ঢাকা শহরে যারা আছেন বা এখানে বাস করেন তারা নিশ্চয়ই জানেন এখানে প্রতি ৫০ থেকে ১০০ গজ পর পরই মসজিদ, মাদ্রাসা আছে। এজন্যই ঢাকা শহরকে মসজিদের নগরী বলা হয়। মুসলিম প্রদান দেশ, মসজিদের আধিক্য থাকবে এটাই স্বাভাবিক। একটা সময় আমরা শুনে আসতাম দিন যতই যাবে মানুষ ধর্ম কর্ম নামাজ রোজা এগুলি পালন করা কমিয়ে দেবে। কিন্তু আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে দেখছি অতীতের থেকেও এখনকার সময়ের মানুষেরা ধর্ম-কর্ম বিশেষ করে ধর্মের মৌলিক বিষয়গুলিকে যথাযথভাবে বেশি পালন করে। মসজিদগুলোতে গেলে এখন দেখা যায় নামাজী মানুষের সংখ্যা আগের থেকে অনেক বেশি। এছাড়াও আমাদের গ্রামের মসজিদগুলিতে এখন মুসল্লির সংখ্যা আমাদের ছোট বেলায় দেখার সময়ের চেয়েও বেশি। এটার মূল কারণ হচ্ছে ধর্মের প্রচার। এখন অনেক বেশি প্রচার মাধ্যম থাকার কারণে মানুষের কাছে ধর্মের কথাগুলি বেশি পৌঁছাচ্ছে। যার জন্য ধর্মীয় উপাসনালয় গুলিতে মানুষের উপস্থিতি আগের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পাচ্ছে।
যাই হোক আমার মূল আলোচনা সেটা নয়, আমি যেখানে থাকি অর্থাৎ আমার বাসার চারপাশেই অন্তত সাত আটটি মসজিদ আছে। দিনের বেলায় বাসায় খুব একটা থাকা হয়না বিধায় এখান থেকে আশা নামাজের আজান কানে আসে না। তবে যখন রাত্রে বেলায় কাজ করে এসে ঘুমোতে যাই তখন রাত প্রায় বারোটা, একটা বেজে যায়। আমার ঘুম খুবই ভঙ্গুর, সামান্য আওয়াজে ঘুম ভেঙ্গে যায়। এছাড়াও ঘুম হঠাৎ করে ভেঙ্গে গেলে আমার সারা শরীর ঘামতে থাকে। মোট কথা বেশ একটা অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে যাই। রাত্রে ঘুমানোর পর যখন একই সাথে সাত আটটি মসজিদ থেকে ফজরের আযান দেয় সেটা বিকট আওয়াজ হয়ে রুমে আসে। রাতের বেলায় সামান্য আওয়াজও অনেক জোরে শোনা যায়, যার জন্য এই ৫-৭ মিনিট খুবই অস্বস্তি নিয়ে কাটাতে হয়। আমার মত যাদের সমস্যা আছে কিংবা যারা অসুস্থ অথবা সদ্য জন্মজাত শিশু তাদের জন্য আসলেই এই সময়টুকু খুবই যন্ত্রণাদায়ক। আমি এও দেখেছি যারা নিয়মিত নামাজ পড়ে তারাও এ সময়টুকুতে অস্বস্তিবোধ করেন।
যাইহোক আমার একটা পরামর্শ হচ্ছে আজান দেওয়া হয় মানুষকে নামাজের দিকে আহবান করার জন্য। সেটা আপনি যে কোন একটা জায়গা থেকে শুনলেই নামাজের দিকে যাবেন। অথবা নামাজের তো নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া আছে, সে সময় দেখেও অনেকে নামাজ পড়তে যায়। এছাড়াও আমার মত অনেকেই নামাজের সময় মোবাইলে অ্যালার্ম দিয়ে রাখে। এখন আযান দেওয়ার সময় যদি সব মসজিদগুলি থেকে আজান না দিয়ে নির্দিষ্ট একটি মসজিদে আযান দেওয়া হয় তাহলেও আওয়াজ একটু কম হবে। এটা সকল ওয়াক্ত নামাজের সময় না হোক অন্তত ফজর নামাজের সময় নির্দিষ্ট একটি মসজিদ থেকে নামাজের জন্য আহ্বান করা হবে এবং সবাই যার যার নিকটস্থ মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করবে।
আমি ঠিক জানি না এটা ধর্মের সাথে কতটা যৌক্তিক হবে। যারা ধর্মের বিশেষজ্ঞ তারা হয়তো বলতে পারবে এমনটি করা সম্ভব কিনা। বেশ কিছুদিন আগে সৌদি আরবেও শুনেছি আযান দেওয়ার যে শব্দ সেটাকে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট করা শব্দের চেয়ে উচ্চস্বরে আযান যেনো না দেওয়া হয় তার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তেমন কিছু আমাদের ধর্ম মন্ত্রণালয় যদি করে তাহলে ভালো হয়।
দেখুন পোষ্টের শিরোনামে যেটা লিখেছি সেটা দেখে আমাকে ইসলাম বিদ্বেষী ভাববেন না। আমি আসলে সৃষ্টিকর্তায় পুরোপুরি বিশ্বাস করি এবং ধর্মকর্ম একেবারে শতভাগ পালন না করলেও চেষ্টা করি মৌলিক বিষয় গুলো ফলো করার।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:৩৪