দেশে ১৪দিনের কঠোর লকডাউন চলছে। গতবারের লকডাউনের চেয়ে এবারের লকডাউনে পুলিশ কঠোর অবস্থানে আছে। রাস্তায় সেনাবাহিনী, বিজিবিও আছে। মানুষকে লকডাউন অমান্য করতে দেখলে জরিমানা করা হচ্ছে আবার জেলেও পুরো দেওয়া হচ্ছে অনেককে। যাদের জরিমানা করা হচ্ছে তাদের বেশিরভাগের কাছেই সেই পরিমান জরিমানার অর্থ পাওয়া যাচ্ছে না।
গতকাল তো ঢাকার জর্জ কোর্টে এটা নিয়ে সেই তুলকালাম! থানা থেকে কোর্টে আনার পর কিছু কালা কাউয়া(উকিল) আসামিদের কাছে এসে তাদের জামিন করিয়ে দিবেন এমন কন্ট্রাক্ট করা শুরু করে ৫/১০ হাজারে। যাদের সামর্থ্য ছিল তাদের মধ্যে অনেকেই কন্ট্রাক্ট করে ফেলেছে। পরে দ্রুত কোর্টের থেকে আসামি ও তাদের আত্মীয়দের উদ্দেশ্য মাইকে এলাউন্স করতে থাকে, “আপনারা কেউ কোনো আসামির জন্য জামিনের কন্ট্রাক্ট করবেন না। যাদের ধরে আনা হয়েছে তাদের সাম্যান কিছু জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হবে।” যাদের কাছে টাকা নেই তাদেরও চিন্তিত না হওয়ার জন্য বলা হয়েছে। তাদের জরিমানার টাকা নাকি কোন এক সংস্থা বহন করবে।
যাক এই হলো আমাদের অবস্থা! সরকার লকডাউন দেওয়ার দরকার মনে করেছে তাই লকডাউন দিয়েছে। কিন্তু এর জন্য কোনো পূর্ব প্রস্তুতি নেই, মানুষ কিভাবে জীবিকা নির্বাহ করবে তার কিছুই বলা নেই। ১৪দিন ঘরে বসে খাওয়ার মত কতজন বাঙ্গালীর সঞ্চয় আছে?
পরিবারে অভাব অনটন আসলে পরিবারের কর্তা সবাইকে আগলে রাখার চেষ্টা করেন। অভাব অনটন কাটানোর জন্য বিভিন্ন উপায় খোঁজেন, ভালো কোনো উপায় না পেলেও সবাইকে আশ্বস্ত করেন যে শিগ্রহী সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। এতে পরিবারের বাকি সদস্যরা আশ্বস্ত হয় এবং তাকে সাহায্য করার চেষ্টা করে।
আমাদের ২০কোটির একটি বড় পরিবার সেখানে আমাদের অভিবাবক বলতে আমাদের হামিদ সাহেব আর শেখ হাসিনা। উনারা লকডাউন দেওয়ার আগে,পরে তেমন কিছুই বলছেন না! উনাদের ভাবনা কি? মানুষের কষ্ট লাঘবে উনারা কি কি ভাবছেন কিছুই স্পষ্ট নয়! অথচ এই সময় উনাদের বেশিবেশি কথা বলার দরকার মানুষের উদ্দেশ্য। অসুখে মানুষ মারা যাচ্ছে এটা ঠিক তেমনি ক্ষিদের জ্বালায় দিন কাটাচ্ছে এমন পরিবারের সংখ্যা অনেক। প্রথমবারের লকডাউনে মানুষ বেশি কষ্ট করেনি কারন হাতে কিছু হলেও সঞ্চয় ছিল। এছাড়াও তখন ব্যক্তি পর্যায় অনেক সামর্থ্যবান লোক তার আশেপাশের অনেককে সাহায্য সহযোগিতা করেছে যেটা এবারের লকডাউনে প্রায় নেই বললেই চলে। অভাবের তাড়নায় বেশ কয়েকটি আত্মহত্যার খবর এসেছে এর পরিমাণ কিন্তু বাড়বেই!
আমাদের সরকার হয়তো ভাবছে তাদের জনগনের মাথাপিছু আয় ১৮০০ ডলার তাই এত চিন্তা করার কি আছে। ভাতের জন্য তো তারা আর সচিবালয় কিংবা বঙ্গভবনে আসছে না। তারা আপাতত ভাবছে ঈদ বোনাস বেতন কয়দিন আগে নেওয়া যায়, ছুটি কয়দিন রাখা যায় সেটা নিয়ে। মানুষের পকেটে এক পয়সাও না দিয়ে তাদেরকে ঘরে আটকে রেখে উনারা বেতন বোনাস ভাগ করবেন।
মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠছে, খুব দ্রুত কিছু ব্যবস্থা না করা হলে করোনার চেয়ে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ১০:৫৮