তরুন প্রজন্ম আজ শাহবাগ স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে রেখেছে। ভাল, এর ফলে অন্তত আমরা এতটুকু বলতে পারিযে আমাদের তরুণ প্রজন্ম অনেকটাই রাজনীতি সচেতন। তাদের বিরাট একটা অংশের উপভোগ, ফান ও প্রেম কেন্দ্রিক জীবন যাপনের কারণে এতদিন আমাদের অনেকেরই ধারণা ছিল যে তারা পৃথিবীর রাজনীতিক অবস্থা সম্পর্কে অনেকটাই অজ্ঞ। সেই ধারণা এখন ভেঙ্গে গেল।
তবে আমার মনে এই আন্দোলনের ফলে কিছু প্রশ্ন জেগেছে। তাদের মূল দাবি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। এ নিয়ে কিছু বলার নেই। তবে মিডিয়াগুলোর মাধ্যমে আরো জানা যাচ্ছে যে তরুণ প্রজন্ম আজ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জেগেছে। এই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়েই আমার প্রশ্ন।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিষয়টা আামার কাছে কিছুটা ধোঁয়াটে মনে হয়। টিভি টকশো, পত্রিকার সম্পাদকীয়, কলাম ইত্যাদিতে আমরা বারবার এই শব্দযুগলের ব্যবহার দেখি। কিন্তু এর ব্যাখা আমরা তেমন দেখিনা। সেখানে বার বার উঠে আসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়ার কথা। কিন্তু কোন বিষয়কে এই চেতনা ধারণ করে আছে তা উঠে আসে না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কথাটি আরো সুষ্পষ্টভাবে সংগায়িত হওয়া দরকার।
আমরা ইতিহাসের থেকে যতটুকু জানতে পারি যে মূলত পশ্চিম পাকিস্তানের অর্থনৈতিক বৈষম্যের প্রতিবাদের ফলে ধীরে ধীরে আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাই। তার মানে কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মানে বৈষম্যহীন অর্থ ব্যবস্থা? যদি তাই হয় তবে এই অর্থ ব্যবস্থা কিভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে? শাহবাগ আন্দোলনে সমাজতান্ত্রিকদের নেতৃত্বে দেখে মনে হচ্ছে যে তাঁরা এই অর্থনৈতিক সাম্য সমাজতান্ত্রিক পদ্ধতিতে প্রতিষ্ঠিত করতে চান। তাহলে কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলতে সমাজতন্ত্রকে ইংগিত করা হচ্ছে? এই বিষয়টি পরিষ্কার হলে আন্দোলনরতরাও বুঝতে পারবে তারা আসলে কোন ধরনের দেশ গড়ার শপখ নিয়ে পথে নেমেছেন।
আমি কিছুটা অন্ধকারে আছি এই বিষয়ে। আশা করি শাহবাগ আন্দোলনের অনেক সক্রিয় নেতা কর্মী ব্লগে আছেন। তাঁদের থেকে সুচিন্তিত মতামত আশা করছি।