somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসলাম ধর্মে একাধিক (চারের অধিক নয়) বিয়ের যৌক্তিকতা

১৫ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু। ‘তোমরা বিবাহ করবে নারীদের মধ্যে যাকে তোমার ভালো লাগে—দুই, তিন অথবা চার। আর যদি আশঙ্কা করো যে সুবিচার করতে পারবে না, তাহলে একজনকে (বিয়ে করো)।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ৩) কোন ধর্ম যে অঞ্চলে আবির্ভুত হয় সেখানে চালু থাকা সংস্কৃতি ঐ ধর্মের নানা বিধি বিধান তৈরীতে ব্যাপক ভুমিকা রাখে। যে কোন ধর্ম প্রচলিত হওয়ার সময় যে স্থানে তা চালু হয় সেখানের সমাজে প্রচলিত থাকা রীতিনীতিকে আরও আধুনিক আর গ্রহণযোগ্য করার চেষ্টা করে। আরব অঞ্চলে প্রাকইসলামী যুগ থেকে এক পুরুষের বহু স্ত্রী গ্রহণের প্রথা চালু ছিল। তবে ইসলাম তা চারজনে সীমিত করে দেয়। কোন সমাজে প্রথা চালু হওয়ার পেছেনে নানা আর্থসামাজিক কারন থাকে। ইসলাম মুসলিমকে চারটি বিয়ে করতে বলেনি। বরং শর্ত সাপেক্ষে হলেও ইসলাম পুরুষের জন্য একসঙ্গে একাধিক স্ত্রী রাখার বৈধতা দিয়েছে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা এবং তাঁর রসূল(সাঃ) একটি স্ত্রী’ই যথেষ্ট বলেছেন বা একজনের জন্য এক নারীই যথেষ্ট। কিন্তু যদি কেউ মনে করে যে, সে সম আচরণ করতে পারবে, সমান অধিকার রক্ষা করতে পারবে এবং যদি তার যুক্তিসঙ্গত কারনে প্রয়োজন হয়, তাহলে সে একাধিক বিয়ের কথা ভাবতে পারে। এর সাথে বিশাল দায়িত্বশীলতা জড়িত এবং তা সঠিকভাবে পরিপালিত না হলে আল্লাহর কাছে জবাবদিহী করতে হবে অত্যন্ত কঠোরভাবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন-“তোমরা যতই ইচ্ছা কর না কেন তোমাদের স্ত্রীদের প্রতি কখনই সমান ব্যবহার করতে সক্ষম হবে না, তবে তোমরা কোন একজনের প্রতি সম্পুর্ণভাবে ঝুঁকে পড় না এবং অপরকে ঝুলানো অবস্থায়ও রেখ না, যদি তোমরা নিজেদেরকে সংশোধন কর এবং সাবধান হও তবে নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল,পরম দয়ালু।”(আল-কুরআন,৪ঃ১২৯) আসলে বেশীরভাগ অমুসলিম এবং মুসলিম জানে না ইসলামে একাধিক বিয়ে কেন বৈধতা দিয়েছে। পৃথিবীতে পুরুষের তুলনায় নারীজাতির জন্ম হার বেশি। মেডিকেল পরীক্ষায় জানা যায়, ছেলেদের তুলনায় মেয়ের শরীর রোগ প্রতিরোধের বেশি কার্যকর। তাদের মৃত্যু হারও কম। এ ছাড়া অসুস্থ হয়ে, যুদ্ধক্ষেত্রে, মদপান করে ও নানা দুর্ঘটনায় নারীর তুলানায় পুরুষের মৃত্যু বেশি হয়। পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণেই ইসলামে পুরুষের জন্য একাধিক বিয়ের অনুমতি দিয়েছে। ইসলাম ধর্মে একাধিক বিয়ে অনুমোদিত হওয়ার পেছনে কী কী যুক্তি রয়েছে—তা বর্ণনা করা হলোঃ

১। একাধিক বিয়ের বিষয়টি ইসলামই প্রথম বিশ্বের সামনে নিয়ে আসেনি। এর নজির বিশ্বে বহু আগে থেকে রয়েছে। পূর্ববর্তী জাতিগুলোর মধ্যেও প্রচলিত ছিল। আগের আসমানি কিতাবগুলোতে একাধিক বিয়ের কথা আছে। কয়েকজন নবী একাধিক নারী বিবাহ করেছিলেন। হজরত সুলাইমান (আ.)-এর ৯০ জন স্ত্রী ছিলেন। রাসুল (সা.)-এর সময় এমন কিছু ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন, যাঁদের আটজন অথবা পাঁচজন স্ত্রী ছিলেন। রাসুল (সা.) তাঁদের চারজন স্ত্রী রেখে বাকিদের তালাক দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

