somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জয়তু মেডিক্যাল লাইফ ইন বাংলাদেশ

১৭ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ২:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চ্যু চ্যু ডায়পারের বিজ্ঞাপন দেখছেন অথবা লাইফবয় সাবানেরটা অথবা হরলিক্সেরটা দেখলেও চলবে। প্রতিটা বিজ্ঞাপনে দেখানো হয় যে বলদ মার্কা একটা মহিলা ( আমি কাউকে ছোট করতেছি না, বিজ্ঞাপনের ধরণটাই এমন) তার বাচ্চা নিয়ে চিন্তিত। ক্যামনে লম্বা হবে, গরুর মতন মোটা হবে, মুতলে/হাগা দিলে কি হবে অথবা বৃষ্টিতে ভিজলে অসুখ ক্যামনে থামাবে ?? ঠিক এমন সময়েই দুষ্টের দমন আর শিষ্টের প্রতিপালনের মনোভাব নিয়ে ধরাধামে আবর্তন ঘটে সাদা এপ্রন পরহিত একটা মানুষের ( হয়তবা ডাক্তার বুঝাতে চাইসে !!) তিনি ঝোলা থেকে বের করে দেন বিশ্বখ্যাত ডায়পার কখনো ফিডারের নিপল সদৃশ ঢাকনা, কখনো লাইফবয় সাবান আর কখনোবা হরলিক্সের অসম্ভব শক্তিধর কৈাটা !! এবার বাচ্চার মুতা/হাগা/লম্বা/মোটা/ অসুখ মুহূর্তেই সেরে যায়। আমি বুঝি না ক্যাম্নে এই মানুষগুলা ব্যাগে ঐসব নিয়ে হাটে। একবার ভাবেন তো ত্রিশোর্ধ একটা মানুষ ব্যাগে ডায়পার/ সাবান এইসব নিয়ে ঘুরতেছে আর খুজতেছে কার পথের মাঝখানে এই অদ্ভুত সমস্যা হইতেছে। জাতি হিসেবে বাঙালি আমুদে জানতাম, তাই বলে আমুদেরা আহাম্মক হয় এটা বুঝা আমার সাধ্যির বাইরে। হয়ত আমাকে মা কোলে নিয়ে ঘুরার সময় হরলিক্সওয়ালা ব্যাটারে পাই না, তার ল্যাবেও যাইতে পারে নাই। আর তাই আ্মার বুদ্ধির বিকাশ ঘটে নি, হই নাই taller, sharper আর stronger
এই সব বিজ্ঞাপন দেখে ফরমালিনমুক্ত আমজনতা ধরে নিছে সাদা এপ্রন পরহিত লোকদের মতই ডাক্তারাও বুঝি এমন। ব্যাগে ডায়পার/ হরলিক্সের ডিব্বা নিয়ে ঘুরে। তাই তারা মনে করে ডাক্তারি করা এমন আহামরি কি?? আমি তাদের পক্ষে সাধুবাদ জানাই, শুভাশিস দিয়ে তাদের পক্ষে আজ একটু সাফাইও দিতে চাই।
একদল মহাজ্ঞানী মানুষ আছে যাদের কাজ সারাদিনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য/ছবি শেয়ার করে মানুষকে উদ্ধার করা। যেমন গ্লাস ক্যাম্নে ধরে পানি খাওয়া উচিৎ, কোন ফল বাথরুমে যাওয়ার আগে খাওয়া উচিৎ, কোন মৌসুমে কোন সব্জির রস মুখে লাগাতে হবে, রসুনের কোয়া খেলে যে ৯৯ তা লাভ হয়, পিয়াজ কেন শক্তিবর্ধক, কি খাইলে যন্তপাত্তি দাঁড়াবে
ব্লা ব্লা ব্লা...
