somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিখ্যাত ঐতিহাসিক উপন্যাস রচয়িতা এবং কবি স্যার ওয়াল্টার স্কটের ১৮৮তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


স্কটল্যান্ডের বিখ্যাত ইংরেজ কবি, ঔপন্যাসিক ও ঐতিহাসিক স্যার ওয়াল্টার স্কট। তার সময়ে পুরো ইউরোপ জুড়ে তিনি সবচেয়ে বেশী জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। তার রচনা সমসাময়িক ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া ও উত্তর আমেরিকায় সমাদৃত হয়েছে। স্যার ওয়াল্টার স্কটই প্রথম ইংরেজ ভাষাভাষী লেখক যিনি তার জীবদ্দশাই আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেন। আইভানহো, রব রয়, দ্য লেডি অব দ্যা লেক তার কালজয়ী সৃষ্টি। এখনও তার বই ব্যাপক হারে পঠিত হয়। ইংরেজি এবং বিশেষ করে স্কটিশ সাহিত্যে তার সাহিত্যকর্মগুলো বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। তার বিখ্যাত সাহিত্যকর্মগুলোর মধ্যে রয়েছে আইভানহো, রব রয়, দ্য লেডি অফ দ্য লেক, ওয়েভারলি এবং দ্য হার্ট অফ মিডলোথিয়ান। ১৮৩২ সালের আজকের দিনে স্যার ওয়াল্টার স্কট পরলোকগমন করেন। আজ তার ১৮৮তম মৃত্যুবার্ষিকী। বিখ্যাত ইংরেজ কবি, ঔপন্যাসিক ও ঐতিহাসিক স্যার ওয়াল্টার স্কটের মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।


ওয়াল্টার স্কট ১৭৭১ সালের ১৫ই আগস্ট স্কটল্যান্ডের এডিনবরায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নামও ওয়াল্টার স্কট আর মাতা অ্যান স্কট। ওয়াল্টারের বাবা-মা ১২টি সন্তানের জন্ম দেন, যাদের মধ্যে ৫ জনই শৈশবে মারা যায়। ওয়াল্টার নিজে ২ বছর বয়সে পোলিও রোগে আক্রান্ত হন এবং কোনমতে বেঁচে যান, কিন্তু বাকী জীবন তাঁকে শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়ে কাটাতে হয়। ছোটবেলায় তিনি রূপকথা, গান, শেক্‌সপিয়ার, গল্প, এশীয় কল্পকাহিনী এবং লোককথার ভক্ত পাঠক ছিলেন। টুইড নদীর তীরে দাদীর খামার বাড়িতে এবং বর্ডার কান্ট্রি ও স্কটিশ উচ্চভূমিতে বসবাসকারী অন্যান্য আত্মীয়দের বাসায় বেড়াতে গিয়ে তিনি স্কটিশ গল্পগুজব, ইতিহাস, বীরত্বগাথা, গান এবং লোককথাগুলির এক জীবন্ত ভাণ্ডারে পরিণত হন। ১৪ বছর বয়সেই তিনি স্কটস ব্যালাড গানগুলি মুখস্থ গাইতে পারতেন। একই সাথে তিনি মধ্যযুগের রোমান্টিক কাহিনী, ইতিহাস এবং ভ্রমণকাহিনীগুলির ভক্ত ছিলেন। ১৭৭৮-১৭৮২ সালে তিনি এডিনবরা উচ্চ বিদ্যালয়ে কাটান এবং ১৭৮৩ সালে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। কিন্তু ভগ্ন স্বাস্থ্যের কারণে তিনি পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি। তিনি বাসাতে থেকেই একজন শিক্ষক রেখে ইংরেজি সাহিত্য চর্চা করতে থাকেন। এসময় তিনি বাবার জন্য নবিস হিসেবে কেরানিগিরি করতেন। পরবর্তী ৯ বছরের বিভিন্ন সময়ে স্কট এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে কলা ও আইনের উপর বিভিন্ন ক্লাস করেন। তিনি বাবার আইন ব্যবসায় নবিসের কাজকে গুরুত্বের সাথে নিয়েছিলেন এবং ব্যবসার জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভ্রমণ করতেন। কিন্তু একই সাথে তিনি অনেক পড়ার অভ্যাসটাও ধরে রেখেছিলেন। ১৭৯২ সালে তিনি আইনজীবী হিসেবে উত্তীর্ণ হন এবং স্কটিশ বারে প্র‌্যাকটিস করার সুযোগ পান। চাকরিতে এই আপাত স্থিতির প্রেক্ষিতে তিনি ১৭৯৭ সালে শার্লট কার্পেন্টারকে বিয়ে করেন। ১৭৯৯ সালে তিনি সেলকার্কশারের শেরিফ পদে নিযুক্ত হন এবং টুইড নদীর তীরে অ্যাশস্টিল শহরে বাস করতে যান। আইনের মৌসুমের সময় কেবল তিনি এডিনবরাতে ফিরে আসতেন।