২। প্রত্যেক দেশেই পুরুষের তুলনায় নারীদের শক্তি দ্রুত বার্ধক্যের শিকার হয়ে থাকে। যেখানে পুরুষের যৌবন পুরোপুরি অটুট থাকে এবং নারী বুড়ি হয়ে যায়, সেখানে দ্বিতীয় বিয়ে করা এত জরুরি হয়ে দাঁড়ায়, যেমন আগে প্রথম স্ত্রী বিবাহ করা আবশ্যক হয়েছিল। যে আইন একাধিক স্ত্রী নিষিদ্ধ হওয়ার কথা বলে, প্রকারান্তরে সে আইন ওই সব পুরুষকে নিজ কামশক্তি ব্যভিচারের মাধ্যমে প্রয়োগের ইঙ্গিত করে, যাদের যৌনশক্তি সৌভাগ্যক্রমে বৃদ্ধকাল পর্যন্ত অটুট থাকে। এমন আইন কিভাবে সাধারণ মানুষের স্বার্থের অনুকূলে হতে পারে?

৩। পুরুষদের মধ্যে এমন কিছু ব্যক্তি রয়েছে, যাদের মধ্যে প্রবল শারীরিক চাহিদা বিদ্যমান, যাদের জন্য একজন স্ত্রী যথেষ্ট নয়। যদি এমন একজন ব্যক্তির জন্য একাধিক স্ত্রী গ্রহণের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং তাকে বলা হয় যে তোমার জন্য একাধিক স্ত্রী রাখা অনুমোদিত নয়, তাহলে এটি তার জন্য কঠিন কষ্টের কারণ হবে এবং তার জৈবিক চাহিদা তাকে হারাম পথে পরিচালিত করবে।

[sb ]৪। একজন স্ত্রী হয়তো বন্ধ্যা হতে পারে অথবা অসুস্থ হওয়ার কারণে তার সঙ্গে তার স্বামী দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে না। অথচ একজন স্বামীর সন্তানের আকাঙ্ক্ষা থাকতে পারে, আর এর একমাত্র উপায় হলো অন্য একজন স্ত্রীকে বিয়ে করা।

৫। নারী সব সময় এমন থাকে না যে স্বামী তার সঙ্গে সহাবস্থানে থাকতে পারে। প্রথম কারণ, প্রত্যেক নারীর জন্য মাসের কোনো এক সময় এমন অতিবাহিত হয় যখন তাকে পুরুষ থেকে দূরে থাকতে হয়। দ্বিতীয়ত, গর্ভকালীন অবস্থা। অর্থাৎ নারীকে নিজ ও নিজের সন্তানের স্বাস্থ্য রক্ষার তাগিদে কয়েক মাস ধরে স্বামীর সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকতে হয়।একজন নারীর প্রতি মাসে ঋতুস্রাব (হায়েজ) হয়, আর যখন তিনি সন্তান প্রসব করেন তখন তার ৪০ দিন পর্যন্ত রক্তপাত (নিফাস) হয়। সে সময় একজন পুরুষ তার স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করতে পারে না। কেননা হায়েজ ও নিফাসের সময় সহবাস করা হারাম এবং এটি যে ক্ষতিকারক তা মেডিক্যালি প্রমাণিত। এসব সময় নারীর জন্য কুদরতি প্রক্রিয়ায় স্বামীর সংস্পর্শ নিষিদ্ধ হয়ে যায়। পক্ষান্তরে স্বামীর জন্য স্ত্রীর সংস্পর্শে যেতে কোনো বাধা-নিষেধ থাকে না। তখন যদি কোনো পুরুষের কামভাব চরমে পৌঁছে যায়, তাহলে একাধিক স্ত্রী ছাড়া তার জন্য কী-ই বা উপায় থাকে?তাই ন্যায়বিচার করতে সক্ষম হলে একাধিক বিবাহ করা অনুমোদিত।

