somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

২৭ নভেম্বরঃ শহীদ ডা. মিলন দিবস। শ্রদ্ধায় স্মরণ

২৭ শে নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আজ ২৭ নভেম্বর, শহীদ ডা. মিলন দিবস। ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দের ২৭শে নভেম্বর স্বৈরশাসন বিরোধী আন্দোলনের সময় তৎকালীন সরকারের লেলিয়ে দেয়া সন্ত্রাসীদের গুলিতে ডা: শামসুল আলম খান মিলন নিহত হন। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে উঠলে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসীদের গুলীতে ১৯৯০ সালের ২৭ নভেম্বর প্রাণ হারান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তরুণ চিকিৎসক শামসুল আলম খান মিলন। তার আত্মত্যাগের মধ্যদিয়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নতুন গতি সঞ্চারিত হয় এবং ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে এরশাদের পতন ঘটে। সেই থেকে এই শোকাবহ ঘটনার স্মরনে ডা. মিলনের আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে প্রতিবছর ২৭ নভেম্বর বাংলাদেশে শহীদ ডা. মিলন দিবস পালিত হয়।গণতান্ত্রিক আন্দোলনের এক প্রাতঃস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব ডা. শামসুল আলম খান মিলনকে সচরাচর শহীদ ডা. মিলন হিসেবে অভিহিত করা হয়। তার মৃত্যুকে মহান আত্মত্যাগ হিসেবে গণ্য করা হয়। মৃত্যুকালে পেশায় চিকিৎসক শামসুল আলম খান মিলন ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। এ ছাড়া ওই সময় তিনি বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) যুগ্ম-মহাসচিব ছিলেন। ১৯৯০ সালের ২৭ নবেম্বর স্বৈরশাসন বিরোধী আন্দোলনের সময় তৎকালীন সরকারের লেলিয়ে দেয়া সন্ত্রাসীদের গুলীতে ডা. শামসুল আলম খান মিলন নিহত হন। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের এই সংগ্রামে যুবলীগ নেতা নূর হোসেন, নূরুল হুদা, বাবুল, ফাত্তাহসহ অগণিত গণতন্ত্রকামী মানুষের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা।’ এই শোকাবহ ঘটনার স্মরণে ১৯৯১ সাল থেকে প্রতি বছর শহীদ ডা. মিলন দিবস উদযাপিত হয়ে আসছে। ডা. মিলনের মধ্য দিয়ে তখনকার স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নতুন গতি সঞ্চারিত হয় এবং অল্প কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এরশাদ সরকারের পতন ঘটে। ৯০-এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সব শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘স্বৈরশাসকের পদত্যাগের মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়। তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয় ভোট ও ভাতের অধিকার।’আজ শহীদ ডা. মিলনের ৩০তম মৃত্যুবার্ষিকী। শহীদ ডা. মিলন দিবসে তাঁর প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।


ডা. মিলনের জন্ম ১৯৫৭ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে। ১৯৭৩ সালে তিনি সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে শিল্পকলা (ইন্ডাস্ট্রিয়াল আর্টস) বিভাগে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে এসএসসি পাস করেন। ১৯৭৫ সালে তিনি এইচএসসি পাস করেন নটরডেম কলেজের ছাত্র হিসেবে। এরপর চিকিৎসক হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন (ব্যাচ কে-৩৪)। ১৯৮৩ সালে তিনি এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন ও ডাক্তারি পেশায় যোগ দেন। উল্লেখ্য, ডা. মিলন পেশাগত সততা, দক্ষতা ও সাংগঠনিক কর্মতৎপরতায় ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী। তিনি তৎকালীন বিএমএর নির্বাচিত যুগ্ম সম্পাদক, ঢাকা মেডিকেল কলেজ শিক্ষক সমিতির কোষাধ্যক্ষ এবং কলেজের বায়োকেমিস্ট বিভাগের প্রভাষক ছিলেন। তিনি পেশাজীবী ও রাজনৈতিক নেতাদের প্রিয়জন ও প্রিয়মুখ ছিলেন। ঘটনার বিবরণে জানাযায় তখন এরশাদ হটাও আন্দোলনে দেশব্যাপী রাজপথ-রেলপথ অবরোধ আন্দোলন চলছিল। ঘটনার দিন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের একটি সভায় যোগ দিতে রিকশাযোগে পিজি হাসপাতালে (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) যাচ্ছিলেন ডা. মিলন। এ সময় একই রিকশায় তার সহযাত্রী ছিলেন ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যিনি বর্তমানে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএসসি এলাকা অতিক্রমকালে সরকারের সন্ত্রাসী বাহিনী তার ওপর গুলী চালায়। তাৎক্ষণিকভাবে তার মৃত্যু হয়। তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে দাফন করা হয়। ‘বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ডা. মিলন এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকচক্রের হাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নৃশংস হত্যার মধ্য দিয়ে দেশে স্বৈরশাসনের উত্থান ঘটে। শহীদ ডা. মিলনের মতো আরো অনেকের আত্মত্যাগের বিনিময়ে ১৯৯০ সালে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা লাভ করে। দেশের প্রতিটি গণতন্ত্রকামী মানুষ এসব বীর শহিদদের অবদান চিরদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।’ যে চেতনা ধারণ করে ডা. মিলন প্রাণ দিয়েছিল, আগামী প্রজন্মকে সেই চেতনায় অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করে যেতে হবে। স্বৈরাচারের ভয়াল থাবা থেকে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার অকুতোভয় সৈনিক ডা. মিলনের শহীদের দিন আজ। অনেক আগেই ‘২৭ নভেম্বর’ তারিখটি ডা. মিলন দিবস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় আজকের দিন তাই চিরস্মরণীয়। এদিনে আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি ডা. মিলনকে।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল :-& ফেসবুক
[email protected]
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৭
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=স্মৃতির মায়ায় জড়িয়ে আছে মন=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:০৯


ঘাস লতা পাতা আমার গাঁয়ের মেঠো পথ, ধানের ক্ষেত
জংলী গাছ জড়ানো লতাবতী - আহা নিউরণে পাই স্মৃতির সংকেত,
রান্নাবাটির খেলাঘরে ফুলের পাপড়িতে তরকারী রান্না
এখন স্মৃতিগুলো পড়লে মনে, বুক ফুঁড়ে বেরোয় কান্না।

ফিরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×