ঘরে বাইরে যেদিকে তাকাই দেখি সবাই একটা না একটা পক্ষ নিয়ে আছে। আপনি নিরপেক্ষভাবে কথা বলবেন সম্ভব না! মতের সাথে না মিললে আপনাকে একটা পক্ষ বানিয়ে দেবে।
প্রমাণ চান? নিজেকে নিরপেক্ষ ভাবেন? আপনাকে বাইরে যেতে হবেনা প্রমাণের জন্য। এখনই ব্লগে একটা পোস্ট দেন যেকোন একজন রাজনীতিবিদের সমালোচনা করে। আপনার জানা উনার কোন কুকির্তর বিবরণ দিয়ে, তারপর নিজেই দেখুন আপনর স্বরুপ এতদিন ধরে যে নিরপেক্ষতার মুখোশ পড়ে আছেন তা এক পোষ্টেই খসে যাবে । যাহোক এত বকবকানির উদ্দেশ্য হলো... আজকে মানব জমিনে পড়লাম বর্তমান সরকারের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রি, কৃষিমন্ত্রি বেগম মতিয়া চৌধুরীকে নিয়ে একটা লেখা। একটুও বদলাননি তিনি শিরোনামের লেখাটি পড়লাম। খবরের সত্যতা সম্পর্কে আমি শতভাগ সিউর না কারণ আমি কখনও ব্যক্তিগত উনাকে দেখিনাই এবং উনার নির্বাচনী এলাকারও না। তারপরও এতদিন যে মতিয়া চৌধুরি সম্পর্কে পত্র-পত্রিকায় পড়েছি তাতে খবর বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ হয়ে দাড়ায়। ভাবতেই খুশি লাগতেছে.... তাহলে আমাদের দেশেও বর্তমান সময়ে এই রকম একজন নেতা আছেন যিনি সত্যিকার ভাবে আমাদের জনগণের নেতা। যিনি রাজনীতি করেন জনগণের জন্য। নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন জনগনের কল্যাণে । নিজেকে দুর্নীতিমুক্ত রাখতে পেরেছেন। আশান্বিত হলাম উনাকে দেখে হয়ত আমাদের দেশে এই রকম আরো নেতা আছেন। যারা নিজ অবস্থানে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন নিজেকে দুর্নীতিমুক্ত রেখে। আশা করব তারা সবাই একসময় গর্জে উঠবেন দলমত নির্বিশেষে জনগণের কল্যাণে। ভেঙ্গে দেবেন দুর্নীতির কালোহাত। আমাদের বাকী নেত্বৃবর্গ এই রকম সৎ রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে সততার শিক্ষা নেবেন। আমরা আরো বেশী সংখ্যক সৎ রাজনীতিবিদ পাব। আমরা জনগণের জন্য চিন্তা করার মত, কাজ করার মত নেতা পাব। এ হচ্ছে আমার আশা। আমি আশাবাদী একজন মানুষ। সামান্য একটু আলোর মুখ দেখলে ভাবি হয়ত এখনই অন্ধকার কেটে যাবে। আলোকিত হয়ে উঠবে আমাদের জীবন। এ একান্তই আমার ভাবনা। হয়তোবা আমারই মতো কিছু আশাবাদি মানুষের ভাবনাও হতে পারে।
মতিয়া চৌধুরীকে নিয়ে মানব জমিনের এই রিপোর্ট আমি ব্লগে দিলাম। সত্যমিথ্যা উনার পরিচিত জনেরা যারা উনাকে কাছে থেকে দেখেছেন তারাই ভাল বলতে পারবেন। তবে আমি কামনা করব এই রিপোর্ট যেন সত্য হয়। এই রকম সৎ, পরিশ্রমি, জনগনের নেতা যেন আমাদের দেশে আরো বেশি বেশি হয়। অসৎ নেতারা যেন উনাদের দেখে শিক্ষা নেন। তারপর সবার আন্তরিক প্রচেষ্টা এবং পরিশ্রমে গড়ে উঠে আমার/আমাদের সবার স্বপ্নের বাংলাদেশ যার স্বপ্ন আমরা আমরা প্রতিনিয়ত দেখি।
একটুও বদলাননি তিনি
Saturday, 29 May 2010
মিজানুর রহমান: একটুও বদলাননি তিনি। এখনও মোটা কাপড় পরেন। চলেন সাদামাটা। নেই সাজগোজ। সরকারি গাড়ি কিংবা অফিসে এসি থাকলেও ব্যবহার করেন না।
সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী হলেও চলার পথে পুলিশ প্রটেকশনের গাড়ি নেয়ার প্রয়োজন মনে করেন না। বাসার পুরনো আসবাবপত্রও আছে আগের মতোই। রাষ্ট্রীয় কাজের ব্যস্ততার মাঝেও নিজেই বাজার সদাই করেন। কাওরান বাজার থেকে সংসারের জন্য চাল, ডাল, তেল, পিয়াজ, নুন, মরিচ, শাক-সবজি কেনেন দরদাম করে। খাদ্য তালিকায় কোন পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগেনি। বরাবরের মতোই সাধারণ চালের ভাত, শাক-সবজি, ভর্তা আর