা- শব্দটি মনে আসলেই, মনের ভেতর মায়া মমতার ভার অসম্ভব মাত্রায় বেড়ে যায়। যেটার ভার বইবার সামর্থ্য মনে হয় না কোন রক্ত মাংসের মানুষ কে দেওয়া হয়েছে। যে মমতা আর যে ভালবাসা রক্ষাকারী দেওয়াল হয়ে আপনাকে ঘিরে থাকে সবসময়, প্রতিটি মুহূর্তে, সে মায়া মমতা পূর্ণ ভালবাসা আপনি একমাত্র আপনার মা থেকেই পাবেন। আর কারও পক্ষে এভাবে নিঃস্বার্থ ভাবে ভালবাসা সম্ভব হবে না আপনাকে। মা বরাবরই আপনাকে ভালবেসে যাবে, যদিও আপনি তাকে হাজারও কষ্ট দিন, দুঃখ দিন। দিন শেষে মা কিন্তু আপনার ভালোর জন্যই প্রার্থনায় মুখরিত থাকে।

পৃথিবীতে বেশিরভাগ সফল ব্যক্তি ই তার সফলতার পিছনে তার মায়ের অবদান অকপটে স্বীকার করেছেন। হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেছেন আল্লাহ এর পর কারো ইবাদত করার বললে তা হতো মাকে ইবাদত করা। কে বলেন নি মাকে নিয়ে আব্রাহাম লিঙ্কন , আইনস্টাইন , নেপোলিয়ন , বারাক ওবামা , শচীন টেন্ডুকলার, ম্যারাডোনা সবাই মায়ের মমত্ব , গুরুত্ব , আদর্শ জাতি গঠনে মা এর ভূমিকা নিয়ে তাদের নিজের ভাষায় ব্যক্ত করেছেন।

যায় হোক টাইটেল লিখছি " বর্তমানের কিছু মা কেন মমতাহীন " কিন্ত আলোচনা করলাম মা এর গুরুত্ব নিয়ে। যুগ যুগ কেটে যাবে এই মাকে নিয়ে লেখতে গেলে। এর বেশী আমি আপনাদের কিছু লিখে জানাতে পারবোনা।

তবে এই বিংশ শতাব্দী তে এসে কিছু মা এর আচরণের কারণে মনে হচ্ছে মা এর মমত্ববোধ ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে যা আমাদের আশে পাশে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা অবলোকন করলে বিষয়টি পরিষ্কার বুঝতে পারবেন। শুধু যে এখন ই এমন হচ্ছে তা না আগেও এমন টা হত তা আমরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর "চোখের বালি" উপন্যাস পড়লেই বুঝতে পারবো। তাছাড়া বিভুতিভূষণ বন্দ্যোপধ্যায় তার "অপরাজিত" উপন্যাসে ওভার পজেসিভ মায়েদের কথা তুলে ধরেছেন। কিন্ত তখন এর পরিমান ছিল কম। আর এখন, পত্রিকা খুললেই মায়ের হাতে সন্তান খুন এর মত খবর দেখতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। পারিবারিক কোনো ঝামেলা হলেই তারা সন্তান এর উপর তার প্রভাব খাটাচ্ছেন।

এটি আমাদের জন্য চিন্তার বিষয় নয় কি ?

খুনের থেকেও আমার কাছে বড় সমস্যা হচ্ছে বর্তমান আধুনিক মা দের শিশু পালন এর ধরন টা। শিশু জন্মের পর থেকেই অবহেলার মাঝে বড় হচ্ছে , হয় নানা নানী , দাদা দাদির কাছে নয়তো বা কাজের বুয়ার কাছে (বেবিসিটারের) কাছে। জন্মের পর হয়ত তারা নিজেরা যতদিন সুস্থ না হয় ততদিন হয়ত তারা বাচ্চাদের দুধ পান করায় তার পর আর বাচ্চার কপালে দুধ ঝুঠে নাহ। শপিং এ যায় বাচ্চাদের কে বাসায় রেখে , হ্যাংআউট করতে যাবে বাচ্চাদের কে ঘরে রেখে , বাসায় ফিরে ব্যস্ত হয়ে যায় স্মার্টফোনে। শিশু যে একটু মমত্ববোধ শিখবে তার উপায় নেই তাই তো এখন মানুষে মানুষে এত হানা হানি বিশেষ করে আমাদের দেশে।

