তখন পঞম বা ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ি। ঠিক মনে পড়ছে না সময়টা। বয়স যে বাড়ছে সেটাই জানান দিচ্ছে বেইমান স্মৃতিশক্তি। তো পঞম বা ষষ্ঠ শ্রেণীতে (অন্য কোনটাও হতে পারে) পাঠ্যবইয়ে একটা কবিতা পড়েছিলাম। কবিতার নাম "শিক্ষা গুরুর মর্যাদা"। বাদশাহ আলমগীর আর তার পূত্রের শিক্ষকের গল্প। গল্পটা এমন- একবার বাদশাহ আলমগীর (সম্রাট শাহজাহান-এর পূত্র আওরঙ্গজেব) তার পূত্রের কক্ষের পাশ দিয়ে যাবার সময় লক্ষ্য করলেন তার পূত্রের শিক্ষক অজু করছেন আর একটা পানির পাত্র নিয়ে শিক্ষকের অজুর পানি ঢালছেন তারই পূত্র যে কিনা দিল্লির ভবিষ্যৎ অধিপতি (সম্ভবত;- এই মুহুর্তে মনে পড়ছে না)। বাদশাহ যে এই ঘটনা দেখে ফেলেছেন এইটা আবার শিক্ষক মহদয় টের পেয়ে গেলেন। পরদিন প্রতিক্ষিত ডাক পেলেন স্বয়ং বাদশাহ থেকে। শিক্ষক ও ঠিক করে ফেল্লেন মায়া ভরা প্রাণের চেয়ে সাদামাটা সম্মানটা অনেক বড়। জীবনের সাথে বোঝাপড়াটা শেষ করে হাজির হলেন বাদশাহ্র শাহী দরবারে। আর বাদশাহ্- আহা বাদশাহ্- শিক্ষকের প্রতি অভিমান তার ঠিকই তবে কারনটা ভিন্ন। কেন তার ছাত্র থাকার পরও তাকেই কষ্ট করে পা ধুতে হবে? তাহলে তার ছাত্রকে আর কি শিখালেন যদি না শেখাতে পারেন শিক্ষকের মর্যাদা?
বাদশাহ আলমগীরের আমল গত হয়ে গেছে। ম্যাটার অভ ফ্যাক্ট এখন আমরা গণতন্ত্রে বাস করি। এখন ক্ষমতায় যে থাকে তাকে বাদশাহ বলে না বলে সরকার। বাদশাহ আলমগীরের মত ভূল সরকার করবে না। তাই তার সন্তানদের শিক্ষা ব্যাবস্তাটাও হবে বিপরীত। আর এই সত্যটা যারা মানতে পারছেন না তারা এখনও মুঘল আমলে বাস করছেন। প্লীজ ফর গড্স সেক, ওয়েক আপ!!
আর হা, পাঠ্যবইয়ে এরকম বস্তা পঁচা অবাস্তব একটা কবিতা দিয়ে আমাদের প্রজন্মকে দিকভ্রান্ত করার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১:৩৬