somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রাণসখা অনিক আর বেলবাড়ি ঝর্ণার গল্প

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা যখন বিনন্দপুর গ্রামের গহিন অরণ্যে পাহাড়ের উচু-নিচু পথ মাড়িয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছি দূরের পাহাড় গুলো আরো সুন্দর লাগছিলো। তারেকের কন্ঠে সুর উঠলো..‘গ্রাম ছাড়া এই রাঙ্গামাটির পথ... আমার মন ভুলায় রে...!’ সত্যি যেনো আমরা রাঙ্গামাটিতে ঘুরতে গেলাম। দুপুরের সূর্য তখন মধ্যাকাশে। আট জনের দলটি পথে পথে সেলফি তুলতে তুলতে হঠাৎ চোখে পড়লো পাহাড়ের মাঝে ‘একটা বসতঘর’। এই বাড়ির উঠোন দিয়ে যেতে হয় বেলবাড়ি ঝর্ণায়। বাড়িতে পা রেখেই দেখতে পেলাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ‘ঢেঁকি’। বাড়ি কর্তা নিরঞ্জন বিশ্বাসের অনুমতি নিয়ে ধান ভাঙ্গার কয়েকটা ছবি তুলে নিলাম । দু‘জন মহিলা আর একজন কিশোরীর ধান ভাঙ্গার দৃশ্যটি ছিলো আমাদের অনেকের কাছে নতুন এক অভিজ্ঞতা। সেগুন গাছে ফুল এসেছে, দিন কয়েক পরে গুটি ধরবে। নিরঞ্জন বিশ্বাস দুরে পাহাড়টি দেখিয়ে বললেন, এই জায়গাটাই বেলবাড়ি। অসংখ্য বেল গাছের উপস্থিতি সত্যি জায়গাটার নামকরণের স্বার্থকতা রেখেছে। সুরমা ছাড়া খাল পাহাড়ের বুকে বহে এসে বেলবাড়ি ঝর্ণার উৎপত্তি হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানালেন। বেলবাড়ি ঝর্ণা; মৌলভীবাজার জেলার জুড়ি উপজেলার গোয়ালবাড়ি ইউনিয়নের বেলবাড়ি গ্রামে । তবে গ্রামটিতে জনবসতি খুবই কম। পাহাড়ি ‘মুন্ডু’ সম্প্রদায়ের লোকজন পাহাড়ে ছড়িয়ে ছটিয়ে বসবাস করেন। জুড়ী উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে এই র্ঝণা। বিনন্দপুর গ্রাম থেকে দুই কিলোমিটার পাথে হেটেঁ যেতে হয় ঝর্ণার ধারে।


পূর্ব কথা:
২৬ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ ঈদের পর দিন সকালে আমিনুল চাচার বাড়িতে ঘুম থেকে উঠেই ছোট ভাই আর জে জাকিরকে ফোন দিলাম! বলতেই মটরসাইকেল নিয়ে হাজির আমার বিলপারের ভাঙ্গা কুটিরে! রওয়ানা দিলাম প্রিয়বন্ধু তারেকের বাড়ি বিয়ানীবাজারের মোল্লাপুর! কাঁদামাটির রাস্তা পেরিয়ে সকাল সাড়ে ১১টায় তারেকের বাড়ি পৌঁছালাম! তারেকের দোলাভাই, আপা, মা-বাবার সাথে কতক্ষণ কুশলাদি বিনিময় শেষে চললাম জুড়ি উপজেলার উদ্দেশে! প্রথমেই বন্ধু বা মামু সাইফুর রহমান রাজনের বাড়ি! মাঝ পথে প্রিয় ছোট ফুফাতো ভাই টিপু যোগদিলো সাথে। রাজনের বাড়ি গিয়ে কাজের লোক দিয়ে খবর দিলাম! মামাতো আমার ভিজিটিং কার্ড দেখে পুরাই অবাক! এক চট গালাগাল দিয়ে মামাকে সাথে নিয়ে যাত্রা শুরু হলো প্রাণসখা আতিকুর রহমান অনিকের বাড়ি! সাথে আমি, তারেক, টিপু, জাকির আর রাজন মামু।

চা-বাগানের মাঝ দিয়ে চলছে আমাদের দ্বি-যান। চা-য়ের পাতাগুলো যেনো শিল্পির হাতে গড়া। জুড়ি উপজেলা সদর থেকে ধামাই চা বাগান ফেলে তবেই অনিকের বাড়ি। গ্রামের প্রবেশ পথে প্রভাষক অনিক আগে থেকেই অপেক্ষমান ছিলো। সে আবার স্থানীয় হাজি আপ্তাব উদ্দিন আমেনা খাতুন ডিগ্রি কলেজ এর ইংরেজী সাহিত্যের প্রভাষক। কাদাঁমাখা পথ মাড়িয়ে আমরা অনিকের বাড়ি পৌছাঁলাম।
অনিকের বাড়িতে দুপুরের খাবারটা বেশ ভালোই হলো । খালাম্মা নিজ হাতে রান্না করে খাওয়ালেন আমাদের। ঘন্টাখানিক সেখানে অবস্থান করে অনিকের পরার্মশে রওয়ানা দিলাম বেলবাড়ির উদ্দেশ্যে। অনিক ফোন করে তার ছোটবেলার দুই বন্ধু সুয়েবুর রহমান আর নাসির আহমদকে আমাদের সাথে নিলো। জুড়ি নয়া বাজার হয়ে আমাদের পথ চলা এখন বেলবাড়ি। পথিমধ্যে দেখে নিলাম কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদ্য নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেনের বাড়ি। জাকির হোসেনের গ্রামের রাস্তাটা এখনো পাকা হয়নি। তাই কাছ থেকে বাড়িটা দেখা হয়নি। প্রায় বিশ মিনিট রাজনের মটরসাইকেলের পেছনে বসতে হলো। তারপর পৌছাঁলাম বিনন্দপুর গ্রামে। অনিকের আর নাসিরের পরিচিত একজনের বাড়িতে আমাদের দ্বি-যান গুলো রেখে শুরু হলো যাত্রা বেলবাড়ির উদ্দেশ্যে।

পাহাড়ের ফাঁকে ফাঁকে ধান চাষ হয়েছে। চারিদিকে সবুজের সমাহার। দূরের পাহাড়গুলো যেনো ঢেউ খেলে যাচ্ছে। প্রায় আধা ঘন্টা পায়ে হেটে সুরমা ছড়া থেকে সৃষ্ট ছোট ঝর্ণায় পৌছালাম, সে কি অপরুপ দৃশ্য। (বাকিটা আসছে..)

সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:১৫
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×