somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল
পাঠক ছিলাম, লেখক হলাম। পড়ব বেশী, লিখব কম। পছন্দের বিষয় প্রকৃতি, জীবন ও দর্শন। ভালোলাগে প্রবন্ধ ও সম্পাদকীয়। প্রতীক্ষায় আছি একদল বিচক্ষণ লেখকের। যারা সমাজের সমস্যাগুলো বুঝবে, তা নিয়ে ভাববে ও লিখবে। যে লেখায় মানুষ হবে সচেতন, দেশের হবে উন্নয়ন।।জয় বাংলা।।

মাঝি নাও ছাইড়া দে, ও মাঝি পাল উড়াইয়া দে। গা-রে মাঝি গা কোন গান.... (নৌকাবাইচ সংক্রান্ত পোস্ট)

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমাদের এলাকাটা জলের দেশ। একটু বেশী বৃষ্টি হলেই নীচু জায়গাগুলো পনিতে টইটুম্বুর হয়ে যায়। অথচ এবারের ঈদে গ্রামে গিয়ে হতাশ হলাম। যদিও একদিন বিকেলে কাজিনরা মিলে ডিঙি নৌকাতে ঘুরেছিলাম। কিন্তু, পান্তায় কি আর ক্ষীরের সাধ মেটে? নেটে কত পড়লাম, কত আশা করলাম: এবার নৌকাবাইচ হলে আমার প্ল্যানাকে কাজে লাগাবো। এখন সে সবে গুড়েবালি। :(
ছন্দে ছন্দে শোক, না হয় একটু হোক....
বর্ষাতে চৌত্রের রোদ, কোথা নাই জল,
কৃষকের ভরসা তাই নলকূপের নল।
সবারই মাথায় হাত, জেলেরা হতাশ,
মিটলো না হায় মোর নৌভ্রমনের আশ।
ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ নাহি আর হলো,
মনের কথা তাই মনেতেই রলো।



আইডিয়াগুলো লিখে রাখলাম। পরে সময়মত কাজে লাগানো যাবে....
নৌকাবাইচ সংক্রান্ত টিপসঃ

টিপসের আগে একটু ভেবে দেখি গতবার কেন আমরা জিততে পারিনি।
কেন জিতিনি?
- কারণ, অন্যরা আমাদের চেয়ে এগিয়ে ছিল।
কেন?
- ওরা দ্রুত বৈঠা চালাচ্ছিল।
আমরা দ্রুত পারিনি কেন?
- আমাদের বেশীর ভাগ ছিল খোদার খাসি। মানে দেখতে হিরো কাজে জিরো। তাই, নৌ-দৌড় শুরুর কয়েক মিনিট পরে অনেকেই হাঁপিয়ে গিয়েছিল।(পাঁচ মিনিট জোরে দৌড় দিয়ে দেখুন। মুখটা কেমন হা হয়ে যায়!!)
- ছন্দ হারিয়ে এলোমেলো বৈঠা চালাচ্ছিল। (অনেকটা প্রথম ছবির মত)
- অভিজ্ঞতার অভাব ছিল।


নৌকা বাইচে আমার কিছু প্রস্তাবনাঃ
১. দল গঠনে তরুন ও যুবকদের(২০-৩৫ বছর) আগে রাখতে হবে। দলে থাকবে গ্রামের পরিশ্রমী, কর্মঠ লোকগুলো। জেলে ও মাঝিরা অগ্রাধিকার পাবে। কোন রকম স্বজন প্রীতি চলবে না। (আমার মত ম্যাওপ্যাওরা বাদ)

২. ধীরস্থির, বুদ্ধিমান ও বিচক্ষণ লোক নৌকার হাল ধরবে।(বয়স্ক(৩৫-৪৫) ও অভিজ্ঞ মাঝি।)
৩. নৌকা বাইচে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, দুপাশের সবাই একসাথে বৈঠা চালানো। সেটা হবে একটা ঐকতানে। মানে একই তালে, একই ছন্দে। (অন্যথায় নৌকা একদিকে চলে যাবে/গতি কমে যাবে।)

৪. এই ছন্দের জন্য বাদ্য-বাজনা টনিকের কাজ করে। বাদ্য হিসেবে ড্রাম জাতীয় কিছু ব্যবহার করাই ভাল। (কুচকাওয়াজে যে কারণে এটা ব্যবহার করা হয়।)
- দক্ষ কেউ নৌকার সামনে থেকে বাদ্য বাজাবে(বসে থেকে, পেছনের দিকে মুখ করে) এবং সেটার তালে তালে বৈঠা চলবে। (অনেকটা ২য় ছবির মত)
- ১ম ছবির মত ঘন্টাও ব্যবহার করা যায়। তবে নৌকা দ্রুত চলায় দাঁড়িয়ে থেকে বাজাতে সমস্যা হয়, পড়ে যাবার ভয় থাকে, আবার শব্দটাও খুব একটা ভালোলাগে না।(আমাদের অবচেতন মনে একটা ধারণা আছে; ঘন্টা বাজলে ছুটি। মানে কাজ বাদ দিয়ে ঢিলেমী শুরু। ফলাফল, দৌড়ে পিছিয়ে পড়া।[এটাকে কিন্তু হাইপো থিসিস, অবজ্ঞা করবেন না।])

