somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তথ্য যোদ্ধা সায়মন ড্রিং আর নেই !

২০ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৮:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বাংলাদেশে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল একুশে টেলিভিশনের অন্যতম পথিকৃত সায়মন ড্রিংএকাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝুঁকি নিয়ে যিনি পাকিস্তানি বাহিনীর নিধনযজ্ঞের খবর বহির্বিশ্বে পৌঁছে দিয়েছিলেন, বাংলাদেশের সেই বন্ধু, সাংবাদিক সায়মন ড্রিং আর নেই। গত শুক্রবার (১৬ জুলাই) রোমানিয়ার একটি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের সময় সায়মন ড্রিংয়ের মৃত্যু হয় বলে তার আত্মীয় ক্রিস বার্লাস। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। সায়মন ড্রিং স্ত্রী ও দুই সন্তান রেখে গেছেন। তিনি সংবাদপত্র ও টেলিভিশনের সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেছেন ১৮ বছর বয়স থেকে। দেখেছেন ২২টি যুদ্ধ, অভ্যুত্থান ও বিপ্লব। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন নানা দেশের অসংখ্য সহমর্মী মানুষ। যুদ্ধের মাঠে, রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে, শরণার্থীশিবিরে, প্রতিবাদে বা জনমত গঠনে কঠিন সেই সময়ে তারা ভূমিকা রেখেছেন। তাদের একজন সাইমন ড্রিং। সায়মন ড্রিং একমাত্র সাংবাদিক, যিনি ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানের ভয়াবহতা ও নৃশংসতার শুরু থেকেই প্রতিবেদন করছিলেন।বাংলাদেশ থেকে তাকে সম্মানসূচক নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছিল। এ ছাড়াও তিনি পেয়েছেন বহু আন্তর্জাতিক পুরস্কার। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ইন্টারন্যাশনাল রিপোর্টার অব দ্য ইয়ার-১৯৭১।


ইংল্যান্ডের নরফোকের ফাকেনহাম নামক এক ছোট্ট শহরে ১১ জানুয়ারি, ১৯৪৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন সাইমন ড্রিং। সেদেশের কিংস লিন টেকনিক্যাল কলেজে পড়াশুনা চলাকালে ১৬ বৎসর বয়সে গৃহত্যাগ করেন তিনি। ১৯৬২ সালে বিশ্ব ভ্রমণের অংশ হিসেবে ভারত ভ্রমণ করেন। রয়টার্স, টেলিগ্রাফ ও বিবিসির হয়ে সায়মন ড্রিং দীর্ঘদিন কাজ করা সায়মন ড্রিং। রয়টার্সের হয়ে যুদ্ধের খবর সংগ্রহ করতে ১৯৬৪ সালে তিনি চলে যান ভিয়েতনামে। তিনিই তখন রয়টার্সের সর্বকনিষ্ঠ বৈদেশিক সংবাদদাতা। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় মার্চের ৬ তারিখে কম্বোডিয়া থেকে ঢাকায় চলে আসেন। তখন তিনি দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফের রিপোর্টার হিসেবে কাজ করছিলেন। সে সময় পাকিস্তানি জান্তা বিদেশি সাংবাদিকদের বাংলাদেশ অর্থাৎ পূর্ব পাকিস্তান ছাড়তে বাধ্য করলেও তিনি গোপনে থেকে যান। প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে হোটেলেই লুকিয়ে ছিলেন। ২৭ মার্চ সকালে কারফিউ উঠে গেলে হোটেলের কর্মচারীদের সহযোগিতায় ছোট্ট একটি মোটরভ্যানে করে ঘুরে ঘুরে দেখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ইকবাল হল, রাজারবাগ পুলিশ ব্যারাক ও পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকা। এরপর লেখেন ‘ট্যাংকস ক্র্যাশ রিভোল্ট ইন পাকিস্তান’ শিরোনামের এক প্রতিবেদন। যা গণহত্যার বিস্তারিত ওঠে আসে। যা নজর কাড়ে বিশ্ববাসীর। বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি টেরেস্ট্রিয়াল টেলিভিশন স্টেশন হিসেবে একুশে টেলিভিশনের যাত্রা শুরুতে তার ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ৷ বলা হয়ে থাকে, তার হাত ধরেই টেলিভিশন সাংবাদিকতা নতুন মাত্রা পেয়েছিল বাংলাদেশে। ২০১২ সালে সোনারগাঁও হোটেলে ‘স্মৃতি ৭১’ অনুষ্ঠানে একাত্তরের সেই গল্প শুনিয়েছিলেন সায়মন ড্রিং। ব্রিটিশ সাংবাদিক মার্ক টালিও ছিলেন সেই অনুষ্ঠানে৷ তাদের দুজনকেই মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননায় ভূষিত করেছে বাংলাদেশ সরকার। ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সংবাদ পরিবেশনায় কিংবদন্তি, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিদেশী বন্ধু সাইমন ড্রিং মৃত্যুতে আমরা গভীর শোকাহত।
সূত্রঃ The newage

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
ব্রেকিং নিউজ২৪.কম :-& ফেসবুক-১ :-& ফেসবুক-২
[email protected]
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৮:১৬
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×