somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিহিন, আমার সম্ভাব্য গার্লফ্রেন্ড !! (পর্ব ২) ;) ;) ;) ;)

২০ শে জুন, ২০১২ দুপুর ১২:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

-স্যার আজকে আর পড়বো না ।
-কেন পড়বা না ?
-স্যার খুব ফুচকা খেতে ইচ্ছা করছে । এখন ফুচকা না খেলে আর পড়ায় মনই বসবে না । আপনি একটু বসেন । আমি আম্মুর কাছ থেকে টাকা নিয়ে ফুচকা কিনতে যাবো আর আসবো ।
শামসের একবার কিছু মনে হলে তা না করা পর্যন্ত আর তার শান্তি নেই । আর খাওয়ার কথা হলে তো কোন কথাই নাই । বললাম
-ঠিক আছে । আর ফারিয়াকে ডাক দাও । সবাই মিলেই খাই ।
শামসের হাসি বিস্তৃত হল ।
শামসের বাড়ির ঠিক সামনেই ফুচকা চটপটির দোকান । তিন প্লেট ফুচকার অর্দার দিয়ে ওয়েট করছি এমন সময় আবার সেই কণ্ঠস্বর শুনতে পেলাম ।
-শামস কি খবর ?
-নিহিন আপু কেমন আছেন ?
-ভাল ।
-কি করছো তোমরা ?
এই মেয়েগুলো এমন ন্যাকামো মার্কা প্রশ্ন কেন করে ? ফুচকার দোকানের সামনে মানুষ নিশ্চই ফুচকা খাওয়ার জন্যই দাড়াবে !
আশ্চর্য !
-ফুচকা খেতে এসেছি আপু । স্যার আমাদের ফুচকা খাওয়াচ্ছে ।
-আচ্ছা।
নিহিন হাসল । আবার বলল
-তোমাদের স্যার কি কেবল তোমাদের কেবল আইসক্রিম আর ফুচকাই খাওয়াই নাকি তোমাদেরকে পড়ায়ও ?
আমি বললাম
-আমি সবকিছুই করি ।
-আচ্ছা !
দোকানদার কে আরো এক প্লেটের অর্দার দিলাম । আজকেও দেখলাম সেদিনের মত নিহিন একটুও বিনয়ী হল না ।
না আমার জন্য অর্দার দেওয়ার দরকার নাই , আমি খাবো না এরকম কোন কথাই নাই !
আশ্চর্য মেয়ে রে বাবা !
ফুচকা খাওয়া শেষে শামস আর ফারিয়া চলে গেল ।
আমারও বাসায় যাওয়া দরকার !
-বাসায় যাবেন এখন ?
-হুম !
-যেতেতো হবে ! কেন কেউ কি অপেক্ষা করছে ?
আমি হেসে উঠলাম নিহিনের কথা শুনে ।
-কি হাসছেন কেন ?
-হাসির কথা বললে হাসবো না ?
নিহিনও হাসল !
আমি নিহিনের হাসিটা একটু মনযোগ দিয়ে দেখলাম ।
নিহিন হাসলে গালে খানিকটা টোল পরে । নিহিন মনে হয় বুঝতে পেরেছে যে ওর হাসি দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি । ও খানিকটা লজ্জা পেল যেন ! বলল
-আপনি তো সেদিনের পর আর ফোন দিলেন না ?
-আপনিও তো করেন নি ?
-একটা মেয়ে হয়ে আগ বাড়িয়ে কিভাবে ফোন করি বলুন ? কেমন একটা বেহায়াপানা হয়ে যায় না ?
-আচ্ছা এই কথা ? আমিও তো বলতে পারি যে একটা সুন্দরী মেয়েকে বিনা কারনে ফোন করাটা কেমন দেখায় ! সেই মেয়েটা যদি কিছু মনেটনে করে বসে !
নিহিন আমার দিকে খানিকক্ষন তাকিয়ে থেকে হেসে ফেলল । বলল
-এভাবে বলতে গেলে ঝগড়া লেগে যাবে । ঠিক আছে , এবার থেকে ফোন দিলে আমি কিছু মনে করবো না ।
আমি খানিকটা অবাক হই । এই মেয়েটা আমার প্রতি কি একটু বেশিই আগ্রহ দেখাচ্ছে না ?
কিন্তু কোন কারন আছে কি ? নিহিনের সাথে কথা বলা শুরু হল । মোটামুটি ভালভাবেই শুরু হল ।
আস্তে আস্তে ওর প্রতি দুর্বল হতে শুরু করেছি । জানি না নিহিনও এমন ভাবে আমার কথা ভাবে কিনা ।
কয়েকদিন পরের কথা ।
আমি টিউশনি থেকে বের হয়ে হাটছি আপন মনে । এমন সময় ফোন বেজে উঠল । নিহিন ফোন করেছে ।
-হ্যালো ।
-দাড়ান ।
-দাড়ান মানে?
-মানে হল দাড়ান । আমি আপনার পিছনে ।
পিছনে ঘুরে দেখি নিহিন আসছে । আমার কাছে এসে বলল
-কি ব্যাপার ডাক দিলাম শুনলেন না যে ?
আমি বোকার মত হাসলাম । বললাম
