somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডাক্তারদের অহেতুক টেষ্ট বানিজ্য, রুখবে কে?

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ার অধিকার প্রতিটি নাগরিকের রয়েছে। জনগণের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার লক্ষে বিভিন্ন সময়ের সরকার গুলি সাধারণ জনগণের কল্যানে কাজ করার জন্য ডাক্তারদের প্রতি আহব্বান জানিয়েছেন এবং নানান প্রদক্ষেপ নিয়েছেন। তবে সত্যি হল তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
সম্প্রতি সরকার ডাক্তারদের গ্রামের হাসপাতালে কাজ করতে বলেছেন। সরকার প্রধান হুশিয়ার করে দিয়েছেন যে যাদের গ্রামে যেতে ইচ্ছে করে না ,তাদের চাকুরী করার দরকার নেই।
২০ডিসেম্বর ২০০৯ সালে মাননীয় রাষ্ট্রপ্রতি জিল্লুর রহমান একটি অনুষ্ঠানে ডাক্তারদের অপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা না করার জন্য আহব্বান জানিয়ে ছিলেন। মাননীয় রাষ্টপ্রতির সময়চিত সেই আহব্বানে ডাক্তাররা কর্নপাত করেনি। বরং ক্রমশ তা বেড়েই যাচ্ছে।
পাড়ায় মহল্লায় হাটে-বাজারে, গ্রামে-গঞ্জে বাঙের ছাতার মত গজিয়ে উঠছে ক্লিনিক-প্যাথলজী সেন্টার। তারা নিয়োগ দিচ্ছে দালাল। কন্টাক করছে ডাক্তারদের সাথে। ৫০% থেকে ৬০% পযন্ত টেষ্টের বিল ডাক্তারদের ঘুষ দেবার প্রদ্ধতী চালু হয়েছে।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুঃনীর্তিগ্রস্থ দেশ বলেই হয়ত সরকারের নাকের ডগায় এসব চললেও সরকার বা স্বাস্থ্য মন্ত্রালয় এবাপ্যারে নিশ্চুব!
ডাক্তারদের এই পরীক্ষা নিরীক্ষা বা টেষ্ট ব্যবসা এখন সয়াবিন তৈল বা ডাল চিনি সিন্ডিকেডের মতই নাগরিক জীবনে একটি নতুন সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে।
সমাজে প্রভাবশালী এবং সবচেয়ে সম্মানিত শ্রেনীর মানুষ গুলোর অর্থ লিপ্সা কতটা নিচে নেমেছে তা বোঝা যায় এই পরীক্ষা বানিজ্যর দ্বারা। মানবিকতার লেস মাত্র থাকলে হয়ত তারা অহেতুক টেষ্ট বানিজ্য হতে বেরুতে পারতেন।
কমিশন প্রথা না থাকলে হয়ত শুধু মাত্র প্রয়োজনীয় টেষ্টগুলো করার জন্যই ডাক্তাররা উপদেশ দিত বলে সাধারণ মানুষের বিশ্বাস।
সেবা এখন হয়ে গেছে ব্যবসা, সাবান তেলের পাশাপাশি ক্লিনিক গুলোর ও বিজ্ঞাপন পত্রিকা-টিভি চ্যানেলে প্রচার হয়। ঝকঝকে তকতকে মার্বেল পাথরে সজ্জিত এসব ক্লিনিকে গেলে রোগী সুস্থ হোক বা নাহোক তার পরিবার কে অর্থনৈতীক ভাবে অসুস্থ্য করে দেওয়া হয়।
এছাড়া ডাক্তারদের চেম্বারে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা ভিজিট নেবার পরও রোগীদের যথেষ্ট সময় দেওয়া হয়না বলে অভিযোগ করেন অনেক রোগী। কিছু কিছু ব্যস্ত ডাক্তারগণ রোগীর সমস্যার কথা ভাল করে শোনার সময়ও পায়না।
ইদানীং পট কোম্পানি বলে কিছু ভূইফোড় কোম্পানি বেরিয়েছে। যারা ডাক্তারদের সাথে মাসোহারা চুক্তি করে মানহীন ক্যালসিয়াম বা ভিটামিন ট্যাবলেট লিখে থাকেন। একপটের দাম দেড়শ থেকে তিনশত টাকা পযন্ত! এই মানহীন বেনামী কোম্পানির ঔষুধ লিখে ডাক্তারগণ কিছু কামিয়ে নিলেও ভুক্তভোগি রোগী নিরবে প্রতারিত হয়। উচ্চ শিক্ষিত এই সব মানুষদের কাছে সমাজ যা কখনোই প্রত্যাশা করে না।
এছাড়াও নামী কোম্পানি গুলিও নানান অসাধু প্রতিযোগীতা করছে। তারা মেডিসিনের দাম বাড়াচ্ছে অযোক্তিক হারে। সরকার নির্বিকার কেননা এইসব বড় কোম্পানি গুলিই রাজনৈতীক দলের ডোনার!
এছাড়াও প্রতি বছর বাজেটে স্বাস্থ্যসেবার জন্য যে বরাদ্দ সরকার রাখে, তার অর্ধেকও জনগণের কল্যানে ব্যায় হয় না। সরকারী হাসপাতালের বেতন ভুক্ত ডাক্তারগণ নিয়মিত অফিসে আসেন না। আর সরকারী ঔষুধ ও ঠিক মত বন্টন করা হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে। সরকারী হাসপাতাল গুলির নানা অনিয়ম ও নাজুক অবস্থা নিয়ে প্রায়ই বিভিন্ন পত্রিকা আর স্যাটেলাইট চ্যানেলে নিউজ হয়। কিন্তু তাতে বিশেষ কোন উন্নতি চোখে পড়েনি।
তবে এত কিছুর পরও সমাজে সব ডাক্তারই অর্থের পেছনে ছুটছে এটা বলা অন্যায়। অনেক ভাল মনের ডাক্তার রয়েছে যারা দুস্থ্যদের বিনা মূল্যে স্বাস্থসেবা দিয়ে থাকেন। ফ্রি স্যাম্পল পাওয়া ঔষুধ গরীব রোগীদের মাঝে বন্টন করে দেন। টাকা নয় তারা মানব সেবার মহান ব্রত নিয়ে কাজ করেন। যারা রোগীকে সুস্থ করে তোলার জন্য তাদের সর্বোচ্চ্য শ্রম দিয়ে থাকেন। আশা করছি প্রিয় ডাক্তারগণ তাদের মহৎ হৃদয় নিয়ে একটু ভেবে দেখবেন যে একজন রোগী যখন আপনাদের কাছে যায় তখন উপরে আল্লাহ আর নিচে আপনারাই তার সহয়, এই অবস্থায় অসহয় মানুষ গুলোর প্রতি দয়া করে সদয় হোন।
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×