আমরা কোনো সভা বা শোভাযাত্রা করতে গেলে একদল গুণ্ডা ভাড়া করে আমাদের মারপিট করা হত এবং সভা ভাঙার চেষ্টা করা হত। “জুলুম প্রতিরোধ দিবসে” বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কিছু গুণ্ডা আমদানি করা হয়েছিল।
আমি খবর পেয়ে রাতেই সভা করি এবং বলে দেই, গুণ্ডামির প্রশ্রয় দেওয়া হলে এবার বাধা দিতে হবে। আমাদের বিখ্যাত আমতলায় সভা করার কথা ছিল; কর্তৃপক্ষ বাধা দিলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের মাঠে মিটিং করলাম।
একদল ভাল কর্মী প্রস্তুত করে বিশ্ববিদ্যালয় গেটে রেখেছিলাম, যদি গুণ্ডারা আক্রমণ করে তারা বাধা দিবে এবং তিন দিক থেকে তাদের আক্রমণ করা হবে। যাতে জীবনে আর রমনা এলাকায় গুণ্ডামি করতে না আসে- সেই শিক্ষা দিতে হবে।
আশ্চর্যের বিষয় সরকারি দল প্রকাশ্যে গুণ্ডাদের সাহায্য করত ও প্রশ্রয় দিত। মাঝে মাঝে জগন্নাথ কলেজ, মিটফোর্ড ও মেডিকেল স্কুলের ছাত্ররা শোভাযাত্রা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে রওয়ানা করলেই হঠাৎ আক্রমণ করে মারপিট করত।
মুসলিম লীগ নেতারা একটা ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করতে চেষ্টা করছিল যাতে কেউ সরকারের সমালোচনা করতে না পারে। মুসিলিম লীগ নেতারা বুঝতে পারছিলেন না, যে পন্থা তারা অবলম্বন করেছিলেন সেই পন্থাই তাদের উপর একদিন ফিরে আসতে বাধ্য। ওনারা ভেবেছিলেন গুণ্ডা দিয়ে মারপিট করেই জনমত দাবাতে পারবেন। এ পন্থা যে কোনোদিন সফল হয় নাই, আর হতে পারে না- এ শিক্ষা তারা ইতিহাস পড়ে শিখতে চেষ্টা করেন নাই।
-------অসামাপ্ত আত্মজীবনী (১১০ পৃষ্ঠা)
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:১৪