রোহিঙ্গাদের নিয়ে কম জল ঘোলা হচ্ছে না, জল ঘোলা হতে হতে কাঁদামাটি হয়ে যাচ্ছে। তবুও এর সমাধান হচ্ছে না। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান করতে আসলে কেউই আগ্রহী না। চীন চাইলে সমাধান দ্রুত করতে পারে বাকিরা ভরসা দিচ্ছে, ভাব দেখাচ্ছে তারা চাইলে এই সমস্যা সমাধান করে দিতে পারে। আসলে চীন ছাড়া এই সমস্যা সমাধান অন্যদের পক্ষে করা প্রায় অসম্ভব। চীন বাংলাদেশের বাজারের যে বিশাল অর্থনৈতিক বাজার তৈরি করেছে এর পুরোপুরি লাভ উঠানো পর্যন্ত এই মুলা ঝুলিয়ে রাখতে চাইবে।
যাইহোক মূল প্রসঙ্গ এটা না, প্রসঙ্গ হচ্ছে ভাসানচরে ১লক্ষ রোহিঙ্গাদের জন্য বাড়িঘর তৈরি করা হয়েছে। এইসব বাড়িঘরের ছবি, ভিডিও দেখেছি, সেনাবাহিনীর কাজ, খারাপ করেনি। তারপরেও ঐটা একটা দ্বীপের মত, সেখানে আসা যাওয়া খুব কঠিন ব্যাপার। রোহিঙ্গারা সেখানে ঢুকলে বাহির হতে তাদের অনেক কষ্ট করতে হবে। তারা আতঙ্কিত অবস্থায় দিন কাটাবে। কোন জরুরি প্রয়োজনে তারা বাহিরের মানুষ জনদের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেনা। খাদ্য সহায়তা ডিলে হলে তারা অভুক্ত থাকতে পারে। বলা যায় বিশাল এক বন্ধিশালা ভাসানচর। এগুলোই হয়তো তাদের সেখানে থাকতে উৎসাহ দিচ্ছে না। বাংলাদেশ জোর জবরদস্তিও খুব একটা করতে পারবে না কারন দাতাদের ডলারে বানানো এই আবাসিক প্রজেক্ট।
এক লক্ষ রোহিঙ্গার জন্য এমন থাকার ব্যবস্থা এত অল্প সময়ের মধ্যে করে ফেলেছে অথচ নিজ দেশের রাজধানীতে থাকার মত জায়গা নেই ১০ লক্ষ মানুষের। চাইলে এদের জন্য সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে সুন্দর আবাসনের ব্যবস্থা করা যেত নিঃসন্দেহে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী আর রাষ্ট্রপতি মিলে প্ল্যান করলে সেটা বাস্তবায়ন হবে না এটা বিশ্বাস করা কঠিন। স্বাধনীতার পর থেকে আমাদের প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি নিজেদের মাথার উপর পাকা ছাদ দেখে এসেছেন, তারা হয়তো বুঝে না মাথার উপর ছাদ না থাকলে একজন বৃদ্ধের কেমন লাগে, একটা টোকাই কিভাবে টুকরিতে ঘুমায়! একটা কিশোরী টোকাই কি বীভৎস ভাবে প্রতিটি রাত অতিবাহিত করে। তারপরেও শেখ হাসিনা ঢাকা শহরে অনেক গুলো ফ্লাইওভার বানিয়েছে সেটার নিচে অনেকের থাকার ব্যবস্থা হয়েছে, উনি হয়তো ভাবছেন আরো কয়েকটা ফ্লাইওভার বানিয়ে দিলে এই সমস্যা সমাধান হয়ে যাওয়ার কথা। আর বেগম জিয়াকে কাতরি দিনার দেওয়া হয়েছিল এতিমদের জন্য ঘর বানাতে, উনি মনে করেছিলেন এতিমদের জন্য শফি হুজুর, জামাত তো আছেই তাদের আবার কিসের ঘরের দরকার! উনার চ্যালা চামুন্ডারা নাকি ইডিয়েটের মত সে টাকা ব্যাংকে ডিপোজিট করে রেখেছে!
তবে সত্য কথা হচ্ছে, আমাদের আমলারা সবচাইতে বেশি জানে এই কষ্টের কথা, কিন্তু তারা সবসময় বলে এসেছে, মুজীব ভাই জানে, স্যারে জানে, ম্যাডাম জানে, আপায় জানে। আর এই জানতে জানতে ৪৯ বছর চলে যাচ্ছে, জানার শেষ হচ্ছে না!
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ৮:৪৭