ঢাকা শহরকে বলা হয় মসজিদের নগরী আবার একই সাথে ঢাকা শহর পৃথিবীর সবচেয়ে নোংরা শহর! এই নোংরা শহরে সবচেয়ে বেশি মসজিদ গড়ে উঠেছে? নাকি মসজিদের শহর নোংরা হয়ে গেছে? না আমি এই দুইটার কোনটার সাথে কোনটা রিলেট করতে চাচ্ছি না। তবে এটা ঠিক এই নোংরা শহরের সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন জায়গা হল মসজিদ। মসজিদের ভিতরে সর্বদাই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে। মসজিদকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কে রাখে? আমরা রাখি! আবার মসজিদের বাইরে অপরিষ্কার নোংরা কে করে? আমরাই করি। মসজিদ পরিষ্কার রাখলে সওয়াব পাওয়া যায়, আর রাস্তাঘাট পরিষ্কার রাখলে কি সওয়াব পাওয়া যায় না?
পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা হলো ঈমানের অঙ্গ। এই ঈমান মসজিদের ভিতরে ঠিক থাকে বাসা বাড়িতেও মোটামুটি ঠিক থাকে, রাস্তায় আসলে এই ঈমানের অঙ্গহানি হয়ে যায় কেনো? রাস্তায় পয়ঃনিষ্কাশনের কাজ করার সময় ঈমান ঠিক থাকেনা কেনো? ড্রেনেজ, ডাস্টবিন এসবের কাজে যে বরাদ্দ হয় সেগুলো থেকে সরিয়ে নিজের পকেটে নেওয়ার সময় ঈমান ঠিক থাকেনা কেনো! আমি অনেক কোটিপতি দেখেছি, বিসিএস ক্যাডার দেখেছি যারা নিজ হাতে মসজিদ ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার করে কিন্তু রাস্তায় নেমে রাস্তার মাঝে থুথু, সিগারেটের খোসা ফেলে! পরিষ্কারের ব্যাপারটা এরা মসজিদের ভিতরে সীমাবদ্ধ রেখেছে।
আসলে আপনি চাইলেও ঢাকা শহর, করাচি শহর, কাবুল শহরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে পারবেন না। এসব শহরের বেশিরভাগ মানুষ ধর্ম কর্ম করে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ঈমানের অঙ্গ এই কথাটিও জানে। এরা ধর্মের জন্য মসজিদে গিয়ে ইবাদত বন্দেগী করবে কিন্তু ধর্মের ভালো ভালো উপদেশ গুলি পালন করতে চাইবেনা। যেসব উপদেশগুলি পালন করতে অর্থ খরচ হয়, দুর্নীতি করা যায়না, ঘুষ নেওয়া যায়না, সৎ হতে হয়, বিবেক বুদ্ধি খাটাতে হয় সেগুলি তারা করতে চাইবে না। আমাদের নবীর অপমানে আমাদের অনুভূতিতে মারাত্মকভাবে আঘাত করে কিন্তু ঘুষ-দুর্নীতি নিজের শহর নোংরা করা আমাদের অনুভূতিতে আঘাত হয় না। অথচ এই আঘাতটা আমাদের জন্য সবচেয়ে দরকারি ছিল।
মানুষের যদি আর্থিক সামর্থ্য আসে তাহলে ঢাকা শহর, করাচি শহর, কাবুল শহর একরাতে অর্ধেক খালি হয়ে যাবে। এই নোংরা শহরগুলিতে ধর্ম-কর্ম বেশি হয় কিন্তু মানুষের সতেজ নিঃস্বাস নেওয়ার জন্য কোনো কাজ হয়না। ঘুষ, দুর্নীতি, ধাপ্পাবাজি, ভেজাল এই শব্দগুলি এই শহর গুলির নামের সাথে মিলে একাকার হয়ে গেছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুলাই, ২০২১ দুপুর ১:১৪