৫. নৌকার সামনের অংশটা পেছনের দিক হতে উঁচু রাখতে হবে। মানে, মাঝখান থেকে সামনের অংশে যত লোক থাকবে, পেছনের অংশে তার চেয়ে বেশী লোক থাকবেই। বিজ্ঞানের ছাত্রদের লন রোলারের কথা নিশ্চয় মনে আছে। (৩য় চিত্রের কথা আলাদা)
৬. বাইচ খেলা ডানহাতি বামহাতিদের একসাথে কাজে লাগানের দারুন জায়গা। নৌকার ডানপার্শে থাকবে ডানহাতিরা, বামপার্শে থাকবে বামহাতিরা। এতে ইফিসিয়েন্সি বাড়বে।
বামহাতিদের সাধারণত কম পাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে-
- বামপার্শে দু-একজন বেশী রাখা যায়।(যদি প্রয়োজন হয়!)
- বাইচের যায়গাটায় নদী/বিল/হাওড়/বাওড় যদি বাম দিকে মোড় নেয়, তবে বামপাশ থেকে দৌড় শুরু করলে সুবিধা পাওয়া যাবে।

৭. সবার পোষাক এক কালারের(জার্সি/গেঞ্জি ও হাফপ্যান্ট) হলে ভালো হয়।
৮. নৌকায় মেয়ে মানুষ না নেয়াই ভালো। তবে খেলা দেখতে ও উৎসাহ দিতে তারা অবস্যই পাড়ে থাকবে।
৯. বাদ্য, মানে স্পেশাল কোন গান হবে? বা কোনটা হবে? বা হবে না, সেটা এলাকা ভিত্তক ঐতিহ্যে ঠিক হবে।
১০. আপনাদের কোন নতুন আইডিয়া??

৯. নৌকার আকার ও গঠনঃ
এটা বাইচের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যেটাকে কোন মতেই হেলা করা যাবে না। বাইচের নৌকার প্রস্থের চেয়ে দৌর্ঘ বেশী থাকে।
তবে সত্যি বলতে কি, এই বিষয়ে আমার ধারণা কম। আরেকটু পড়াশোনা করতে হবে।(চিত্রঃ ৩, বাইচে ব্যবহৃত কেরালার ঐতিহ্যবাহী নৌকা। আমাদের বাইচে এই নৌকাটাকে আমি আগেই বাদ দিব। কেন বলুন তো?)


চলুন, কিছু নৌকা দেখে নেই...


সামুদ্রিক নৌকা। সমুদ্রের ঢেউ থেকে রক্ষার জন্য এই নৌকাগুলোর দুদিক উঁচু করা হয়। তারপরও আমার ভয় করে। সমুদ্রের অমন বড় বড় ঢেউয়ে কীভাবে যে এসব ভেসে থাকে! সত্যি, এতে চড়তে কলিজা লাগে।

নৌকা মার্কা পোস্টে অনেক জ্ঞানের কথা হল। এবার আমার পছন্দের একটা গান দিয়ে শেষ করি: (দৌড় শুরুর আগে গানবাজনা করে নিজেদের চাঙ্গা হয়ে নেবেন);)
আমরা ক'জন নবীন মাঝি
হাল ধরেছি শক্ত করে রে,
তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দেব রে...




বি. দ্র.:
এলাকার নাম জানিতে চাহিয়া লজ্জা দেবেন না।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৩২
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

দুলে উঠে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৬

দুলে উঠে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

মন খুশিতে দুলে দুলে ‍উঠে
যখনই শুনতে পাই ঈদ শীঘ্রই
আসছে সুখকর করতে দিন, মুহূর্ত
তা প্রায় সবাকে করে আনন্দিত!
নতুন রঙিন পোশাক আনে কিনে
তখন ঐশী বাণী সবাই শুনে।
যদি কারো মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তরে নিয়ে এ ভাবনা

লিখেছেন মৌন পাঠক, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩০

তরে নিয়ে এ ভাবনা,
এর শুরু ঠিক আজ না

সেই কৈশোরে পা দেয়ার দিন
যখন পুরো দুনিয়া রঙীন
দিকে দিকে ফোটে ফুল বসন্ত বিহীন
চেনা সব মানুষগুলো, হয়ে ওঠে অচিন
জীবনের আবর্তে, জীবন নবীন

তোকে দেখেছিলাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×