somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুজিব চিরঞ্জীব

১৫ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ১২:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"নরহত্যা মহাপাপ, তার চেয়ে পাপ আরো বড়
করে যদি যারা তাঁর পুত্রসম বিশ্বাসভাজন
জাতির জনক যিনি অতর্কিত তাঁরেই নিধন।
নিধন সবংশে হলে সেই পাপ আরো গুরুতর। "
- অন্নদাশঙ্কর রায়

একটি দুটি নয় ২৬ টি তাজা প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল ক্ষমতালিপ্সু হায়েনারা। যে মানুষটির ১৪ টি বছর অন্ধকার কারাগারে কেটেছিল একটি স্বাধীন ভূখন্ড ও লাল সবুজের পতাকা দেবার জন্য সেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন কালো অধ্যায় আর নেই। ১০ বছরের মাসুম বাচ্চা শেখ রাসেলের 'মায়ের কাছে যাব' আর্তনাদও হায়েনাদের মন গলাতে পারে নি । সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় এতোগুলি মানুষ মেরে ফেলার পর তার বিচারের পথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। বিচারহীনতার সংস্কৃতির সূচনা হয়েছিল ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের মতো কালো আইনের মাধ্যমে।

১৯৭৫সালে ২৬ সেপ্টেম্বর দিনটি ছিল শুক্রবার, অবৈধ ও স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক আহমেদ ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ- ৫০/১৯৭৫ জারি করে। অধ্যাদেশটিতে দুটি ভাগ রয়েছে

★ প্রথম অংশে বলা হয়েছে ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট ভোরে বলবৎ আইনের পরিপন্থী যা কিছুই ঘটুক না কেন, এ ব্যাপারে সুপ্রীম কোর্টসহ কোন আদালতে মামলা, অভিযোগ দায়ের বা কোন আইনী প্রক্রিয়ায় যাওয়া যাবে না।

★ দ্বিতীয় অংশে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি উল্লিখিত ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে যাদের প্রত্যয়ন করবেন তাদের দায়মুক্তি দেয়া হলো।

# দালাল আইন বাতিল কারাগারে আটক ও দণ্ডিত সকল যুদ্ধাপরাধীকে ছেড়ে দেয় মেজর জিয়া , ’৭৬ সালে সেকেন্ড প্রক্লেমেশন অর্ডার নং-৩/১৯৭৬ জারি করে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি করার লক্ষ্যে সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদের শর্তাবলী তুলে দেয়। সেকেন্ড প্রক্লেমেশন ঘোষণা জারি করে সংবিধানের ১২২ অনুচ্ছেদ তুলে দিয়ে দালালদের ভোটার হওয়ার সুযোগ দেয়। প্রক্লেমেশন অর্ডার নম্বর-ক ১/১৯৭৭ জারি করে দালালদের সংসদে নির্বাচিত হওয়ার লক্ষ্যে সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের কিছু অংশ তুলে দেয়। প্রক্লেমেশন অর্ডার নম্বর-১/১৯৭৭ দ্বারা সংবিধানের ১২নং অনুচ্ছেদ তুলে দিয়ে দালালদের রাজনীতি করার সুযোগ দেয়।

১৯৭৭ সালে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতি সায়েমকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে মেজর জিয়া। পরবর্তীতে সামরিক ফরমান বলে হ্যাঁ না গণভভোটের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। রাষ্ট্রপতি হয়েই শহীদের রক্তে লেখা সংবিধান সংশোধন করে চতুর্থ তফসিলে ইনডেমনিটি অর্ডিনেন্স সংযুক্ত করে বঙ্গবন্ধুর খুনীদের সুরক্ষা দেন। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর ঘাতকদের বিচারে সোপর্দ না করে রাষ্ট্রীয়ভাবে পুরস্কৃত করে। ১২ জন ঘাতককে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দেয়।

ইতিহাস থেকে এসব কখনোই মুছে যাবে না। বঙ্গবন্ধু তনয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা শোককে শক্তিতে পরিণত করে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাকে গড়ে চলেছেন। পিতা হত্যার বিচার যেমন করেছেন। ভুলে যান নি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে। হায়েনারা সফল হয় নি। মুজিবের দৈহিক মৃত্যু হলেও তিঁনি আমাদের মাঝে বেঁচে আছেন, বেঁচে আছেন লাল সবুজের পতাকা ও আমাদের স্বাধীন মানচিত্রের মাঝে। আবারও জোর দিয়ে বলতে চাই- ঘাতকরা হয়নি সফল; মুজিব চেতনায় জাগ্রত, হৃদয়ে স্পন্দিত, শোকাহত-প্রতিবাদী-মুজিব বিপ্লবী জনতা কোটি কোটি। মুজিব মরেনি; মরতে পারে না; শতবর্ষে শেখ মুজিব শতকোটি গুণ শক্তিশালী। প্রকৃতপক্ষে, ঘাতকরা বুঝতে পারেনি, বঙ্গবন্ধুকে ছাড়া বাংলাদেশের কোনো বাস্তব অস্তিত্ব নেই। বঙ্গবন্ধুকে সব সময়ই স্মরণ করতে হবে। বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুকে সব সময়ই স্মরণ করবে। এ কথা বললেও ভুল বলা হবে না যে, জীবিত মুজিবের মতো মৃত মুজিবও আমাদের কাছে জীবন্ত, পরাক্রমশালী ও শক্তিশালী।

জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×