
সম্প্রতি আদালতের রায়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২০২০ সালের নির্বাচন অবৈধ ঘোষিত হওয়ার পর, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের সামনে এক নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতা তৈরি হয়েছে। আদালতের রায় তাঁর পক্ষে গেলেও, এই রায়কে কেন্দ্র করে বিএনপির বিভিন্ন অংশে তৈরি হয়েছে মতপার্থক্য, বিভ্রান্তি এবং কিছু ক্ষেত্রে নেতিবাচক বার্তা।
অনেকে বলছেন, ইশরাক হোসেন ঢাকা দক্ষিণের মেয়র পদে বসতে চান, যা প্রকারান্তরে "ক্ষমতার প্রতি লোভের" ইঙ্গিত দেয়। বিশেষ করে বিএনপির কেউ কেউ সরাসরি উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের ওপর দোষ চাপাচ্ছেন, নগর ভবন ঘেরাওয়ের মতো কর্মসূচি নিচ্ছেন—যা দলটির অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা ও মতের অমিলকেই সামনে নিয়ে আসছে।
একটি বিকল্প স্ট্যাটমেন্ট কি হতে পারত?
আমার ব্যক্তিগত ভাবনায়, আদালতের রায়ের পর ইশরাক হোসেন যদি বলতেন:
“আমার পক্ষে রায় দেওয়ার জন্য আদালতকে ধন্যবাদ। আমি আপাতত মেয়র পদে বসছি না। আমি চাই, সরকার দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুক। এরপর একটি নির্বাচিত সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে, সেখানে অংশ নিয়ে জনগণের ভোটে জয়লাভ করলে তবেই দায়িত্ব গ্রহণ করবো ইনশাআল্লাহ।”
তাহলে সেটি হতো এই দেশের গতানুগতিক রাজনীতির বাহিরে হয়ে দারুন রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও নৈতিকতার পরিচয়। এটি যে শুধু সরকারের ওপর চাপ তৈরি করতো তা না, বরং সাধারণ মানুষের চোখে বিএনপিকে দেখাত আরও পরিণত, দায়িত্বশীল ও ভিন্ন ধরণের রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে।
স্পেসিফিক একজন উপদেষ্টাকে দোষারোপ, রাস্তা অবরোধ, নগর ভবন ঘেরাও, এসবের মাধ্যমে বিএনপির ভেতরকার সাংগঠনিক দুর্বলতা এবং রাজনৈতিকভাবে সমন্বয়ের অভাব আরো স্পষ্ট হয়ে উঠছে। সরকারবিরোধী অবস্থানে থাকা একটি দলের কাছ থেকে জনগণ আশা করে একটি আদর্শিক ও নৈতিক নেতৃত্ব—যা দুর্নীতিগ্রস্ত বা আগ্রাসী শাসনের বিকল্প হিসেবে নিজেদের উপস্থাপন করতে পারবে।
কিন্তু যখনই ক্ষমতা পাওয়ার সুযোগ আসে, এবং সেটিকে ঘিরে নেতৃত্বের মধ্যেই বিভ্রান্তি, দোষারোপ, অভ্যন্তরীণ কোন্দল দেখা দেয়—তখন সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন জাগে: এই দল কি সত্যিই প্রস্তুত শাসনের জন্য?
বিএনপির সামনে দুই পথ:
১. নৈতিক অবস্থান ও সংযমের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা গড়া।
২. তাৎক্ষণিক ক্ষমতা ও বিভাজনের রাজনীতি চালিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে নিজেদের আস্থাহীন দল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।
তবে বিএনপি বরাবরই দ্বিতীয় অপশনের রাজনীতিই করে আসছে গত ১৬বছর, যার জন্যই তারা ক্ষমতার স্বাধ নিতে পারছে না!
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মে, ২০২৫ রাত ১:১৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



