বেশ কয়েকদিন আগে চাঁদগাজী তার এক পোস্টে এমপিদের সংসদে কি কাজ এটা জানতে চেয়েছেন ব্লগারদের কাছে। ঐ পোস্ট আমি পড়েছি কিন্তু মন্তব্য করিনি। আমিও দেখতে চেয়েছি ব্লগাররা কে কি বলেন। বেশির ভাগই কোন যুতসই উত্তর দিতে পারেনি। চাঁদগাজীর এই প্রশ্নটি আমি আমার ফেসবুকেও দিয়েছি এবং জানতে চেয়েছি আমাদের সংসদ সদস্যদের সংসদে মূল কাজ কি এবং দেখেছি কেউই সঠিক উত্তর পুরোপুরিভাবে দিতে পারেনি। অনেকে এমন উত্তর দিয়েছে যা প্রশ্নের সাথে মোটেও প্রাসঙ্গিক ছিলো না এবং বেশিরভাগ উত্তর ছিলো গতানুগতিক।
দেশে নির্বাচন হয় আমরা সকালবেলা চোখ কচলাতে কচলাতে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়ে আসি কিন্তু যাকে ভোট দিয়েছি সে আমার জন্য কি কাজ করবে, কি করতে পারবে না এগুলি জানিনা খুবই হাস্যকর! আসলে এমন অজ্ঞতা থাকলে আমাদের রাজনীতিবিদদের সুবিধা হয় তারা তাদের কথার ফুলঝুড়ি আর প্রতিশ্রুতি দিয়ে মানুষকে ভুল স্বপ্ন দেখাতে পারে। মানুষ সেগুলি বিশ্বাস করে তাকে ভোট দিয়ে আসে।
বাংলাদেশসহ ধনতান্ত্রিক দরিদ্র দেশগুলোর সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে জনগণের বৃহৎ অংশের রাজনীতির বিষয়ে অজ্ঞতা বা অস্পষ্টতা। অশিক্ষিত বা অর্ধশিক্ষিত এমনকি শিক্ষিত শ্রেণির অনেকেই ভোট কেন দিচ্ছে সেটার সঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারে না। ৭৫ এর পর আমাদের নির্বাচন গুলির দিকে তাকালে দেখা যাবে বলা হচ্ছে মানুষ উৎসবমুখর নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। নির্বাচন কি উৎসবের বিষয়? এটা কি মজা মাস্তির ব্যাপার? ভাসানী, ফজলুল হক, শেখ মজিব নির্বাচন নিয়ে ভাষণ দিতে গিয়ে কখনো বলেননি উৎসবমুখর নির্বাচন। আইয়ুব খান, ইয়াহিয়াও বলেনি। উৎসবমুখর নির্বাচন কথাটি চালু করেছে জাতীয় ইডিয়েট এরশাদ। খালেদা জিয়া, শেখ হাসিনা এই ইডিয়েটের কথাটিকে বেশ পছন্দ করে সেটা চালু রেখেছে আজ অবধি।
প্রকৃত অর্থে নির্বাচন হচ্ছে সমাজে ন্যায় ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণ মেধা প্রয়োগের মাধ্যমে সংসদে তাদের প্রতিনিধি নিয়োগ করা। এটা কোনো উৎসব নয়, বরং রাজনৈতিক মতাদর্শের লড়াইয়ে মানুষ তার সঠিক প্রতিনিধি বেছে নেওয়া। আমাদের রাজনীতিবিদরা এটার আগে উৎসবমুখর শব্দটি লাগিয়ে এর গুরুত্বকে মানুষের কাছে হালকা করে দিয়েছে!
তবে হ্যাঁ কিছু মানুষের কাছে নির্বাচন একটা উৎসব। তারা নির্বাচনের পর নির্বাচিত হয়ে নিজের সম্পদ ও ক্ষমতাকে দশগুন থেকে একশগুন বাড়িয়ে নিবে। নির্বাচন তাদের কাছে শুধু উৎসব নয় উৎসবের চেয়েও বেশি কিছু!
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:২৮