somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নূর আলম হিরণ
ভাগ্যক্রমে আমি এই সুন্দর গ্রহের এক বাসিন্দা! তবে মাঝেমধ্যে নিজেকে এলিয়েন মনে হয়। তবে বুদ্ধিমান এলিয়েন না, কোন আজব গ্রহের বোকা এলিয়েন! [email protected]

এই মুহূর্তে বিশ্বে একটি নিয়ম তান্ত্রিক সামরিক অভিযান চলছে!

২২ শে জুন, ২০২৫ বিকাল ৪:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


গত এক সপ্তাহের ঘটনাপ্রবাহ যেন মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতে নতুন মোড় এনে দিয়েছে।
প্রথমে ট্রাম্পের Unconditional Surrender Declaration,
তারপর পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের সাথে একটি ‘আলোচিত’ লাঞ্চ,
পরদিনই আয়াতুল্লাহ খামেনির যুদ্ধকালীন ক্ষমতা হস্তান্তর ঘোষণা এবং সবশেষে, সরাসরি ইরানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হামলা!

বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তোলা এই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠেছে, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ কি সত্যিই লেগে যাচ্ছে?

আমার সংক্ষিপ্ত উত্তর: না, একদমই না।

এই মুহূর্তে ইরান আন্তর্জাতিকভাবে একঘরে।
যারা মিডিয়ার শিরোনামে ইরানের "বন্ধু" হিসেবে উপস্থিত থেকে সেই চীন, রাশিয়া, তুরস্ক, কিম জং উনের উত্তর কোরিয়া কিংবা পাকিস্তান— তারা বাস্তবতায় কেবল বাংলাদেশি মিডিয়ার কল্পনার চরিত্র মাত্র। আমাদের মিডিয়াগুলি এ দেশগুলিকে ইরানের মিত্র কিংবা মুসলমানদের মৃত্যু হিসেবে এমন ভাবে উপস্থাপন করে মনে হচ্ছে ইরানের কিছু হলেই এরা তৎক্ষণাৎ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বে! মূলত আসাদ সরকারের পতনের পর ইরানের রেজিম চেঞ্জ শুধু সময়ের ব্যাপার ছিল মাত্র। সিরিয়ার আসাদ সরকার ইরানের একমাত্র কার্যকর মিত্র ছিল মধ্যপ্রাচ্যে। তার পতনের পরই ইরান একপ্রকার মিত্রশূন্য হয়ে পড়েছে। বাকি যারা তাকে সমর্থন দিতো সেগুলো সবই কন্ডিশনাল ছিল।
এই বাস্তবতা আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক পরিসরে সবারই জানা, বাংলাদেশি মিডিয়া ছাড়া।
এ কারণেই আসাদ সরকারের পতনের পর থেকেই ধীরে ধীরে ইরানে হুমকি ও হামলার ধারা শুরু হয়। আজ তা সরাসরি মার্কিন হামলা পর্যন্ত পৌঁছেছে।

সবচেয়ে বড় ধাক্কা এসেছে পাকিস্তানের দিক থেকে। যুদ্ধকালীন সময়েই যুক্তরাষ্ট্রকে সামরিক ঘাঁটি ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে ইসলামাবাদ।
এটি শুধুই সামরিক সমর্থন নয়, এটি মুসলিম বিশ্বের মধ্যে যে ঐক্যের কথা বলা হয় সে ঐক্যহীনতার নগ্ন বাস্তবতা তুলে ধরে।
ইরান, শিয়া নেতৃত্বাধীন একটি শক্তি— আর পাকিস্তান, সুন্নি প্রভাবিত।
এই মতবিভেদ বহু পুরনো, এবং এখন তা যুদ্ধক্ষেত্রেও প্রতিফলিত হচ্ছে।

যাইহোক বিশ্বযুদ্ধ হওয়ার জন্য চাই দুই বা ততোধিক পরাশক্তির মুখোমুখি সংঘর্ষ।
এই মুহূর্তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইলের পক্ষে এককভাবে ফ্রন্টলাইন নিচ্ছে।
কিন্তু ইরানের পাশে দাঁড়ানোর মতো পরাশক্তির কোন রাষ্ট্র এখনো সামনে এসে যুদ্ধের ঘোষণা দেয়নি।

চীন – ইরানের সাথে অর্থনৈতিকভাবে বেশি জড়িত, সামরিকভাবে নয়।
রাশিয়া – ইউক্রেন যুদ্ধেই হিমশিম খাচ্ছে, যতই পাশে থাকুক বলুক পাশে থাকার অবস্থায় নেই।
তুরস্ক – নিজের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নিয়েই ব্যস্ত, এবং বিবৃতি দেওয়া পর্যন্তই তার কাজ।
উত্তর কোরিয়া – বক্তৃতা ছাড়া বাস্তবে কিছু করে না।
পাকিস্তান – মার্কিন ঘাঁটির অনুমতি দিয়ে তো আমেরিকা ইসরাইল শিবিরে যোগ দিয়েছে।

শিরোনামে যেমনটি বলেছিলাম বর্তমানে আমরা একটি নিয়ন্ত্রিত সামরিক অভিযানের প্রত্যক্ষদর্শী— যেটি পূর্ব পরিকল্পিত, কৌশলগত এবং বলতে গেলে একমুখী।
ইরান যেহেতু কূটনৈতিকভাবে একঘরে, তাই এই হামলা বিশ্বযুদ্ধের রূপ ধারণ করবে— এমন ধারণা আপাতত সঠিক মনে হচ্ছে না। উপরন্তু ইরানের জন্য বিশ্বযুদ্ধ বাদিয়ে দেওয়ার মত মিত্র এই মহুর্তে ইরানের নেই।
তারপরেও প্রশ্ন থেকে যায়, এই ‘নিয়ন্ত্রিত আগুন’ কি ছড়িয়ে পড়বে অন্য কোথাও?
আমরা কি নতুন একটি ‘মধ্যপ্রাচ্য পুনর্বিন্যাস’ দেখতে যাচ্ছি? সম্ভবত, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুন, ২০২৫ বিকাল ৪:১৯
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×