স্কটের প্রথম প্রকাশিত রচনাবলীর মধ্যে আছে Minstrelsy of the Scottish Border (১৮০২-১৮০৩) নামের জনপ্রিয় স্কটিশ গানের একটি তিনখণ্ড সংগ্রহ; বইটি লোকসাহিত্যবিদ হিসেবে তাঁর সামর্থ্যের পরিচয় দেয়। এরপর তিনি ১৮০৫ সালে The Lay of the Last Minstrel, ১৮০৮ সালে Marmion, এবং ১৮১০ সালে The Lady of the Lake কা ব্যগ্রন্থগুলি প্রকাশ করে সমগ্র ব্রিটেনে সুপরিচিত কবি হয়ে ওঠেন। ১৮১২ সালে স্কট অ্যাবট্‌সফোর্ডের একটি এস্টেটে নিভৃত গ্রামীণ জীবন কাটাতে চলে যান। এর আগে তিনি প্রকাশক জন ব্যালান্টাইন কোম্পানির অংশীদার হন এবং রক্ষণশীল টোরি গবেষণা পত্রিকা দ্য কোয়ার্টার্লি রিভিউ ১৮০৯ সালে প্রতিষ্ঠা করায় সমর্থন দেন। ১৮১২ সালে তিনি পোয়েট লরিয়েট-এর পদ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান।এরপর স্কট গদ্য রচনায় মন দেন। তাঁর প্রথম উপন্যাস ছিল ওয়েভার্লি। এর পরের ১০ বছর স্কট বেনামে আরও ২০টি উপন্যাস রচনা করেন। কিন্তু বহু পাঠক এগুলিতে স্কটের লেখার ধরন ধরতে পারেন। আজও স্কটের লেখা বেনামী ৩২টি উপন্যাসকে তাঁর ওয়েভার্লি উপন্যাস বলা হয়।


প্রকাশনা ব্যবসায় ধ্বস নামলে স্কট দেনার বোঝায় জর্জরিত হয়ে পড়েন এবং বাকী জীবন সেগুলি শোধ করেই কাটিয়ে দেন। ব্রিটিশ সরকার স্বাস্থ্যের উন্নতির স্বার্থে তাঁকে ভূমধ্যসাগরগামী এক ফ্রিগেটে বিনামূল্যে যাত্রী হবাস সুযোগ করে দেয়। এই ভ্রমণ শেষে তিনি অ্যাবট্‌সভিলে ফিরে আসেন এবং ১৮৩২ সালের ২১শে সেপ্টেম্বর ৬১ বছর বয়সে মারা যান। ড্রাইবার্গ অ্যাবির ধ্বংসাবশেষে স্ত্রীর সমাধির পাশেই তাঁকে সমাহিত করা হয়। ১৮৪৪ সালে এডিনবরাতে তাঁর স্মরণে একটি সুক্ষ্ম কারুকাজময় গথিক ধাঁচের স্মারক ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়। আজ এই মহান ঔপন্যাসিকের ১৮৮তম মৃত্যুবার্ষিকী। বিখ্যাত ইংরেজ কবি, ঔপন্যাসিক ও ঐতিহাসিক স্যার ওয়াল্টার স্কটের মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল :-& ফেসবুক
[email protected]
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৫৫
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×