somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের ৭ পাগলের সিলেট ভ্রমণ।

২৮ শে মার্চ, ২০১০ বিকাল ৫:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আবার আমাদের সেই ৭ জনের গল্প, বগুড়ায় যারা ২ টাকা বাঁচাতে ৩ ঘন্টা হেঁটেছিলাম।বগুড়ার কাহিনী :| এবার কাহিনী সিলেটে, রাজশাহী থেকে সন্ধ্যায় ১ টি বাস, সরাসরি সিলেট যায়। ওটায় করে গত ২১ তারিখে চলে গেলাম। আমাদের এবারের কথা ছিল অ্যাডভেঞ্চার করব, তাই কারু কাছে ঠিক মত কিছু না জেনেই চলে গেছি।:D ১১ ঘন্টা জার্নি করে সিলেট নেমে ঠিক করলাম আগে হোটেল ঠিক করব। দরগা এলাকায় থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি ততক্ষণে। যথারীতি ক্বীন ব্রীজ দেখে আমাদের মাথায় হাত, সিলেটি মানুষ এই অত্যাচার সহ্য করে চলে কিভাবেX( (ব্রীজটা এতই উঁচা যে রিকশাওয়ালা রিকশা নিয়ে উঠতে পারে না, পিছন থেকে ঠেলতে হয়, এ কারনে সিলেটে রিকশা ঠেলাও একটা আয়ের উৎস)। হোটেল ঠিক করে বিশ্রাম নিলাম ২ ঘন্টা। বিশ্রাম নিতে নিতে ঠিক করলাম আজকে শ্রীমঙ্গল যাবো। সবাই যায় মাইক্রো রিজার্ভ করে, আমরা যাবো রুট বাসে, নাইলে আর কিসের অ্যাডভেঞ্চার!B-) কদমতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে উঠলাম শ্রীমঙ্গল এর বাসে, কন্ডাক্টর বললো চৌমুহনায় নামতে হবে। চৌমুহনায় নেমে সিএনজি নিয়ে যাবো লাউয়াছড়া। উঠে পড়লাম এক সিএনজিতেই ৭ জন! B-)(ঢাকায় কেউ চেষ্টা করেছেন?) যাত্রা পথে চায়ের বাগান দেখলাম, জীবনের প্রথম, খুবই ভালো লাগছিল।:) লাউয়াছড়ায় নেমে দেখি বিশাল ইকো পার্ক (আগেই বলেছি তেমন খোঁজ না নিয়েই গেছি)। ভিতরে ঘুরতে যাবো, গেটে বলল, গাইড লাগবে? না, কিসের গাইড, আমরাই পারি! (কে দিবে গাইডকে এতগুলো টাকা!;)) ভিতরে ম্যাপ এ দেখলাম তিনটা রুট আছে ঘোরার, ১/২ ঘন্টা, ১ ঘন্টা এবং ৩ ঘন্টা। আমরা ১ ঘন্টার রুট ধরে হাঁটা শুরু করলাম। বনের মাঝে হাঁটা, ফিলিংস ই আলাদা। মাঝে ২/৩ বার পথ চিনতে সমস্যা হয়েছিল, কিন্তু আমরাই তো পারি! অবশেষে দেখি আমরা এক উপজাতীয় বাড়ীর উঠানে! সে বলল, আপনারা রুট ছেড়ে সরে এসেছেন। বোঝেন অবস্থা, সাথে খাবারও নেই, ওখানে নেটওয়ার্ক ও নেই, আর গিয়েছি হারিয়ে!:(( আমাদের যদিও উচিৎ ছিল ফিরতি পথ ধরা, কিন্তু আমাদের মাঝে পাগলামি আবার মাথাচাড়া দিল।:P জিজ্ঞেস করলাম চা বাগান কোনদিকে (ম্যাপে দেখেছি পার্ক এর এক দিকে চা বাগান)। সে নির্দেশনা দিলে আবার হাঁটা শুরু করি। আরও আধা ঘন্টা হাঁটার পর রেললাইন এর দেখা পেলাম। ওখানে আরেক উপজাতীয়কে জিজ্ঞেস করলাম চা বাগানের কথা। সে বলল রেললাইন ধরে ১ কিমি হাঁটলে চা বাগান, তার পর আরও ১ কিমি হাঁটলে স্টেশন পাওয়া যাবে, স্টেশন থেকে সিলেট এর ট্রেন পাওয়া যাবে। ১ কিমি হাঁটার পর পেলাম চা বাগান, মন তো আনন্দে উৎফুল্ল। দাঁড়িয়ে ছবিটবি তুলে একাকার অবস্থা।B-) তারপর আবার হাঁটা, ততক্ষনে প্রায় ২ ঘন্টা হেঁটেছি। তাও খুব ভালো লাগছিল। এরপরে শুরু হল দুর্গম রাস্তা, রেললাইনের উপরের পাথরের উপর দিয়ে যেতে হচ্ছে। দেড় ঘন্টা হেঁটেও আর স্টেশন পাই না। ততক্ষনে দুপাশের চা বাগান আর টানছে না। অবশেষে আরেকজনের দেখা পেলাম, সে বলল আমরা নাকি ফিনলে চায়ের এস্টেটে ঢুকে পড়েছি! ওদের ফ্যাক্টরি দেখতে চেয়েছিলাম, অনুমতি পেলাম না।/:) ততক্ষনে প্রায় ৪ ঘন্টা হেঁটে ফেলেছি। ১৪ ঘন্টা জার্নির পর ৪ ঘন্টা হাঁটা! পা খুলে যেতে চাচ্ছিল। সারাদিনে খেয়েছি ১ টি নানরুটি।:(( তাও ভাবলাম এত দূর এসেছি, নীলকন্ঠ দোকানের চা না খেলে হয়? চলে গেলাম অখানে। ৭ লেয়ারের চা এর সাথে ওদের স্পেশাল কিছু চা ছিল, খেয়ে বেশ চাঙ্গা হয়ে উঠলাম। তাই চলে গেলাম ক্ষিতিশ বাবুর চিড়িয়াখানায় (ওদিকে গেলে কেউ চিড়িয়া খানা মিস করবেন না)। সেখান থেকে হবিগঞ্জ হয়ে সিলেট। প্রথম দিন শেষেও আমাদের অ্যাডভেঞ্চারের নেশা কাটেনি…………….পরের দিন গুলো আরো সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলাম…………তবে দিন শেষে আমাদের একজনের উক্তি, ”এরপর চা বাগান দেখলে চোখ বন্ধ করে ফেলব!”X((
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×