*আনন্দ,আনন্দ, তুমি কোথায়?
সেই কবে থেকে তোমায় ডাকছি শুনতে পাচ্ছনা?
নাকি না শোনার ভান করছ!
আন ন্দ, আনন্দ তুমি কি আমায় দেখতে পাচ্ছ? নাকি তাও পাচ্ছনা?
নাকি না দেখার ভান করছ?
আনন্দ তুমি কোন কথা বলছ না কেন? কি হয়েছে তোমার?
তুমি কি আমার উপর রাগ করেছ? অভিমান করেছ? আমায কিছু একটা বল। না হলে আমি বুঝব কি করে।
ঠিক আছে বাবা,আমার দিকে তোমার তাকাতেও হবেনা বা কিছু বলতেও হবেনা? অন্তত আলতো করে আমায় ছুঁয়ে দাও।
একি তুমি দেখি তাও করছনা।
ঠিক আছে। আমিও তোমাকে আর ডাকবনা্ আর কিছু চাইবনা।
তোমার সাথে আড়ি আমার।
-------- হা হা হা কত বোকা তুমি। এই তুমি বুঝি জাননা আমার দেমাগটা একটু বেশী। দুর হতে ডাকলে আমি কিন্তু সাড়া দিইনা।আর তাকানো বা ছুঁযে দেয়া। সেতো সুদুর প্রসার।
খুব কষ্ট হচ্ছে বুঝি আমার বড় বড় কথা শুনে?
দেখ এক নিমিশেই আমি তোমার সব কষ্ট দুর করে দিতে পারি। একেবারে যাদুর মত।
* হয়েছে অত আর নিজের সাফাই গাইতে হবেনা। আপনি থাকুন আপনার দেমাগ নিয়ে। এই আমি মুখ বুঝলাম।
---------এই বোকা। আমাকে তোমার মাঝে নিয়ে নাও ।দেখবে তোমার সব কষ্ট দুর হযে গেছে।
* ইস্ । ওরে আমার রাজ পুত্তুর।সাত সমুদ্দুর পাড়ি দিয়ে তিনি আমায় নিতে এসেছেন।আর বলছেন -আমায নিয়ে নাও।
দুর হও তুমি। তোমার সাথে আমার কোন কথা নেই।
আমি যখন তোমায় এত করে ডাকলাম তখন কোথায ছিল তোমার এতসব ছেলে ভোলানো কথাগুলো। থাক তুমি তোমার দেমাগ নিয়ে। তিনি আমায় যাদু দেখাতে এসেছেন।
------- আরে যাদুতো আমি দেখাব না যাদু দেখাবে তুমি।
* কি বলছ তুমি এসব আবোর তাবোল কথা? একবার বলছ যাদুর মত আমার সব কষ্ট দুর করে দিবে। এখন বলছ আমিই যাদু দেখাব। হাঁ বুজেছি তুমিই যাদুর খপ্পরে পড়ে আবোল তাবোল বকতে শুরু করেছ।
------- আসলে ওসব কিছু নয। তুমি আমাকে তোমার মাঝে সৃষ্টি কর।
* এই কি বলছ এসব! আমি কেন তোমাকে আমার মাঝে সৃষ্টি করব? এতক্ষন যাদুর কথা বলে আমাকে পটাতে চেয়েছ। আর এখন প্রেমের কথা ফলাতে এসেছ তাইনা? হৃঁ ওনাকে আমার মাঝে সৃষ্টি করব। দুর হও দুর হও। (আনন্দকে দুটো কিল ঘুষিদেয়)।
-------হায় হায় করলে কি! অবশেষে তুমিই আমাকে ছুঁয়ে দিলে।
* ওহ! সরি আমার ভুল হযে গেছে্
------- না না ও কিছু নয। মাঝে মাঝে ভুলের মাঝেও আনন্দকে পাওয়া যায়। তুমি না আমাকে ডাকছিলে। তোমায় আলতো করে ছুঁয়ে দিতে। সে কাজটা তুমিই করলে। বললাম না এখন তুমিই যাদু দেখাবে।
* এই আবারও ফাজলামো হচ্ছে তাইনা।
--------- না সত্যি বলছি ।আমিতো তোমার মাঝেই লুকিয়ে আছি। শুধুমাত্র তোমার মাঝে আমাকে আবিস্কার হরতে হবে। নিজের মত করে সৃষ্টি করতে হবে।আমাকে ধারন কর। এবং জাগিয়ে তোল। আমি যখন জেগে উঠব তোমাকে আলতো করে ছুঁযে দেব। আর অমনি তোমার সব কষ্ট দুর হয়ে যাবে।
এই ছুঁয়ে দিলে কাতুকুতু লাগবেনাতো আবার?
* এই খুব দুষ্টুমি হচ্ছে বুঝি?
------- সব সময় কিন্তু কাতুকুতু দিতে হযনা। না ছুঁযেও কিন্তু কষ্ট দুর করে দেযা যায়।
* উফ! তুমি যে কি কঠিন কঠিন করে কথা বল। তোমার সব কথা আমি বুঝতে পারিনা।
--------- ওই যে বললাম আমাকে তোমার মাঝে আবিস্কার কর। সৃষ্টি কর নব নব উদ্দ্যমে। তোমার কাছে সব পরিস্কার হয়ে যাবে।
এবার বল আমায় কেন ডাকছিলে?
* জান আজ সকাল হতেই মনটা ভিষন খারাপ।
------ কেন কি হল?