৬। একাধিক বিয়ে মুসলিম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
এটি জানা কথা যে শুধু বিয়ের মাধ্যমেই সংখ্যা বৃদ্ধি করা যায় এবং একাধিক বিয়ের মাধ্যমে প্রাপ্ত বংশধরদের সংখ্যা একজন স্ত্রীকে বিয়ের মাধ্যমে প্রাপ্ত বংশধরদের সংখ্যার চেয়ে বেশি হবে। আর বংশধরদের সংখ্যা বৃদ্ধির মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহকে শক্তিশালী করা যায় এবং উম্মাহর কর্মীদের সংখ্যা বৃদ্ধি করা যায়, যা তাদের অর্থনৈতিক মান উন্নয়ন করতে সক্ষম, যদি রাষ্ট্র মানবসম্পদের উন্নয়নে যথাযথভাবে কাজ করে। আর হ্যাঁ, জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে কখনো কখনো কিছু সংকট দেখা যায়। এটি মূলত রাষ্ট্রের অপব্যবস্থাপনার কারণে এবং সম্পদের সুষম বণ্টন না থাকার কারণে। উদাহরণস্বরূপ চীনকে দেখুন। বাসিন্দাদের সংখ্যা অনুপাতে এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জাতি এবং এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশগুলোর অন্যতম হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং অন্য দেশগুলো চীনকে বিপর্যস্ত করার আগে কয়েকবার চিন্তা করতে বাধ্য। আর এটি বিরাট শিল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে একটি। এর কারণ হলো, তারা তাদের জনসংখ্যার আধিক্য দেখে ভয় পায়নি, বরং মানবসম্পদ উন্নয়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

৭। গোটা বিশ্বের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, নারীদের সংখ্যা পুরুষদের সংখ্যার চেয়ে বেশি।
যদি প্রত্যেক পুরুষ শুধু একজন নারীকে বিয়ে করে, তাহলে তার অর্থ এই দাঁড়াবে যে কিছু নারীকে স্বামী ছাড়াই থাকতে হবে, যা তার ওপর এবং সমাজের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করবে। এটি তার জীবনকে সংকীর্ণ করার পাশাপাশি তাকে বিপথগামিতার দিকে পরিচালিত করতে পারে। এবং এর মাধ্যমে সমাজে অনাচারের পথ প্রশস্ত হতে পারে।

৮। পুরুষরা এমন অনেক ঘটনার সম্মুখীন হয়, যা তাদের জীবননাশের কারণ হয়ে থাকে
কারণ তারা সাধারণত বিপজ্জনক পেশায় কাজ করে থাকে। কখনো কখনো যুদ্ধ ক্ষেত্রে লড়াই করে। এবং এতে নারীদের তুলনায় পুরুষরা বেশি সংখ্যায় নিহত হয়ে থাকে। এটি হলো স্বামীবিহীন নারীদের সংখ্যা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। আর তার একমাত্র সমাধান হলো একাধিক বিয়ে।

৯। এমনটি হতে পারে যে একজন নারী একজন ব্যক্তির আত্মীয়া এবং তার দেখাশোনা করার মতো কেউ নেই এবং সে একজন অবিবাহিত নারী অথবা একজন বিধবা নারী। ওই নারীর জন্য এটি একটি উত্তম ব্যবস্থা যে তাকে প্রথম স্ত্রীর পাশাপাশি দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে নিজের পরিবারের অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়া, যেন সে ওই নারীকে পবিত্র রাখতে পারে এবং তার জন্য অর্থ ব্যয় করতে পারে। তাকে একাকী ছেড়ে দেওয়া এবং তার জন্য শুধু অর্থ ব্যয় করার মধ্যে নিজেকে সীমাবদ্ধ করার চেয়ে এ পন্থা অধিক উত্তম।

১০। ইসলামী শরিয়ত একটি শক্তিশালী সমাজকাঠামো দেখতে চায়। এ ক্ষেত্রে পরিবারগুলোর মধ্যকার বন্ধন শক্তিশালী হওয়া, অথবা কোনো নেতার সঙ্গে কিছুসংখ্যক লোক বা জনগোষ্ঠীর সম্পর্ক শক্তিশালী হওয়ার বৃহত্তর স্বার্থ থাকতে পারে। যেমনটা দেখা যায়, মহানবী (সা.)-এর জীবনে। তাঁর কোনো কোনো বিয়ে ছিল এ ধরনের বৈরী লোকদের সঙ্গে বংশীয় সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে সন্ধি স্থাপনের নিমিত্তে। আর অন্যতম একটি উপায় হলো একাধিক বিয়ে করা।

