somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাতৃস্নেহ ❤

২৪ শে জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সন্তান জন্ম দিলেই যেমন কেউ মা হয়ে যায় না, আবার মা হওয়ার জন্য সন্তান জন্ম দেয়ারও প্রয়োজন পরেনা।  'মা' না হয়েও আমার দেখা অনেক মায়ের মাঝে দুজন মায়ের গল্প বলছি।

#মাতৃস্নেহ_১
২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল রাত ১১.৩৫। হুয়া হিন সিক্সেস ক্রিকেট টুর্নামেন্ট খেলতে আসা খেলোয়াড় ও অফিসিয়ালসদের জন্য নির্ধারিত বারটিতে দাঁড়ানোর জায়গাও তেমন নেই। কারন টি২০ বিশ্বকাপের শেষ উত্তেজনা চলছে। এমনিতে আমি কখনই ডিস্কো কিংবা বারে যাইনা। লাউড সাউন্ড আর সিগারেটের ধোয়া আমার অসহ্য লাগে। কিন্তু হোটেলের টিভিতে খেলা দেখা যাচ্ছিলনা বলে বারের সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে খেলা দেখছিলাম। বারের বারান্দায় বসে একজন অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারের বন্ধবী এলকোহল পান করছিলেন। চল্লিশোর্ধ বয়স হবে। বারটিতে ৭/৮ বছরের একটি থাই বালক ফুল বিক্রির চেষ্টা করছিল। খেলা দেখা, মদ্যপান আর লাউড মিউজিকের কারনে সেই ছোট্ট ছেলের আকুতি কেউ শুনছিলনা। মহিলাটি ছেলেটিকে কাছে ডেকে নিলেন। তার সব ফুলের দাম দিয়ে ফুলগুলো নিয়ে নিলেন। স্যামুয়েলসদের বিশ্বজয় সুতোয় ঝুললেও ছেলেটির চোখমুখে তখন বিশ্বজয়ের আনন্দ। মহিলাটি ছেলেটিকে কোলে নিয়ে আদর করে আবার ফুলগুলো ফেরত দিয়ে বাড়ি চলে যেতে বললেন। মহিলাটি যখন বাচ্চাটিকে আদর করছিল তখন দুজনের চোখেই আমি জল দেখেছি। হটাৎ খেয়াল করলাম আমার চোখের কোনেও জল। আমার ইচ্ছে হচ্ছিল এক দৌড়ে দেশে আমার মায়ের কাছে ছুটে যাই। মহিলার মাঝে আমি এক শাশ্বত মাকেই খুঁজে পেলাম। বারে বসে মদ্যপানরত কারো মাঝে মাকে দেখতে পেলে কেউ কেউ হাসবেন আমি জানি। তবুও...............


#মাতৃস্নেহ_২
২০১৭ সালের আগষ্টের কোন এক সন্ধ্যায় পুরনো কোলকাতার ব্যস্ত সড়কের গল্প। টিপটিপ বৃষ্টির ধারায় হেঁটে চলেছি মির্জা গালিব স্ট্রিট ধরে মারকুইস স্ট্রিটের দিকে। অনেকেই ছাতা মাথায় দিয়েই হাটছে। গরপরতা বৃষ্টি বলে আমি ভিজতে ভিজতেই হাঁটছি। মারকুইস স্ট্রিট যেখানে এসে সদর স্ট্রিটে মিলেছে সেখানে একটি পরিবার ফুটপাতে বাস করে। অন্তত আমরা যে কদিন ছিলাম তাদেরকে সেখানেই দেখেছি প্রতিদিন। হাটতে হাটতে মারকুইস ষ্ট্রিট পার হয়ে বায়ে মোড় নিয়ে সদর ষ্ট্রিটে ঢুকবো এমন সময় ফুটপাতের সেই পরিবারটিকে খেয়াল করলাম। আসলে রাস্তার পাশের সুন্দর সুন্দর শোরুমের চেয়ে পথের মানুষগুলো আমাকে বেশি টানে। দেখার চেষ্টা করি মানুষের জীবনযাত্রা, তাদের বেঁচে থাকার সংগ্রাম। পরিবারটিতে ছোট দুটি শিশু আছে প্রায় কাছাকছি বয়সের। দেড় কি দু বছরের ছোট-বড় হবে। দুটো বাচ্চাই একসাথে কাঁদছে। ‘মা’ একা দুজনকে সামাল দিতে পারছেন না। হাতে দুধের বোতল নিয়ে শিশু দুটোর দিকে কিংকর্তব্যবিমূর হয়ে তাকিয়ে আছেন। এসময় এক অদ্ভুত দৃশ্য দেখলাম। এক শেতাঙ্গিনী এসে মায়ের হাত থেকে দুধের বোতল নিয়ে নিজেই ছোট শিশুটিকে কোলে তুলে নিলেন। এরপর ফুটপাতে বসে পড়ে নিজেই ছোট শিশুটিকে খাওয়াতে লাগলেন। কি পরম মমতায় শিশুটিকে খাওয়াচ্ছিলেন তিনি। চোখে পানি চলে এলো। বুড়ো বয়সে কান্নার লজ্জা থেকে আমাকে বাঁচিয়ে দিলো বৃষ্টির জল। এর আগেও আমি শ্বেতাঙ্গিনীদের মমতাময়ী রূপ দেখেছি। ভাবছিলাম আমারা কি কখনোই এভাবে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারবো?

৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×