somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এই তবে বন্ধুতা ...

০২ রা আগস্ট, ২০০৯ দুপুর ১২:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

...এরপর একজন উজ্বল তরুন উঠে দাঁড়ান এবং বিনম্র কন্ঠে বলল, প্রভু , আমাদের 'বন্ধুতা' বিষয়ে কিছু বলুন। আল-মোস্তফা প্রেরিত সে পুরুষ, কবিতার মত বিমুর্ত ও গভীর দৃষ্টিতে তাকালেন, তরুনের দিকে। তারপর ধীরে ধীরে স্পষ্ট উচ্চারনে বলতে লাগলেন ---

"বন্ধু তো সেইজন, যে ধারন করবে তোমার সমস্ত প্রশ্নের উত্তর। তাকে দেখেই তোমার চোখে মুখে জাগবে ধ্বণিত ধৈবত। তুমি বুঝতে পারবে আলো, আলো আসছে...। তার নিজস্ব ভুমিতে তুমি শস্য রোপন করবে গভীর ভালোবাসায় আর সঠিক সময়ে শস্য উত্তোলন করবে অবারিত কৃতজ্ঞতায়। সে হবে তোমার ঐশ্বর্য যা তোমাকে দান করবে জীবনের উষ্ণতা। তুমি তোমার দুচোখ তৃষ্ণার মত তুলে ধরবে তার দিকে আর সেই হবে তোমার তৃষ্ণা নিবারনী।

যখন সে তার হৃদয় উন্মুক্ত করবে তোমার কাছে যত অন্ধকারই হোক তা, তুমি ভয় পেয়োনা আর বন্ধুকে কখনো 'না' বলোনা। যখন সে মৌন তখন কিছুটা সময় তাকে একা থাকতে দাও। তার নিজস্বতাকে তুমি তছনছ করোনা। শরতের স্নিগ্ধ আলো হও...বৈশাখের খরতাপ হয়ো না। বন্ধুতা তো সেই স্বর্গীয় অমরাবতী যেখানে অপার্থিব আনন্দের মাঝে পাখি ডাকা নিস্তব্ধতায় জন্ম নেয় স্বপ্ন, ইচ্ছে, আকাংখা।

বন্ধুতায় কখনো দুরত্ব সৃষ্টি হলে ভেঙ্গে পড়ো না। সাময়িক দুরত্বে বরং অনুভুতি আরো স্পষ্ট হয়, যেমন সমতল থেকেই সবচেয়ে ভালো দেখা যায় পাহাড়ের চূড়ো। বন্ধুতায় কখনো প্রাপ্তির প্রত্যাশা রেখো না। ওটা তবে বন্ধুতা নয়। বন্ধুতা তো এক সংজ্ঞাহীন, বেহিসেবী অনূভুতির আশ্চর্য অনুবাদ। তুমি তোমার সবচেয়ে ভালো যা কিছু উতসর্গ করো বন্ধুর জন্যে। সে যদি তোমার আবেগে ভাঁটা দেখে- জানিয়ে দাও এরপরই জোয়ার আসবে।

তাকে কখনো মৃত্যু, হাহাকার ধ্বংস দেখিও না। বন্ধুর ভেজা হাতের আঙ্গুল ছুঁয়ে তুমি বেঁচে উঠো, তোমার হাত বাড়িয়ে তাকে বাচিঁয়ে তোলো। তোমার দুঃসময়ে তাকে সহযোগীতার সুযোগ দাও কিন্তু নিজেকে কখনও মুল্যহীন করোনা। আর দুজন পরস্পর কে আলোকিত করো। যে আলোর ভিতর সব রঙ এর উৎসার ঘটে। সে আলো অনিঃশেষ ও শান্তিকামী। এ সব কিছুই জীবনকে দেয় কোমল সকাল, স্নিগ্ধ সজীবতা -

এসব নিয়েই বন্ধু ...এই তবে বন্ধুতা ...


(Kahlil Gibran এর The Prophet থেকে হাসান মোরশেদ এর অনুবাদ)
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা আগস্ট, ২০০৯ দুপুর ১:৩৭
৮১টি মন্তব্য ৮১টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×