somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রক্ষক যখন বক্ষক হয়।

০৭ ই জুলাই, ২০২২ রাত ২:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কি থেকে কি হয়ে গেল বোঝার আগেই আমাকে নিয়ে আসা হয়েছে জায়গাটা গুমোট আর গরম এমনিতেই দুইদিন ধরে গরম পড়েছে । আমার অপরাধ ছিল রেগে যাওয়ার কারণ তাই খুব সহজেই হেরে গিয়েছি। একটা কথা কি, মানুষের জীবনে অদ্ভুত কিছু গল্প তৈরি হয়ে যায় খুব সন্নিকট মুহূর্তের মাঝে। জায়গাটাকে পায়খানার সাথে তুলনা করলে আমার ভালো লাগতো কিন্তু সামনে এক শাড়ি লোহার গ্রিল থাকায় সেটাকে আসামি সেল বলা হয়। এই আসামি সেলের ভেতরে নিজেকে কিছু সময়ের জন্য আসামি মনে হলেও নিজস্ব সত্ত্বার কাছে নিজেকে নিরপরাধ ই মনে হয়েছে বার বার , কারন একটাই সত্য বিবেক জাগিয়ে রেখে ছিল আমাকে নিষ্পাপ , শুধু এই বিশ্বাসে সত্য কে সাময়িক দমিয়ে রাখা যায় , কিন্তু সত্য কে ধ্বংস করা যায়না।

একটা জীবন মুহূর্তে পাল্টিয়ে, সন্নিকট সময়ে যোগ হয়ে
যায় জীবনের অধ্যায়ে নতুন গল্প। সেলের বাহির থেকে ভেতরের সেই আমাকে দেখতে কেমন দেখাতো বার বার অনুভব করি সেই মানুষ টা কে? আমি নাকি অন্যকেউ? বার বার নিজেকে ভেঙে ফেলি আবার নতুন করে তৈরি করি একটি ভোরের অপেক্ষায় আর ভাবি কখন ভোর হবে কোন এক চেনা মুখ আমাকে মুক্ত আকাশে ছেড়ে দিতে আসবে।

সত্যিকার অর্থে , এই পৃথিবীতে মুখের অভাব নেই কিন্তু প্রিয় মুখের খুবই অভাব রয়েছে, মা কে জিজ্ঞেস করলাম আমাকে কেন দেখতে আসনি ? মা বলে, এভাবে কোন মা তার সন্তান দেখতে চায় না রে বাপ। মা শুধু আলোছায়া, শ্রাবণের ভেসে বেড়ানো মেঘে মেঘে আমাকে দেখতে চাই। মা বলে একদিন এই নরকব্যূহ ভেদ করবে। করবেই। করতেই হবে। মুক্তির বন্দি জীবন চিরস্থায়ী হতে পারে না। হবে না। কক্ষনো না। কিছু কিছু সময় কিছু মুখ না দেখতে চাওয়া মানুষ গুলোর মাঝে অপার্থীব ভালবাসা খুঁজে পাওয়া যায়। আবার অনেক মুখ না দেখাতে ও অনেক ঘৃণা অনেকের প্রতি জড়িয়ে থাকে। বাবা আমাকে সব সময় বলতো , শোনো বাবা তুমি যত সহজ সরল হবা , তোমার চলার পথটি ততটাই সহজ সরল হবে , আর তুমি যত আঁকাবাঁকা হবা তোমার চলার পথ টি তত আঁকাবাঁকা থাকবে , যদি বাবা বেঁচে থাকত বাবাকে বলতাম তোমার কথাটি আমি উল্টো করে দিলাম, তোমার কথা এই বর্তমান সমাজে অচল কয়েন, যা চলে না। লেখাটি এখানেই শেষ হতে পারত কিন্তু না..

