
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি প্রশ্ন বারবার ঘুরেফিরে আসছে—বিএনপি আসলে নির্বাচন চায় কার কাছে? সম্প্রতি নানা বক্তব্যে বোঝা যাচ্ছে, দলটি যেন নির্বাচন চাচ্ছে ড. ইউনুসের (অর্থাৎ প্রধান উপদেষ্টার) কাছে। কিন্তু এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ভুলে গেলে চলবে না—নির্বাচন আয়োজন করে নির্বাচন কমিশন, কোনো ব্যক্তি বা দলের ইচ্ছায় নয়।
গত কয়েকটি জাতীয় নির্বাচন আমাদের দেখিয়েছে, নির্বাচন কমিশন নামমাত্র থেকে গেছে, আর কার্যত নির্বাচন পরিচালনা করেছে সরকার দলীয় শক্তি। যার কারণে নির্বাচনগুলোর নিরপেক্ষতা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সন্দেহ থেকেই গেছে। এই বাস্তবতায়, বিএনপির উচিত ছিল নির্বাচন কমিশনের উপর আস্থা রেখে সেখানেই দাবি জোরদার করা, যাতে কমিশন তার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারে।
কিন্তু হতাশার বিষয় হলো, বিএনপি এখন নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে সেই ব্যক্তির (ড. ইউনুস) কাছে, যিনি নিজেই একটি দিন বেশি ক্ষমতায় থাকার আকাঙ্ক্ষা লালন করছেন। এমন একজনের কাছে নিরপেক্ষ নির্বাচনের আশা করাটাই অবান্তর। তার সাম্প্রতিক বিদেশ সফরগুলোতেও দেখা গেছে, তিনি কৌশলে বিএনপিকে দায়ী করে আন্তর্জাতিক মহলের কাছে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নিজের অবস্থান পোক্ত করার চেষ্টা করছেন।
এই ধারা অব্যাহত থাকলে খুব শিগগিরই হয়তো আমরা শুনব, তিনি সরাসরি বিএনপির সিনিয়র নেতাদের, এমনকি তারেক রহমানের নাম ধরে সমালোচনায় নেমেছেন। এমন অবস্থায় বিএনপির রাজনৈতিক ভিত্তি আরও দুর্বল হয়ে পড়বে, কারণ নেতৃত্ব নিয়ে যখন বিভ্রান্তিকর বার্তা দিবে ড. ইউনুসের মত ব্যক্তি তখন কর্মী ও সমর্থকের মনোবল ভেঙে যেতে পারে।
নির্বাচন একটি সাংবিধানিক প্রক্রিয়া। এটি কোনো রাজনৈতিক উপহাসের বিষয় নয়। তাই বিএনপির উচিত হবে ব্যক্তিবিশেষের কাছে নির্বাচন চাওয়া বন্ধ করে সরাসরি নির্বাচন কমিশনের ওপর চাপ সৃষ্টি করা, যাতে তারা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে বাধ্য হয়। অন্যথায়, একের পর এক ভুল কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে বিএনপি নিজেই নিজের অস্তিত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলবে।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মে, ২০২৫ দুপুর ১২:২১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



