somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কসাইনামা-২

১৭ ই জুলাই, ২০১২ রাত ৮:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ধারাবাহিক কসাই আপডেট।

"এখন পর্যন্ত যে সকল নাদান আমাকে এই কথা বলেছে এবং ভবিষ্যতেও বলবে যে ‘পাবলিকেরটাকায় পড়াশোনা করেছো, তাই এই পাবলিকের জন্য নিজের জীবন যৌবন উৎসর্গ করে দিয়ে তোমাকে অজ পাড়া গাঁয়ে পড়ে থাকতে হবে’ তাদেরকে বলছি - পাবলিক তো তোমাকেও পড়ানোর জন্য টাকা নিয়ে বসেছিল! তুমি কেন আসলে না পড়তে? হেডঙে কুলায়নি? আর তাছাড়া আমি পাবলিকের টাকায় পড়িওনি। আমার বাবা বিগত বিশ পঁচিশ বছরে যে পরিমান অর্থ কর দিসেবে রাষ্ট্রকে দিয়েছে সে পরিমান টাকায় আমার নিজের মেডিক্যাল পড়ার খরচ তো দূরের কথা সাথে আরও দুজন শিক্ষার্থীর পড়াশোনার খরচ হয়ে যাবে। তাই বলতেই হচ্ছে যে আমি তো আমার বাপের টাকায় পড়েছি অবশ্যই সেই সাথে আমার বাপ আরও দুজনকে পড়িয়ে ডাক্তার বানিয়েছে!
সরকার আমাকে ঘর থেকে আতু আতু করে ডেকে নিয়ে মেডিক্যালে ভর্তি করে নেয়নি, দেশের সবচেয়ে মেধাবী আঠারো হাজার শিক্ষার্থীর সাথে যুদ্ধে অংশ নিয়ে আমি যখন প্রথম এক হাজারের ভিতরে থেকে নিজেরযোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছি তখনই সরকার আমাকে ভর্তি করেছে। আর এরজন্যে কোচিং সেন্টারের যে পরিমান বিল আমার বাবাকে কেবল আট মাসে গুনতে হয়েছে সে টাকা দিয়ে তোমাদের মত বহু নাদানের আট বছরের কলেজ খরচ চালানো যাবে।
খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা এই কয়েকটি মানুষের মৌলিক অধিকার। প্রথম তিনটির কথাই আগে বলি। এগুলোর একটাও কি তোমরা মাগনা পাও কোথাও? পাওনা তা তো জানি কিন্তু সেজন্য কি কারো কাছে যেয়ে নালিশ করার সুযোগ পাও, সেটাও পাওনা! তাহলে লিস্টের একদম শেষেরটি (চিকিৎসা) নিয়ে তোমাদের এতো ঘেউ ঘেউ কেন? চুরি চামারি করতে যেয়ে মারখেয়ে যখন কোঁকাতে কোঁকাতে হাসপাতাল যাও তখন ডাক্তার আসতে এক মিনিট দেরি হলে তার গায়ে হাত তুলতে দ্বিধা করনা অথচ থানায় যেয়ে মামলা করতে তো হাবিলদারের তিন পা একসাথে জড়িয়ে ধরে পড়ে থাকো! তোমার ঘরে যখন খাবার থাকে না তখন কি খাদ্যমন্ত্রীকে পেটাতে যাও? যখন গায়ে দেয়ার মত ভাল কোন কাপড় থাকে না তখন কি কাপড়ের দোকানদারকে ধরে মার লাগাও?
তোমরা যদি পাঁচ নাম্বার মৌলিক অধিকার নিয়ে এতো হম্বি তম্বি জবরদস্তি শুরু করতে পার তাহলে আমিও বলতে পারি চিকিৎসার আগে যে শিক্ষার প্রসঙ্গ আসে সেটা নিয়ে। রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকের যোগ্যতা অনুযায়ী শিক্ষার ব্যবস্থা করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। তোমরা যেমন হাসপাতালে যেয়ে সেটা নিজের বাপ দাদার সম্পত্তি মনে কর, সবকিছুই নিজের পাওনা অধিকার মনে কর তেমনি এই শিক্ষার সুযোগটাও নাগরিকদের অধিকার, রাষ্ট্রের কাছ থেকে এটি পাওয়ার অধিকার আমারও আছে! তদুপরি আমি এটা যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েই নিচ্ছি, ভিক্ষা হিসেবে না।