এবার বহুবিবাহ নিয়ে সমকালীন ঘটনার দিকে নজর দেইঃ
ক) ইরিত্রিয়ার সরকার ইদানিং ঘোষণা দিয়েছে- প্রতিটি বিবাহ যোগ্য পুরুষকে অবশ্যই একের অধিক বিবাহ করতে হবে। রাষ্ট্র আর জাতির টিকে থাকার জন্য এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। গত ত্রিশ বছরে ইরিত্রিয়ায় গৃহযুদ্ধে বিস্তর পুরুষ মারা গেছে। তাছাড়া যুদ্ধের ধকল সইতে না পেরে অনেক পুরুষ পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে পালিয়ে গেছে। এদিকে অসংখ্য নারী বিধবা হয়েছে বা মেয়েরা বড় হয়ে বিবাহ উপযুক্ত হয়েছে কিন্তু প্র্য়োজনীয় সংখ্যক বিবাহযোগ্য পুরুষ পাওয়া যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে বহু আলোচনা আর বিশ্লেষণ শেষে নীতি নির্ধারকরা ছেলেদের জন্য বহু বিবাহ চালু করা ছাড়া আর কোন উপায় দেখছেন না। তারা নতুন আইনে এটাও উল্লেখ করেছেন যে- কোন নাগরিক সরকারের এই আইনের বিরুদ্ধাচারন করলে অর্থাৎ বহু বিবাহে রাজী না হলে তাকে যাবতজ্জীবন কারা অন্তরালে কাটাতে হবে। তাই ছেলেদের মধ্যে যারা বহু বিবাহ চায় অথবা যারা না চায় উভয় দলই একাধিক বউ ঘরে তুলছে। আবার কোন মেয়ে মন থেকে দ্বিতীয় বা তৃতীয় স্ত্রী হতে না চাইলেও যাবতজ্জীবন কারাবাস থেকে বাঁচতে দ্রুত বিয়ের পিড়িতে বসছে। এর ফলে এক পুরুষ এক নারী বিয়ে করবে, ইরত্রিয় সমাজে দীর্ঘ কাল ধরে চালু থাকা এই নিয়ম পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে। নতুন প্রজন্মের মেয়েরা এবং ছেলেরা এই ধারণা নিয়েই বেড়ে উঠছে যে- একটি ছেলে অনেক গুলো মেয়ে বিয়ে করবে এটাই স্বাভাবিক বটে। ফলে মেয়েরাও দ্বিতীয় বা তৃতীয় স্ত্রী হতে কোন মানসিক পীড়ন বোধ করছে না। দেশটি টিকে থাকার জন্য, জাতি হিসেবে টিকে থাকার জন্য ইরিত্রিয় সরকারের এই আইন দ্বারা তাদের বর্তমানে চালু থাকা এক পুরুষ এক স্ত্রী পরিবারতন্ত্র থেকে এক স্বামী বহু স্ত্রী ধাঁচের পরিবার প্রথার দিকে যাত্রা করল। তবে ইরিত্রিয়ায় পুরুষের বহু বিবাহ চালু করতে ধর্ম নয় রাষ্ট্রিয় আইন ভুমিকা নিচ্ছে। এভাবেই যুদ্ধ, সামাজিক প্রয়োজন আর অর্থনীতি কোন সমাজের পুরাতন প্রথা ভেঙ্গে নতুন প্রথা চালু করে থাকে।