তারপর যখন শিশুদের স্কুলে যাওয়ার বয়স হয় তখন তো শুরু হয় এক্সট্রা কেয়ারিং :-( :-(
যা আমরা সবাই ইতিমধ্যে অবগত।

কেউ হয়ত বলবেন আমি কেন এমন লিখতে গেলাম। ভাই আমি এমন একটা সমাজের ভিতর দিয়ে বড় হয়েছি সেখানে হারমশায় ঘঠেছে এমন সব ঘটনা যা আমার মন কে ব্যাথায় কাতর করে তুলেছে। প্রতিদিন এখনো অবহেলিত শিশুর কান্নায় ঘুম ভাঙ্গে। যায় হোক কেন জানি আমরাও জিনিস টাকে অবহেলা করে কাটিয়ে দিচ্ছি যার কারণে এ দেশের ভবিষ্যৎ আজ হুমকির মুখে।

আচ্ছা এর পিছনে আপনি কিসের দায় দিবেন ? বা কেন এমন হচ্ছে আজকাল? কি করলে এর প্রতিকার বা আংশিক প্রতিরোধ হবে ?

আমার ধারণামতে নিচের বিষয় গুলি এর জন্য দায়ী :-

১.সিজার এর মাধ্যমে সন্তান জন্মদান। ভাবলে অবাক হবেন যে বর্তমান বাংলাদেশে ৫০-৮০% শিশু জন্ম নিচ্ছে সিজারের মাধ্যমে।
২.পশ্চিমা সাংস্কৃতি কে অর্ধেক গলাধকরণ। আমরা শুধু তাদের লাইফ স্টাইল কে কপি করতেছি কিন্ত তাদের প্রতিদিনের সমস্যা , খুন ,ধর্ষণ , ডিভোর্স এগুলা সম্পর্কে ধারণা নিচ্ছি না। মোদ্দাকথা আমরা তাদের উপরের জিনিস গুলা কপি করতেছি কিন্ত তাদের মানসিকতা কে কপি করতে পারছি না যার কারণে এই নিত্যনতুন কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে যা আমাদের দেশে আগে খুবই কম ছিল।


মূলত আমার বাসার পাশে আজ এমন একটি ঘটনা দেখে এত খারাপ লাগল যা বলে বুঝতে পারব না একজন মা তার বাচ্চা কে এভাবে মারতে পারে :-( :-(

যায় হোক টাইটেলের আঙ্গিকে হয়ত লেখা ফুটিয়ে তুলতে পারি নি। ভুল কিছু লিখলে নিজ গুনে ক্ষমা করবেন।

আল্লাহ পাক সকলের মা -বাবা কে সুস্থ রাখুক সেই দোয়া করি। মা কে জানা শশীরে কখনো কষ্ট দিয়েন না। যার মা নেই তাকে দেখুন মা এর জন্য কেমন আহাজারি করে। তখন আপনিও মা এর মূল্য বুঝবেন। আপনি নিজের কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন যে আপনি বেঁচে থাকতে আপনার বাবা - মা কে বৃদ্ধাশ্রম এর মুখ দেখতে না হয়।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১২:৫৬
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পুরনো ধর্মের সমালোচনা বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেই নতুন ধর্মের জন্ম

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:১৫

ইসলামের নবী মুহাম্মদকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তিথি সরকারকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে এক বছরের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে প্রবেশনে পাঠানোর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×