এক বিশাল রসুই ঘরে নানারকম বাহারি তৈজসপত্রের সাথে ছিল একটি শিলপাটা। প্রতিদিন সকালে রধুনীরা সবার আগে এই শিলপাটার খোঁজ করতো। রান্নাঘরের একমাত্র তারই রোজ কাজের জন্য ডাক পড়তো। এত কদর থাকা সত্বেও এই শিলপাটার সবসময় মন খারাপ থাকতো। সে তার অমসৃন ত্বকের জন্য নিজেকে অভিশপ্ত ভাবতো। প্রতিদিনই সে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করতো তার শরীর যেনো চীনামাটির বাসনগুলোর মত মসৃন হয়ে যায়। দেখতে দেখতে একদিন শিলপাটার অমসৃন গা ঠিকই মসৃন হয়ে গেলো। সুন্দর চকচকে শরীর নিয়ে সে খুবই খুশি ছিলো। কিন্তু সে খেয়াল করলো আগের মত আর বাজার এলেই তার খোঁজ করেনা কেউ। অনাদর অবহেলায় সে দিনের পর দিন ঘরের এক কোনে পড়ে রইলো। এরপর একদিন বাড়ির বাইরে থেকে হাঁক শোনা গেলো, “এই শিলপাটা শান করাবেন?” আগে যে হাঁক শুনলেই শিলপাটার রাগ হতো আজ তার কন্ঠ শুনেই মন আনন্দে নেচে উঠলো। শিলপাটার শরীরে আবার আগের মত অমসৃন খাঁজ কেটে দেয়া হলো। এরপর যথারীতি আগের মতই যত্ন আর কদরে থাকতে লাগেলো সে।
আমরা অনেক সময় নিজেকে অন্যের মত করে দেখতে চাই। কিন্তু বুঝতে চাইনা আমি যেভাবে থেকে গুরুত্বপূর্ণ আছি সেটাই আমার জন্য ভালো। অন্যের মত হতে গিয়ে আমাকে হয়তো মূল্যহীন হতে হবে। আর আমার গায়ে শক্ত হাতুড়ির আঘাত করার মানেই ক্ষতি করা নয়। হয়তো এভাবেই কেউ আমাকে ব্যবহার উপযোগী করে তোলে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৮