সময় যখন কাক ডাকা ভোর সেলের পাশে জানালা দিয়ে থাকিয়ে কাকদের বুঝা পড়া দেখতাম , দেখতাম তাঁদের একাত্মতা , দেখে মনে হল তাঁদের মাঝে লুকিয়ে আছে কি অদ্ভুদ মহানুবতা, নিজের গায়ে থুথু দিতে লাগলাম আর ভাবতে লাগলাম আমরা কীভাবে আশরাফুল মাকলুকাত হলাম ? কেউ একজন আসছে বুঝতে পারছি , বসা থেকে দাঁড়িয়ে সালাম দিলাম , বিপদের সময় যে কেউ পাশে আসে থাকেই আপন মনে হয়, খুব ভরসা পেলাম আর ওনাকে জিজ্ঞাসা করলাম আচ্ছা আমার নাম ঠিকানা নিচ্ছেন, তাহলে কি আমি বেরিয়ে যেতে পারবো? দেখো , এখানে আসা টা খুব সহজ, কিন্তু বেরিয়ে যাওয়া টা এতটা সহজ নয়। তোমার জীবন মাত্র শুরু সামনে অনেক কিছু বুঝতে পারবা, বুঝতে বাকি রইল না, লোহার শিকলের বাহিরে আরও শিকল আছে, সময় আনুমানিক তিনটা আমার প্রিয় বাল্য বন্ধু আসলো আমার জন্য খাবার নিয়ে , ওর মুখটি কেমন জানি শুকিয়ে আছে , এভাবে হয়তো সে ও দেখতে চাইনি , সেলের শিকল টা বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল , শুধু বন্ধুর বুকটা আমার বুকের সাথে মেলাতে পারি নি। কিরে কি হয়েছে? খারাপ কিছু ? কাল তোর জামিন হবে কোর্টে , আমি তোর ব্যর্থ বন্ধু , কিছুই করতে পারলাম না তোর জন্য , বলে চলে গেল । ব্যাথার প্রকাশ শুধু কান্নাতেই যে হয় তা নহে। হাসিতেও ব্যাথা লুকিয়ে থাকিতে পারে। আসলে এই জগতে অনেক কিছু মানিয়ে নিতে না চাইলে ও কিছু কিছু সময় নিতে হয়।

আমার হাতে হ্যান্ডকাপ লাগাচ্ছেন কেন ? জবাবে , আপনার চেয়ে বড় বড় মানুষের হাতে হ্যান্ডকাপ লাগাই আর আপনার হাত? আমার দায়ীত্ব ই মানুষের হাতে হ্যান্ডকাপ লাগানো। নিজেকে বোঝাতে পেরেছি আসলেই ত আমার একটা হাত , আমি এতো বড় ও না। নেলসন মেন্ডেলার কথাটি মনে পরে গেলো।

” যে সত্যিকার অর্থে কেউ একটি জাতিকে জানতে পারে না , যতক্ষণ না , কেউ একজন এর কারাগারে বন্দী থাকে।“

আমার অপরাধ একটা ঘটনার জন্য তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়েছিলাম। এই সূত্র ধরে ওসি আমাকে গালি দিয়ে বলে ওই সালা এখানে কি ? দেখস না একটা ব্যক্তিগত কথা বলছি , সর এখান থেকে, স্যার আমাকে গালি না দিলে ও আমি এখান থেকে চলে যেতাম। ওনি আমাকে বলে তোর সাহস দেখি কম না। একটা পর্যায়ে উনি আমার সাথে বারকেডিং করে ৫১ দ্বারায় একটি মামলা দিয়ে দেয়। থানায় নিয়ে আমাকে অকত্ত বাসায় গালি গালাজ করে সেটাই না হয় না বললাম। যে দেশে ভালো মানুষের মূল্যায়ন নাই সে দেশে কীভাবে শৃঙ্খলা বোধ থাকতে পারে?

ওসি আমাকে বলে, সাংবাদিকতা করার জন্য লাইসেন্স থাকতে হয়। আমি বলি, একজন লেখক হিসেবে লিখতে লাইসেন্সের প্রয়োজন পরে না তাই কষ্ট করে লেখাটি লিখেছি। একজন সাংবাদিক চাইলে সমাজ দেশে সমাজে শান্তি শৃঙ্খলা সুঘটিত নিশ্চিত করতে পারেনা , এখানে সকলের অগ্রনি ভূমিকা থাকতে হবে দেশে, সমাজে, শৃঙ্খলা শান্তি ফিরিয়ে আনতে।

লেখকঃ মোঃ সোহেল রানা
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×