-খেয়াল করি নি । আসলে ঢাকা শহরে আমার পরিচিত মানুষ খুব কম । আর রাস্তায় তো পরিচিত কারো সাথে কখনও দেখাই হয় না । তাই ... আসলে খেয়াল করি নি ।
-বুঝলাম ।
নিহিন আমার সাথে সাথে হাটতে লাগল ।
শামসদের বাসা থেকে বেরিয়েই বেইলী রোড । আমি এইটুকু হেটে এসে এখান থেকে রিক্সা নিই । বেইলীরোডের মাথায় এসে নিহিনকে বললাম
-আপনি কোথায় যাবেন ?
নিহিন বেইলীরোডটার দিকে ইশারা করল ।
-আচ্ছা তাহলে আমি আজকে বরং যাই ?
-যাই মানে ?
নিহিন চোখ কপালে তুলল ।
-মানে বাসায় যাবো !
-কোন বাসায় যাওয়া যায়ী নাই । চলেন আমার সাথে । না মানে রাত হয়ে ...
নিহিন খুব স্বাভাবিক ভাবে আমার হাত ধরল । বলল
-বেশি ন্যাকামো করবা না । চল ।
আমি আর কিছু বলতেই পারলাম না । ও আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে গেল বেইলী রোডের দিকে ।
আমি শামসকে পড়াই প্রায়ই দুবছর । প্রতিদিন এই বেইলীরোডটার সামনে দিয়ে যাই । তবুও কেন জানি এই রাস্তাটাতে ঢুকতে আমার একটু অস্বস্তি লাগে ।
চারিদিকে এতো মানুশ বিশেষ করে চারিদিকে এতো জুটি , এর মাঝে চলে এলে নিজেকে কেন জানি কেমন অবানঞ্চিত মনে হয় ।
কিন্তু আজকের ব্যাপারটা সম্পর্নই ভিন্ন । আমার কেমন জানি অদ্ভুদ লাগছে । অদ্ভুদ এক আনন্দের অনুভূতি হচ্ছে ।
নিহিন আমাকে নিয়ে রাস্তার এক পাশে বসে পড়ল । দেখলাম আরো অনেকেই বসেছে । বেশির ভাগই কাপল । নিহিন বলল
-কি খাবা বল ?
এই সেরেছে রে ! আজ তো মানিব্যাগে বেশি টাকা আনি নি ! কি খাবো কয়টাকা বিল হবে !
মান সম্মান বুঝি আর রইল না । আমি কোন মতে বললাম
-ফাস্ট ফুড আমার একদম ভাল লাগে না । ফুচকা পাওয়া যাবে ?
নিহিন একটু হাসল ।
-দেখেছো আমাদের মধ্যে কত মিল । আমারও ফাস্টফুড একদম ভাল লাগে না । তার চেয়ে ফুচকা অনেক বেটার !
নিহিন ফুচকার অর্দার দিল । নিহিন এখনও আমার হাত ধরেই আছে । তাই একটু অস্বস্তি লাগছিল ।
হাতটা একটু টান দিয়ে ছাড়ানোর চেষ্টা করলাম । দেখলাম নিহিনের হাতে টান লাগল । তারমানে ও আমার হাতটা ভাল করেই ধরেছিল । নিহিন আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-তোমার কি অস্বস্তি লাগছে আমি তোমার হাত ধরে আছি বলে ।
আমি অস্বস্তি ভরা হাসি হাসলাম । বললাম
-একটু ।
নিহিন খুব হাসল আমার কথা শুনে । ফুচকা খাওয়া শেষে বিল দিতে গেলাম , নিহিন আমাকে আটকালো । বলল
-টাকা পয়সা কি বেশি হয়ে গেছে ?
-কেন ?
-বিল দিতে যাচ্ছ কেন ? আমি তোমাকে নিয়ে এসেছি আমি তোমাকে ফুচকা খাইয়েছি বিলও আমি দেবো । নাকি আমি মেয়ে হয়ে বিল দিলে তোমার ঈগোতে লাগবে ।
-না না সমস্যা নেই । ঈগোতে কেন লাগবে ?
নিহিন বিল দিয়ে এল । নিহিনের সাথে হাটতেছি এমন সময় নিহিন বলল
-আচ্ছা আমি তোমাকে সেই কখন থেকে তুমি করে বলছি । আর তুমি আমাকে তুমি বলে একটা সম্মোদ্ধন কর নি ।
কথা সত্য । আমি আসলেই ওকে তুমি করে একটা কথাও বলি নি । আসলে আমি তো এই মেয়ে গুলার মত এতো এডভান্স না । চট করেই কোন মেয়ে আপনি থেকে তুমি বলা যায় না ।
আমি অন্তত পারি না । এই মেয়ে আসতে আসতে আমাকে চমকে দিচ্ছে । জানি না সামনে আরো কত কিছু করবে !


নিহিন, আমার সম্ভাব্য গার্লফ্রেন্ড ! (১ম পর্ব)
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুন, ২০১২ দুপুর ১২:০০
১৮টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×