তরিতরকারিই আছে এখনও। রাজনীতির পরিচ্ছন্ন নেত্রী, মহাজোট সরকারের কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, রাজপথের অগ্নিঝরা আন্দোলন-সংগ্রাম আর জেল-জুলুম-নির্যাতনকে সহ্য করে যিনি দেশ-বিদেশে ‘অগ্নিকন্যা’ খ্যাতি পেয়েছেন, সেই নেত্রী ‘ক্ষমতাধর’ হওয়ার পরও নির্লোভ নির্মোহ। কোন লোভ-লালসা তাকে তার আদর্শ থেকে ক্ষণিকের জন্য বিচ্যুত করতে পারেনি। সেই রাজপথের নেত্রী ক্ষমতাসীন হয়েও সদাসতর্ক। তার এ মানসিকতার জন্য তিনি সর্ব মহলে প্রশংসিত। ’৯৬ সালে প্রথম সরকারি দায়িত্ব পেয়ে নিজের মন্ত্রণালয় আলোকিত করেছিলেন। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে সরকারের লক্ষ্যে পৌঁছানোর চ্যালেঞ্জে সফল হয়েছিলেন। এবারও তিনি একই কাজ করেছেন। কথার বাগাড়ম্বর নয়, নীরবে নিভৃতে নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্বটুকু নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে চলেছেন।
অগ্নিকন্যার দিনলিপি: সরকারের গুরু দায়িত্ব তার কাঁধে। সাপ্তাহিক ছুটি কিংবা সরকারি বন্ধের দিন ছাড়া ভোরেই ঘুম থেকে ওঠেন। সকাল ৮টার মধ্যে বাসা থেকে বের হন। নির্বাচনী এলাকার লোকজন এবং দলীয় নেতাকর্মীদের সাক্ষাৎ দেন ৮টা থেকে পৌনে ৯টা পর্যন্ত। রাষ্ট্রীয় কিংবা দলীয় কর্মসূচি না থাকলে ৯টার মধ্যে সচিবালয়ে নিজের অফিসে পৌঁছান। বিকাল ৫টা পর্যন্ত টানা ৮ ঘণ্টা অফিস করলেও সরকারি অর্থে কোন খাবার গ্রহণ করেন না। এ সময়ে এক বা দু’বার নিজের অর্থে কেনা গ্রীন টি পান করেন। অফিসে এসি থাকলেও ফ্যান ব্যবহার করেন। সরকারি গাড়ির এসি-ও ব্যবহারের প্রয়োজন মনে করেন না তিনি। দলীয় বা সরকারি কর্মসূচি না থাকলে সন্ধ্যায়ই বাসায় ফেরেন। টিভি দেখেন খুব কম। বই পড়েন। অফিসের ব্যস্ততায় সময় না পেলে বাসায় ফিরে পত্রিকা পড়েন। সুযোগ পেলে নিজে রান্না করেন। বেলের মোরব্বা, চালের পিঠা, তেলে ভাজা নাড়ু বানানো তার খুব পছন্দ। পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজনের বাসায়ও তা পাঠান। বাসায় আত্মীয়স্বজনদের আনাগোনা খুব একটা পছন্দ করেন না। তবে নিয়মিত তাদের খোঁজখবর নেন। এভাবেই বেড়ে উঠেছেন তিনি। তার এই সহজ সরল জীবন সম্পর্কে আগ্রহবশত জানতে চাইলে মতিয়া চৌধুরীর জবাব- পারিবারিকভাবে বিত্তবৈভবের চাকচিক্য কিংবা অহেতুক অপচয় সব সময় নিরুৎসাহিত করা হতো। দু’টি মিলের আর দু’টি তাঁতের এই ৪টি শাড়ি ছিল কলেজ জীবনে। নিজের কাজ নিজে করে আনন্দ পাই, এটা আজও লালন করে চলেছি।
রাজনীতিতে ৫০ বছর পূর্ণ করেছেন ক’মাস আগে। ঘটনাবহুল রাজনৈতিক জীবন তার। রয়েছে নানা দুর্বিষহ স্মৃতি। একবার দু’বার নয় জেলে গেছেন ১৫ বার। বছরের পর বছর জেল আর আত্মগোপনে কাটিয়েছেন। কিন্তু মাথা নত করেননি। আর্থিক সমৃদ্ধির প্রলোভন দেখানো হয়েছে, প্রাণনাশের হুমকি এসেছে বহুবার, তবুও নিজের অবস্থান থেকে এক চুলও নড়েননি। দুঃখ-কষ্টের দিন শেষ করে আজ তিনি ক্ষমতায়। সরকারের মুখ্য ব্যক্তিদের অন্যতম। সেখানেও তার আদর্শ ও অবস্থানে অবিচল। নির্লোভ, নির্মোহ, সাদামাটা জীবনাচরণে অভ্যস্ত রাজনীতির ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত বেগম মতিয়া চৌধুরীর নামটি তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরাও সম্মানের সঙ্গে উচ্চারণ করেন।
অগ্নিকন্যা মতিয়া চৌধুরীর রাজনৈতিক বেড়ে উঠা এবং উনার সম্পর্কে আরো জানতে ক্লিক করুন নীচের তথ্যসুত্রে।
তথ্যসুত্রঃ
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মে, ২০১০ বিকাল ৪:৩৪