*সকাল হতেই মেঘলা আকাশ। বৃষ্টি পড়ছে সারাক্ষন।কোথাও যে বের হব তার উপায় নেই।মনটাও কেমন বিষন্ন হয়ে আছে। খুব একা একা লাগছে।
---------আজ যদি ঝলমলে রোদে ভরা আকাশ হত তাহলে তুমি কোথাও বের হতে হয়ত।বের হলেই কি তোমার বিষন্নতা বা একাকিত্ব টা কেটে যেত?
* কে জানে হয়ত বা নয়ত না।
---------- তাহলে কি হল তোমার কষ্টটা রয়েই গেল।
*আসলেই তাই। তাহলে বল আনন্দ আমার কষ্টটা আমি কিভাবে দুর করতে পারব।
--------- আমিতো জানিনা তুমি তা কিভাবে দুর করব। তোমার কষ্ট দুর করতে হবে তোমাকে।
* তাহলে তোমাকে ডাকচি কেন?
-------- আমাকে ডাকছ তোমার প্রয়োজনে।
* অত স্বার্থপর এর মত কথা বলনা ।
--------- যা সত্যি তাই বলছি। সেই যে প্রথম আমায় ডেকেছিলে । বলেছিলি আমি তোমার কথা শুনতে পাচ্ছিনা, তোমাকে দেখতে পাচ্ছিনা, তোমাকে ছুঁয়ে দিচ্ছিনা আরো কত কি। আসলে ওই কাজগুলো তুমিই করতে পারছনা ।তুমি আমায় ডাকতে পারছনা, দেখতে পারছনা, এমনকি ছুঁতেও পারছনা। তাইতো তোমার এত বিষন্নতা, এত একাকিত্ব ,এত কষ্ট ।
তোমার চার দেয়ালের বন্ধ চানালাটা খুলে দাও। জানালার পাশে এসে দাড়াও। তাকিয়ে দেখ ওই বুনো আকাশটার দিকে। আজ যাকে দেখে বিষন্নতায় ভরে অঅছে তোমার মন। অথচ গতকালও ওই আকাশে সাদা মেঘের ভেলাগুরো পাল তুলেছিল । আজ হয়ত বগ কোন পর্বত মারা তার বিশাল ঝরনা ধারা ঢেলে দিয়ে নিজেকে কিছুটা হালকা করতে চাইছে ।হয়ত বা আরো অন্য কিছ ।
আমায় দেখতে পাচ্ছ?
একটু ভাল করে লক্ষ্য করলেই দেখতে পারবে মেঘের মাঝে বা আশে পাশে কোথাও আছি আমি। আমার ডাক শুনতে পাওনি? একটু ভাল করে দেখ একটা বড় মেঘ আর একটা মেঘকে ছুঁয়ে দিতে কেমন করে ছুঁটছে ।এই ছুঁয়ে দিল বুঝি । এই কি হল ? ভয় পেলে বুঝি ।প্রথম প্রথম তো তাই।দেখ ২য় বার কিন্তু অতটা ভয লাগবে না।
এবার দেখ মেঘ হতে বৃষ্টির ফোঁটাগুলো ঝরে পড়ছে। কোথাও গুড়ি গুড়ি কোথাও একটু বড়। আকাশ হতে মুক্তোগুলো যেন খসে খসে পড়ছে ।
চুপ করে আছ কেন। জানালা দিয়ে হাতটা আলতো করে বাড়িয়ে দাও।
ছুঁয়ে দাও বৃষ্টিগুলো কে । দুহাত ভরে মুঠো করে নাও ।ছড়িয়ে দাও সমস্থ মুখে ।মেখে দাও সমস্থ বাহুতে, ঘাড়ে, চুলে, তোমার যেখানে যেখানে ইচ্ছে।ইচ্ছেগুলোকে ইচ্ছেমত ছড়িয়ে দাও ।
* ওহ! আনন্দ। এত আনন্দ আমি আর পাইনি। আমি আর পারছিনা ।সত্যি আনন্দ তুমি শুধু আমার ।
আচ্ছা আনন্দ তুমি কি আমাকে বলবে, তুমিতো ওই মেঘের দেশে ছিলে । ওখান হতে আমার কাছে এলে কিভাবে ?
------ তোমার নিজেকে জিজ্ঞেস করে দেখ । আমি কোথায় ছিলাম, কিভাবে এলাম, কোথায় আছি । তুমি আমায় যতক্ষন ধারন করবে আমি ততক্ষনই তোমার কাছে থাকব।
* কেন ওভাবে বলছ কেন? তোমার কি খুব তাড়া আছে? আমার সঙ্গ কি তোমার ভাল লাগছে না ?
-------তা নয় । আমার কোন তাড়া নেই আবার আছেও ।
আমার সঙ্গ তোমার যতক্ষন ভাল লাগবে আমারও তাই ।
তবে কাল যখন ওই আকাশে ঝলমলে রোদ থাকবে তখন তুমি আমায নাও পেতে পার ।
* ওভাবে বলছ কেন আনন্দ ।তার মানে কি আমি তোমাকে হারিয়ে ফেলব ?
--------- কাল তুমি আমাকে তোমার মাঝে অন্যরুপে আবিস্কার করবে তবেই আমার দেখা পাবে ।
* তার মানে আনন্দ তুমি কি বহুরুপি?
------- হয়ত বা নয়ত না ।আমি আনন্দ । আজ অঅমি যা কাল ও আমি তা । আমি শুধুই আনন্দ । আনন্দ !!