এই ব্যাপারগুলাই মানুষ মেডিক্যালের উপজীব্য বলে ধরে। কেননা সবই স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা বার্তা। তাই এইদেশে ডাক্তার হয় উপেক্ষিত
সাধারণ মানুষ তো ভুল করতেই পারে। কিন্তু অসাধারণগুলা ক্যাম্নে করবে। এবার ডাক্তারদের নিয়ে কিছু বলতে চাই। এই দেশে মেডিক্যাল সিস্টেম এমন করছে যে নিজের পাশ- ফেল ছাড়া অন্যকিছুই ভাবার সুযোগ নাই। mbbs করার পর fcps পর্ব ১ এর জন্য সবাই এমন লাফায়ে পড়ে যে নিজেরদের কিছু দাবি-দাওয়ার কথা মুখে আনতেও নারাজ এই জাতি। এই সুযোগে তাদের বিনা বেতনে কাজ করানোর অঙ্গিকারনামায় স্বাক্ষর নিয়ে নেওয়া হয়। হ্যামিলনের বাশিওয়ালা গল্পের মতন সবাই পরীক্ষা দিতে ইদুরের মত লাফ দেয়, মোহাবিষ্ট হয়ে ডিগ্রী লাভের আশায়। খালি মনে রাইখো যে বাশিওয়ালা নিজের প্রাপ্য না পেয়ে শহরবাসী বাঁশ মারছিলো। আমারতো দৃঢ় বিশ্বাস প্রাইভেট হাসপাতালগুলা এমন ব্যবস্থা করে রাখছে যাতে সরকারি হাসপাতালে মাগনা খাটানো যায় এবং দিন শেষে ক্লান্ত মানুষগুলো নামে মাত্রমুল্যে আয়াগিরি করে ওদের হাসপাতালে। আর এভাবে মানুষকে ঠকিয়ে তারা হাতিয়ে নেই মোটা অঙ্কের টাকা। ডিগ্রীর প্রত্যাশায় চুপচাপ এরাও খেটে যায়। ঘাম ঝরে তবুও দাবি নিয়ে কথা বলার সুযোগ নাই। এতদিন বড় স্যারদের আশায় ছিলাম। কোন না কোন একদিন তারা হয়ত এই দুস্থদের নিয়ে কিছু বলবেন। কিন্তু তারাও ...... তারাও কষ্ট করে আসছেন, স্বভাবতই চাইবেন না কেউ এই সময়টা ওদের দাবিগুলো আদায় করে নিক। অবহেলিত হয় মানবতা। তাই ৮/৯ বছর প্রায় বিনে বেতনে খেটে ডাক্তারি তখন মানবতার জন্য না হয়ে এইদেশে স্রেফ পয়সার জন্য হয়
অথচ বাইরের দেশগুলো ডাক্তারের আর্থিক নিশ্চয়তা দিয়ে কেবল পড়াশুনার জন্য পরিবেশ তৈরি করে দেয়। আমার দেশের মত তাদের বেলায় মেধাবীগুলো শুধুমাত্র অনিশ্চয়তার জন্য এই পথে পা মাড়ায়ও না
দোষ কার ?? সরকারের নাকি সাংবাদিকের নাকি সাধারণ মানুষের নাকি ডাক্তারদের নিজের?? আমার মতে কারোই না। দোষ এই system এর। কোনদিনও কি এটা পালটাবে না।
সামনে মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা আসন্ন। কিছু ছেলেমেয়ে খুব সাধ করে আসবে মানুষ সেবার আন্তরিক মনোভাব নিয়ে। পরিক্ষার আগে প্রশ্ন খুব অদ্ভুত ভাবে ফাঁস হয়ে গলা টিপে হত্যা করবে কিছু অসম্ভব মেধাবিদের। যারা আসবে system এর যাতাকলে পড়ে খুইয়ে ফেলবে তুচ্ছ মানবিকতাও। এই জুলাই মাসে আছে fcps পরীক্ষার চাপ। কিছু স্বপ্নপূর্ণ হবে, কিছু চাপা অভিমান হিসেবে থেকে যাবে।
সবার উপরে থাকবে এতদিন বঞ্চনার স্বীকার হওয়া মানুষগুলোর প্রতিশোধ পর্ব। আবারো মানুষগুলো, মানবিকতা ধূলিসাৎ হবে। কেউ ডুকরে ডুকরে কেঁদে উঠবে আর কেউ অন্যকে ডুকরে ডুকরে কাঁদাবে। আর আমি কেবল ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকবো ......
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×