সারা বিশ্বে বড় ধরনের সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে এবং সামনের বছরে আরো বড়সরো বিপদ আসার সম্ভাবনা আছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী এই বিপদ সম্পর্কে আমাদেরকে আগাম সতর্ক করছেন এটা ভালো। দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতা অর্থনৈতিক মন্দা ও দুর্ভিক্ষ সম্পর্কে আগাম বুঝতে পারছেন। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে উনি আগাম বুঝে মানুষকে কি সব ভয় লাগানো কথাবার্তা বলে যাচ্ছেন। কয়েকদিন আগে বললেন দুর্ভিক্ষ হবে, তাই মানুষকে কম খেতে, চাষবাস করতে। আজকে বললেন অর্থনৈতিক মন্দার ঘনিয়ে আসছে মানুষ যেন কম খরচ করে। আপেল, কমলা, আঙ্গুর ফল যেন কম খায়, তেল ছাড়া রান্না শিখতে। এগুলো কোনো গুরুত্বপূর্ন কথা হলো? মানুষের পকেটে টাকা না থাকলে মানুষ এমনিতেই আপেল, কমলা, আঙ্গুর ফল খাওয়া ছেড়ে দিবে। এছাড়া বাংলাদেশের কতজন মানুষই বা এই ধরনের বিদেশি ফল খায়! এদের সংখ্যা খুব বেশি নয়। যারা এসব নিয়মিত খায় তারা দেশে দুর্ভিক্ষ লাগলেও এগুলি খাবে, প্রধানমন্ত্রী বললেও খাবে না বললেও খাবে।
দুর্ভিক্ষ বা অর্থনৈতিক মন্দা যাই হোক না কেন সেটার ধারণা শেখ হাসিনা দিয়েছেন। কিন্তু উনি শুধু এ ধারণা দিয়েই ক্ষান্ত রয়েছে এবং দুর্ভিক্ষ বা অর্থনৈতিক মন্দা সম্পর্কে উনি কম গুরুত্বপূর্ণ ও অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা বলছেন। এতে মানুষ ভীতসন্ত্রস্ত হওয়ার কথা। উনার আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বিস্তারিত জাতিকে জানানো দরকার। এই উদ্ভূত পরিস্থিতি আসলে তা মোকাবেলা করার জন্য উনার সরকারের কি কি প্ল্যান আছে। দেশের খাদ্য গুদামের খাদ্য মজুদের কি অবস্থা, সে সম্পর্কে ধারণা দেওয়া। জাতীয় উৎপাদন যেন হ্রাস না পায়, তারজন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দায়িত্বপ্রাপ্তদের উদ্দেশ্যে দিকনির্দেশনা মূলক কথাবার্তা বলা। দেশের রিজার্ভ ডলারের অপব্যয় যেন না হয় সে সম্পর্কে বলা। বৈধ চ্যানেলে রেমিটেন্স নিয়ে আসার জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া।
উনি সব কথার মধ্যে একটি দরকারী কথা বলেছেন, সেটা হচ্ছে যার যে পরিমাণ জমি আছে সে জমিতে চাষবাস করার কথা। কিন্তু যারা চাষবাস করে বা চাষবাস করতে জানে তাদের জমির মালিকানা খুব বেশি নেই। বড় বড় বিল্ডার্স কোম্পানিরা বিশাল পরিমাণ চাষযোগ্য জমি কিনে তার মাঝখানে সাইনবোর্ড লাগিয়ে রেখেছে। এসব সাইনবোর্ড দেখলে সাধারণ মানুষ ভয়ে এর থেকে দুই মাইল দূর দিয়ে হাটে। এসব জমিগুলোকে আপাতত খালি না রেখে চুক্তিভিত্তিক চাষ করার ব্যবস্থা উনি করতে পারেন। এটা ভালো কাজ দিতে পারে, সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে।
যাই হোক আগামী দিনগুলোতে বড় ধরনের সমস্যা আসতে যাচ্ছে আপাতত তেমনটিই মনটি মনে হচ্ছে। আমাদের সরকার প্রধান আমাদেরকে সতর্ক করছেন কিন্তু উনি যে কায়দায় সতর্ক করছেন তাতে মানুষ ভীত হচ্ছে। জানিনা উনি সতর্ক করছেন নাকি মানুষকে ভীত করার জন্যই এভাবে কথা বলছেন। আগামীতে আসন্ন এই সমস্যা মোকাবেলা করার জন্য আসলে যার যতটুকু খালি চাষযোগ্য জমি আছে তাতে চাষবাস শুরু করা। এতে যদি দুর্ভিক্ষ বা অর্থনৈতিক মন্দা নাও আসে তাহলেও নিজের জমিতে উৎপাদিত ফ্রেশ ও ভেজাল মুক্ত খাওয়ার একটা উৎস তৈরি হবে। এই ব্যাপারটাও বা কম কি। আমাদের ঘরের ছাদে দুটি মরিচ গাছ, পাঁচটি বেগুন গাছ, ছয়টি ডেরস গাছ, দুটটি করলা গাছ ও কয়েকটি পুইশাক গাছ লাগিয়েছি। এগুলোতে সবজি আসার পর থেকে মোটামুটি বাজার থেকে খুব বেশি সবজি কিনার দরকার হয়নি। গত বছর পাঁচটি টমেটো গাছ থেকে যে পরিমাণ টমেটো হয়েছে তা আমরা খেয়ে শেষ করতে পারেনি।
আমি মনে করি এই পরিমাণ শাকসবজি চাষ করার মত সবারই জায়গা আছে, শুধুমাত্র সামান্য একটু পরিশ্রম ও পরিচর্যা করলেই সম্ভব।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৪:৪৭