
বিএনপি'র সমালোচনা করলে বেশিরভাগ মানুষ সমালোচনাকারীকে আওয়ামীলীগের সমর্থক ভেবে থাকে। বিএনপি জামাতের সমালোচনা করার জন্য দালাল, টিনের চশমা, নাস্তিক, আবু জাহেল এসব শব্দ বহুবার শোনা হয়েছে। যদিও এগুলি কোনোটিই সমালোচনার জবাব নয়। এই ব্লগে চাঁদগাজীর পর আমি আওয়ামীলীগের যত সমালোচনা করেছি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও রুহুল কবির রিজভী সাহেবও এত সমালোচনা করেনি। তারা যে সমালোচনা গুলি করে স্বৈরাচারী, একনায়তন্ত্র, দুর্নীতিবাজ, ইসলামবিদ্বেষী এই শব্দগুলি ব্যবহার করে, যা সারফেস লেভেলের সমালোচনা। এই বিশেষণ গুলি দিয়ে বিস্তারিত তথ্য ভিত্তিক সমালোচনা করা সম্ভব এবং সেটাই যৌক্তিক সমালোচনা।
কিন্তু যখনই বিএনপি জামাতের সমালোচনা করা হয় তখনই কট্টর আওয়ামীলীগের সমর্থক ধরে নেওয়া হয়। আদত বিএনপি জামাতের সমালোচনা করার জন্য আওয়ামীলিগার হওয়ার দরকার নেই।
মেজর জিয়া, বেগম খালেদা ও তারেক জিয়া বিএনপি ও জামাতকে নিয়ে এদেশে যে ধরনের রাজনীতি চালু করেছে তাতে দেশের উপকারের চেয়ে ক্ষতির পরিমাণই বেশি। এই দলটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজনীতিকে ক্রমেই নিচের দিকে টেনে নামিয়েছে। নিজের দলকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য মেজর জিয়া পথভ্রষ্ট, যুদ্ধাপরাধী, দলছুট ও ব্যুরুক্রেটদের দলে ভিড়িয়ে ছিল। মেজর জিয়া ব্যক্তিগতভাবে দুর্নীতি পরায়ণ ছিলোনা তবে তারা আশেপাশের মানুষদের দুর্নীতিতে নীরব থাকতো। উনি পুঁজিবাদী অর্থনীতিকে উৎসাহ দিয়েছে এবং সাম্প্রদায়িক বীজ বপন করেছে।
বেগম জিয়া ক্ষমতায় এসে নিজের চিন্তা চেতনাকে কাজে লাগানোর মত অবস্থায় ছিল না। তাকে পুরোপরিভাবে মিলিটারি ও ব্যুরুক্রেটরা মিলে নিয়ন্ত্রণ করেছে। উনার রাজনীতি আর রাষ্ট্রপতির রাজনীতি প্রায় কাছাকাছি ছিল। লিখিত স্ক্রিপ্ট ছাড়া উনি বেশি কিছু বলতে পারতেন না। রাজনীতিতে ব্যর্থতার পাশাপাশি উনি একজন ভালো মাও হতে পারেননি।
তারেক জিয়ার বিএনপির হাল তারার পর থেকে বিএনপির অবস্থা আরো বেশি খারাপ হতে থাকে। বিএনপির চেইন অব কমান্ড বলতে গেলে পুরোপুরি ভেঙে পড়ে। তারেক জিয়া রাষ্ট্রীয় ও দলীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে বড় ধরনের দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে। তৃণমূলের কাছে তার বেশ জনপ্রিয়তা থাকলেও দলের হাই কমান্ডে তার জনপ্রিয়তা কম। তারেক জিয়া সরাসরি দেশ সেবার সুযোগ পায়নি। তবে যতটুকু পেয়েছে সেটারও সদ্ব্যবহার করেনি সে। তার জন্য তার বাবার দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে। দলের বর্তমানে যে অবস্থা তাতে মনে হয় না নিকট ভবিষ্যতে এ দলটি ক্ষমতায় আসতে পারবে।
যাইহোক বিএনপি জামাতের সমালোচনা করলেই কেউ আওয়ামীলীগের দালাল হয়ে যায় না। বিএনপি জামাত প্রতিষ্ঠার পর থেকে এত বেশি পরিমাণে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে যার জন্য না চাইলেও এদের সমালোচনা আসবেই।
তদ্রূপ আওয়ামী লীগের সমালোচনা করলেও কেউ বিএনপি-জামাত বা রাজাকার হয়ে যায় না। তবে জামাত অথবা স্বাধীনতা বিরোধী মানসিকতার মানুষ বোঝা খুবই সহজ। স্পেসিফিক তাদের দুই একটি প্রশ্ন করলে সেসব প্রশ্নের উত্তরের মাঝে যদি, কিন্তু, তবে এসব শব্দের আধিক্য দেখা যায় তাহলে তাদের চেনা যায়। যেটাকে এক সময় বলা হত লেঞ্জা ইজ ভেরি ডিফিকাল্ট টু হাইড!
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১:২৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



