somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কসাইনামা-৩

১৯ শে জুলাই, ২০১২ রাত ১০:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


"বিয়ার গ্রিলস, নামটা অনেকেরি পরিচিত।ডিস্কভার ি চ্যানেলের " ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড" সিরিজের দ্বারা গ্রিলস এখন ব্যাপক জনপ্রিয় একজন লোক। তবু আমাদের ভিতর থাকা সুস্থ মস্তিষ্কের মানুশজন বিয়ার গ্রিলস এর কাজ কর্ম দেখে নাক সিটকাবেন,অসুস্থ আমারাই কেবল তার কার্যকলাপ উপভোগ করি। জঙ্গলের বিভিন্ন পকামাকড় ধরে জ্যান্ত খেয়ে ফেলা, ৫ দিন আগে মরা পশুর মাংস কাঁচা খাওয়া, শুঁক কীটএর মাথা ফেলে দিয়ে তার ভিতরের তরল হলুদ পদার্থ কপকপ করে খাওয়া কিংবা বিরূপ পরিবেশে বেঁচে থাকার তাগিদে নিজের মুত্র নিজে পান করার মত ভয়ঙ্কর কাজ,বিয়ের গ্রিলস করে ফেলত নিমিষেই।প্রথমদি কে এই সিরিজটা দেখতে গাগলাত,এখন বেশ উপভোগ করি।ছোটবেলাতে ভাতের প্লেটে একটা পিঁপড়া কিংবা পোকার মরদেহ খুঁজে পেলে আর ওই প্লেটের ভাত খাওয়য়া হতো না ঘেন্নায়।এই নিয়ে আম্মুর বকা খেতে হতো নিয়মিত।বিয়ার গ্রিলস এর শোদেখের পর থেকে এখন আর ঐসব ছোটখাটো প্লেটে থাকা পকামাকড় দেখে গা রিরি করে উঠে না,বরং পিউর প্রোটিন ভেবে চোখ বন্ধ করে গলধকরন করে ফেল
ফাস্ট ইয়ারে থাকাকালিন ডেমো ক্লাসগুলোতে নিয়মত ফর্মালিনে চুবানা কেডাভার (মানুষের মরদেহ) খালি হাতে ধরা লাগতো।ডেমো ক্লাস শেষ করে যখন কাফেটরিয়াতে খেতে আসতাম তখন সেই ফর্মালিন মাখা হাত শুকিয়ে গেছে তাই আর হাত ধোয়ার কথা মনে থাকত না।দুইটা সিঙ্গাড়া পেটে যাওয়ার পর হঠাৎ যখন মনে পরত তখন আর কিছু করার থাকত না, ঘেন্নাতে চোখ মুখ কুচকে থাকতাম কিছুক্ষণ।আমাদের হোস্টেল এর পানির টাঙ্কি মনে হয় ৫ বছরে একবার পরিষ্কার করা হতো। যথারীতি গোসল করারচো) পরম আবেগে আমাকে জড়িয়ে রেখেছে।
ইন্টার্ন থাকাকালিন, সার্জারি ওটি তে একদিন এক ইন্টেস্টাইনাল অবস্ট্রাক্সান এর রোগীর পেট কেটার পর দেখা গেল , তার পুরা পেরিটনিয়াম জুড়ে ফিকাল মেটার(পায়খানা) ছড়িয়ে আছে,কিছু মল এর দানা আবার গাট আর সাথে আষ্টেপৃষ্ঠে লেগেআছে। আমদের বিভাগীয় প্রধান স্যারকে দেখলাম খুব যত্ন সহকারে সেই মানব মল মপ দিয়া ঘষে ঘষে পরিষ্কার করছে। থার্ড আসিস্টান্ট হিশবে মপ চাপতে চাপতে সেইদিন আমার অবস্থা কাহিল হয়ে গেছিল। ওয়ার্ড এর সেলুলাইটিসের একজন রোগীকে প্রতিদিন ড্রেসিং করা লাগতোটার ক্ষতস্থান থেকে আশা দুর্গন্ধতে আসে পাশে থাকা আত্মীয় দৌড়ে পালাত আর রোগী নিজেই মুখে কাপড় জড়িয়ে রাখত গন্ধ থেকে বাঁচার জন্যে।বড়ই অদ্ভুত ব্যাপার, আমার নাকের আল্ফাক্টরি নার্ভে হয়তো সমস্যা ছিল তখন।
.আমার এক বন্ধু গাইনি ওয়ার্ডে থাকাকালিনডেলিভারি করেতে যেয়ে এমনিয়তিক ফ্লুইড চোখে মুখে মাখিয়া ফেলেছিল,এটা নিয়ে ব্যাপক হাসাহাসি।পরদিন আমি তাকে উৎসাহ দিতে বললাম" বন্ধু,তুমিতো আগের চেয়ে ফর্সা হয়ে গেছ,এখন থেকে নিয়মিত লেবার রুমে তোমাকে দেখতে চাই" . এত হেনস্তা হয়ের পর ভাবছিলাম ওকে আর ডেলিভারী রুমে দেখবো না,কিন্তু পরদিন থেকে সে আরও উৎসাহ নিয়ে বাচ্চাগুলাকে পৃথিবীর মুখ দেখাতো,তবে এবার একটু সতর্কতার সহিত।মানুশজন নিজের মল মুত্র ঘেন্না করে আর আমাদের স্যার ম্যাডামদের দেখতাম দিব্যি অপেরাসান টেবিলে রোগীর মল্মুত্রপরিষ্কার করতে।ওখানেত আর সুইপের ঝাড়ুদার পাওয়া যায় না।এই সব কথা শুনে আম জনতা ভাবে আমারা ডাক্তার রা বিয়ের গ্রিলস এর চেয়ে বড় খবিস,অসুস্থ পক্রিতিরলোক।বিয়ার গ্রিলস নিজে বেঁচে থাকার তাগিদে নোংরা জিনিস নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করে।আর আমারা আরেকজনের বেঁচে থাকার তাগিদে তার নোংরা ঘাঁটি।"

সৌজন্যেঃ চিকিৎসক সমাচার
৭টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×