খ} তিব্বতের বেশীর ভাগ অংশ অতি দুর্গম, টিকে থাকা সেখানে চ্যালেঞ্জ বটে। এক একটি পরিবার পাহাড়ের ঢালে সামান্য কৃষি জমির মালিক। যা থেকে যে পরিমাণ ফসল পাওয়া যায় তা পরিবারের জনসংখ্যা বেড়ে গেলে তাদের টিকে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়বে। শত শত বছর আগে টিকে থাকার জন্য তিব্বতের তৎকালীন সমাজপতিরা সিদ্ধান্ত নেন পরিবারের সব ভাই মিলে একটি মাত্র মেয়েকে বিবাহ করবে। এর ফলে পরিবারের মালিকানাধীন ভুমি খণ্ডটি ভাইদের মাঝে ভাগ হবে না, তাই সবাই মিলে ঐ ভুমিতে ফসল উৎপাদন করে টিকে থাকা সম্ভব হবে। এভাবে তিব্বতের একটা বড় অংশে সকল ভাই অর্থাৎ তিন, চার বা পাঁচ ভাই মিলে একটি মেয়েকে বিয়ে করার প্রথা চালু হয়ে যায় যা আমাদের কালচারাল প্লাটফরম থেকে একটা অরুচিকর, অগ্রহণযোগ্য বীভৎস প্রথা বলে প্রতীয়মান হয়। কিন্তু বৈরী প্রাকৃতিক পরিবেশে এভাবে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা ছাড়া তিব্বতী সমাজের আর কোন উপায় ছিল না কারন জন্ম নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন পদ্ধতি তখনও আবিস্কার হয়নি। যদিও গত শতকের মাঝামাঝি জন্ম নিয়ন্ত্রণ সামগ্রী সবার হাতের নাগালে চলে আসে তবে তিব্বতে এই অদ্ভুত বিবাহ প্রথা এখনও প্রচলিত আছে। কারন কোন প্রথা সমাজে একবার চালু হলে তা পরিবর্তিত হতে একটা বা দুটো বা বহু জেনারেশন লেগে যায়। তবে গত শতকের আশীর দশকে চীনের এক পরিবার এক সন্তান এই নতুন নীতি গ্রহণ করার ফলে তিব্বতিদের মধ্যে দারুন প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। কারন তারা বুঝতে পারে চার বা পাঁচ ভাই মিলে একটি মেয়ে বিয়ে করার পর একটি মাত্র সন্তান নিলে পাঁচ বা ছয় জনের একটি পরিবার মাত্র এক জেনারেশনে এক জনে পরিণত হবে ফলে দু’ তিন জেনারেশনের মধ্যে তিব্বতীরা পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে। সাংস্কৃতিক অনেক বিষয় সহ এই নিয়ে চীনাদের সাথে তিব্বতীদের বিরোধ তৈরি হয় যা আজও চলছে। তবে বিলুপ্তি থেকে রক্ষা পেতে তিব্বতীরা নিশ্চয় নতুন ধরনের বিবাহ প্রথা চালুর কথা ভাবছে। অপর দিকে আধুনিক চীনে এক মেয়ের একাধিক স্বামী গ্রহণের বিষয়টি চালু হওয়া শুরু হতে পারে যেহেতু চীনে বিবাহযোগ্য মেয়ের সংখ্যা কমে গেছে। এক সন্তান নীতির কারণে বর্তমানে চীনে ছেলের সংখ্যার চেয়ে মেয়ের সংখ্যা প্রায় চার কোটি কম। তবে এক মেয়ের অনেক স্বামী এমনটা চীনে চালু হলেও তার পেছনের কারন তিব্বতীদের কারনের মত নয়।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল
:-& ফেসবুক
[email protected]
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪১
২৬টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একাত্তরের সংগ্রামী জনতার স্লুইস গেট আক্রমণ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২১


(ছবির লাল দাগ দেয়া জায়গাটিতে গর্ত করা হয়েছিল)

শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

২৩শে এপ্রিল পাক সেনারা ফুলছড়ি থানা দখল করে। পাক সেনা এলাকায় প্রবেশ করায় মানুষের মধ্যে ভীতিভাব চলে আসে। কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাড়ির কাছে আরশিনগর

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫০


বাড়ির কাছে আরশিনগর
শিল্পকলা একাডেমির আশেপাশেই হবে চ্যানেলটার অফিস। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করল মৃণাল। কিন্তু খুঁজে পাচ্ছে না সে। এক-দু'জনকে জিগ্যেসও করল বটে, কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছে না।

কিছুদূর এগোনোর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতার সুফল কতটুকু পাচ্ছে সাধারণ মানুষ

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:২৮

(১) আমলা /সরকারের কর্মকর্তা, কর্মচারীর সন্তানদের জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার প্রস্তাব হতাশাজনক। মুক্তিযুদ্ধের ১৯৭১ সালের রক্ত দেওয়া দেশের এমন কিছু কখনো আশা কি করছে? বঙ্গবন্ধু এমন কিছু কি আশা... ...বাকিটুকু পড়ুন

এলজিবিটি নিয়ে আমার অবস্থান কী!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১০ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:১৫

অনেকেই আমাকে ট্রান্স জেন্ডার ইস্যু নিয়ে কথা বলতে অনুরোধ করেছেন। এ বিষয়ে একজন সাধারণ মানুষের ভূমিকা কী হওয়া উচিত- সে বিষয়ে মতামত চেয়েছেন। কারণ আমি মধ্যপন্থার মতামত দিয়ে থাকি। এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×