তাই একসময় মেধা ও যোগ্যতার প্রতিযোগিতায় হেরে গিয়ে দেশের অসংখ্য নিম্ন মানের জগা বাবুর পাঠশালায় দীক্ষা নিয়ে যারা National University’রছাত্র বা ছাত্রী বলে ঠাট দেখাও এবং যারা নিজেদের মোটা মাথাখানা নিয়ে কোনরকম সুবিধা করতে না পেরে অবশেষে পিতার মোটা মানিব্যাগখানার কল্যাণে কলিমুদ্দির চায়ের দোকানের পাশে বা কোন রিকশা গ্যারেজের উপর দুইখানা কামরা ভাড়া নিয়ে গজিয়ে ওঠা নামকাওয়াস্তের কোন প্রাইভেট ভার্সিটি থেকে ডিগ্রি (?) নিয়ে বড় বড় বুলি ঝাড়তে আস তাদের প্রতি আমার একটাই কথা- বাবারা যাও, ঘ্যানর ঘ্যানর না করে নিজ বাড়ির উঠোনে আরাম করে বসে নিজের গুপ্তকেশ আলগা কর আর সেগুলো দিয়ে আঁটি বাঁধো! সেটাই সবার জন্য মঙ্গল। নইলে এই তোমাদের মত পতিত পোলাপাইন গুলাই যখন বিসিএস নামক উদ্ভটতম এক পরীক্ষা দিয়ে সচিব, ডিসি, এসপি এসব হয়ে দেশের হোমড়া চোমড়া বনে যাও তখন দেশমাতৃকা নীরবে চোখের জল ফেলে! বিশ্বাস হয়না আমার কথা? তাহলে চোখদুটি পুরোপুরি খুলে ভাল করে তাকিয়ে দেখো একবার আজকের বাংলাদেশকে! শিক্ষক,ডাক্তার, ইঞ্জিয়ার বা বিজ্ঞানীদের কারনে দেশের আজ এই জরাজীর্ণ অবস্থা হয়নি হয়েছে তোমাদের মত গাধাগুলো দিয়ে হাল চাষ করতে যেয়ে! যেদেশ মেধার মূল্যায়ন করে না সে দেশের অদুর ভবিষ্যৎ নিঃসন্দেহে অন্ধকার। তবুও যদি মনে হয় যে এভাবেই গায়ের জোরে আমাদেরকে দিয়ে কাজ করিয়ে নিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে থাকবে তবে জেনে রাখো সেদিন আর খুব বেশি দূরে নয় যখন পশ্চাদ্দেশে ফোঁড়া নিয়ে ব্যাথায় কোঁ কোঁ করবে কিন্তু চিকিৎসা তো দূরের কথা গালাগাল দেয়ার জন্যেও দেশে কোন ডাক্তার পাবেনা! এটা কোন অভিশাপ না, এটাসতর্কতা।
যারা আমাকে জানেন তারা আশা করি বুঝবেন আমি কেন এমনটা লিখলাম। কাউকে অন্যায়ভাবে তাচ্ছিল্য করা আমার লেখার উদ্দেশ্য নয়। তারপরেও আমার কথায় যার বাযাদের জ্বলুনি হবে বুঝে নেবেন কথাগুলো আপনাকে উদ্দেশ্য করেই বলা। বিভিন্ন পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে যখন ডাক্তারবিষয়ক কোন খবর পেলেই ‘কসাই, কসাই, কসাই’ বলে গণহারে ঘেউ ঘেউ শুরু করেন তখন সুস্থ ভাষায় তার প্রতিবাদ করলেও তো পত্রিকাওয়ালারা সেটা ছাপায় না তাই কি আর করা? উচিৎ কথা যা বলার এখানেই বলতে হল।"

মূল লেখকঃ সাইফুল ইসলাম
২২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×