চরমনাই হুজুর নাকি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যকে মূর্তি বলেছে এবং আরো হুঁশিয়ারি দিয়েছে এইসব মূর্তি যদি না সরিয়ে ফেলা হয় এগুলি নিয়ে বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেওয়া হবে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নিকট ভবিষ্যতে সম্ভবত এই ধরনের উদ্ধত কথাবার্তা কেউ বলেনি। শেখ হাসিনা এটা কিভাবে সহ্য করছে কে জানে! চরমোনাই হুজুর বঙ্গবন্ধুকে নাকি কোনদিন বঙ্গবন্ধু বলেনি, শেখ হাসিনাকে শেখের বেটি বলেন। তা সে বলতেই পারে। শেখ মুজিবুর রহমানকে বঙ্গবন্ধু বলতেই হবে এমন কোন কথা নেই কিন্তু শেখ মুজিবের ভাস্কর্যকে মূর্তি বলে সেটাকে বুড়িগঙ্গায় ফেলে দিতে হবে এমন কথা কিভাবে হুজুর বলতে পারে। যাইহোক সে বলে ফেলেছে এবং আওয়ামীলীগ থেকে বড় ধরনের প্রতিবাদ এই কথার বিপক্ষে আসেনি। আজকে সম্ভবত তথ্যমন্ত্রী বলেছেন জনগণ এর জবাব দিবে। উনারা সব বান্দর পালবেন, মাথার উপর উঠাবেন এবং যখন এগুলি উনাদের বিপক্ষে কথা বলছে এখন সেগুলোর জবাব নাকি জনগণ দিবে!
যাইহোক এর জবাব আসলে জনগণ ও আওয়ামীলীগেরই দেওয়ার কথা। কিন্তু উনারা দেশের এমন পরিস্থিতি করে রেখেছে এর জবাব সাধারণ জনগণের পক্ষে দেওয়া খুব সহজ নয়। নির্বাচনের সময় উনাদের কাছে দোয়া নিতে যায়, কওমি জননী উপাধি নিতে যায় তখন এসব কিছু মনে রাখেনি। এখন সাধারণ মানুষ নাকি শেখ মুজিবের অপমানের জবাব দিবে। শেখ মুজিবের নাম এত বেশি পরিমাণ কাজে-অকাজে ব্যবহার হয়েছে, মানুষ এখন এসবের প্রতিবাদ করার আগ্রহ পাচ্ছে না। বঙ্গবন্ধুর প্রতি মানুষের যে ভালোবাসা ছিল সে ভালোবাসা কি কমেছে না বেড়েছে? অবশ্য অনেকেরই বঙ্গবন্ধুর নামের প্রতি ভালোবাসা বেড়েছে, এই নামটি তাদেরকে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হতে সাহায্য করেছে।
আজ চরমোনাই ও হেফাজতে ইসলামের যে উদ্ধত আচরণ, কথাবার্তা এগুলোর জন্য কারা দায়ী? এরা পিছিয়ে পড়া জাতির সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া অংশ, এদের উদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করার সাহস দিয়েছে এই আওয়ামীলীগই! ক্ষমতাকে আঁকড়ে ধরার জন্য এদের সাথে নোংরা কম্প্রোমাইজ করেছে আওমীলীগ। মাদ্রাসার ছাত্রদেরকে মেইনস্ট্রিমের সাথে চলার মত যোগ্য করে গড়ে তোলেনি কোন সরকারই। যার জন্য চরমনাই, শফি হুজুর,বাবু নগরী এদের দায়িত্ব নিয়েছে। এরা এদের নেতাকে মান্য করে, নেতা যাই বলে এদের কাছে সঠিক।
আসলে যে আপনাকে দুবেলা খাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয় তার ভুল ধরার মত নিমখহারাম আপনি হবেন না। এই বিশাল জনবলের সমর্থন নিয়ে যেকেউ যেকোন কিছু বলার সাহস পাবে।
দেশের সম্পদকে সঠিকভাবে কাজে লাগালে, আমলারা দুর্নীতি না করলে জাতির এই বিশাল অংশ পিছিয়ে থাকতো না। এদের পিছিয়ে থাকার দায় শেখ মুজিব, তাজউদ্দীন আহমেদ, মেজর সাহেব, জেনারেল এরশাদ, বেগম জিয়া, এবং শেখ হাসিনা সবাইকেই নিতে হবে। এই দায় থেকে মুক্তি নেওয়ার পরিবর্তে তাদেরকে আরো পিছিয়ে দিয়ে পক্ষান্তরে জাতিকেই পিছনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আগেও বলেছি ট্রেন মোটামুটি কাবুলে চলে আসছে, যাত্রীরা নেমেও পড়ছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১২:১৪