somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেয়েদের মাথায় এমনই বুদ্ধি আসে =p~ =p~ =p~

২৭ শে জুন, ২০১২ বিকাল ৩:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মৌচাক মার্কেটের পাশে যে ওভার ব্রীজটা আছে তন্নী ঠিক তার নিচে দাড়িয়ে আছে । ময়লায় ডাস্টবিন থেকে একটু দুর্গন্ধ নাকে এসে লাগছে । একটু যে দুরে সরে যাবে সেটা ও করতে পারছে না । তার প্রধান কারনটা হল তন্নী পথ হারিয়েছে ।
এই এলাকায় ও আগে কখনও আসে নি । আজকেই প্রথম এসেছে । ওর একটু ভয় ভয় করছে ।
কিন্তু ভালও লাগছে খুব । তন্নী খুব ভাল করেই জানে কিছুক্ষনের মধ্যেই অপু এখানে চলে আসবে । ও যতবারই পথ হারায় ততবারই অপু ওকে খুজে বের করে হোস্টেলে পৌছে যায় ।
একটু আগেই ও বাসায় ফোন করেছে । বলেছে যে ও আবার পথ হারিয়ে ফেলেছে । তন্নীর মা খানিকক্ষন বকাবকী করল । তারপর বলল
-যেখানে দাড়িয়ে আছিস যেখানেই দাড়িয়ে থাক । আমি অপুকে ফোন করছি ।
তন্নী এই কথাটা শোনার জন্যই ওয়েট করছিল ।
অপু ওকে নিতে আসবে । অপুর সাথে রিক্সা কিংবা সিএনজিতে চড়তে পারবে এটা ভাবতেই তন্নীর মনটা একেবারে ভাল হয়ে গেল ।
এমন সময় তন্নীর মোবাইলটা বেজে উঠল । অপু ফোন করেছে ।
-হ্যালো ।
-কোথায় আছো তুমি ? লোকেশনটা বলতে পারবে ?
-আমিতো ঠিক বলতে পারবো না ভাইয়া তবে মনে হয এটা মৌচাক মার্কেট । একটা ওভার ব্রীজ আছে । ওটার নিচে দাড়িয়ে আছি ।
-তুমি থাকো ফার্ম গেট । মৌচাকে গেলে কিভাবে ?
তন্নী কোন জবাব দিলো না । অপু আবার বলল
-আচ্ছা তুমি দাড়িয়ে থাকো আমি আসতেছি ।
-আচ্ছা ।
ফোনের লাইন কেটে গেল ।
ইস !
তন্নী ভাবল ।
ছেলেটা এমন কেন ? প্রয়োজন ছাড়া একটা কথাও বলে না । ফোনে আর দুচারতে কথা বললে কি এমন ক্ষতি হয় ! তন্নীর সব সময় একটু ছটফটে টাইপের ।
একাই এদিগ ও দিক চলে যায় । ওর সাথে কোচিং করতে আসা অন্য মেয়েরা যখন বিকেল বেলা বারান্দায় কিংবা হোস্টেলের ছাদে ঘুরে বেড়াতো তন্নী তখন আসেপাশের সব এলাকা ঘুরে বেড়িয়েছে ।
এমনই ঘুরতে ঘুরতে গ্রীন রোডের এক গলিতে ও প্রথম পথ হারিয়ে ফেলে ।
সেদিন কি ভয় ই না পেয়েছিল । বাসায় ফোন করে কান্না জুরে দিল । এমন একটা ভাব যেন ও মরে যাচ্ছে ।
তন্নীর মা তখনই অপুকে ফোন দেয় । অপু সম্পরকে তন্নীর মামানীর ভাগনে হয় ।
ঢাকাতেই পড়াশুনা করে । অপু সেই গলির মধ্যে থেকেই তন্নীকে খুজে বের করে ।
তারপর আরো কয়েকবার তন্নী এরকম পথ হারিয়েছে । প্রত্যেকবার অপু ওকে হোস্টেলে পৌছে দিয়েছে ।
প্রথম দুবার তন্নী আসলেই রাস্তা হারিয়ে ফেলেছিল । কিন্তু তার পরের গুলো সে ইচ্ছা করেই এমন টা করে ।
কেবল মাত্র অপুকে একটা বার দেখার জন্য । চাইলেই তো আর অপুর সাথে দেখা করা যায় না । অপু কি ভেবে বসতে পারে !
ভাবতে পারে কি নির্লজ্জ মেয়েরে বাবা ! তাই দেখা করা এই অভিনব পদ্ধতি সে বের করেছে ।
আর যদিও অপুর নাম্বার ওর কাছে আছে তন্নী সরাসরী অপুর কাছে কখনও ফোন করে না ।
প্রথমে ওর আম্মুর কাছে করে তারপর উনি করে অপুর কাছে ।
তন্নীদের আর কোন আত্মীয় নেই ঢাকায় । সুতরাং অপু ছাড়া আর কোন গতি নাই ।
আধা ঘন্টার মধ্যে অপু চলে আসল মৌচাক মার্কেটের কাছে । তন্নীকে দেখে এগিয়ে এল । বলল
-এতো দিন ঢাকায় থাকো এখনও পথ ঘাট চিনলে না ?
-বাসে উঠে ঘুমিয়ে পরেছিলাম । তাই বুঝতে পারি নি ।
-আচ্ছা ঠিক আছে ! এবার থেকে সাবধান থেকো । খেয়েছ কিছু ?
তন্নী মাথা নাড়াল ।
-চল আগে কিছু খেয়ে নেওয়া যাক ! এখানে মৌচাকের বিখ্যাত জিলাপী পাওয়া যায় ।
খাওয়া শেষে অপু যখন যাওয়ার কথা বলল তন্নীর মনটা খারাপ হয়ে গেল ।
অপুর সাথে সময় গুলো কেমন দ্রুত কেটে যায় ! আর একটু থাকা যেত ওর সাথে !
-ভাইয়া এই ভিড়ের মধ্যে বাসে উঠতে ভাল লাগছে না । রিক্সায় যাওয়া যাবে না ?
অপু কি যেন ভাবল ।
-হুম এখনতো বাসে ভিড়ই থাকবে । আচ্ছা চল রিক্সায়ই যাই ।
মৌচাক থেকে ফার্মগেট রিক্সায় আসতে বেশ সময় লেগে গেল ।
তন্নী তো তাই চাচ্ছিল । যত সময় লাগে লাগুক । ওর তো খুব ভাল লাগছিল । অপুর পাশা পাশি বসে এতো দুর আসা ! অপুর সাথে টুকটাক কথা বলছিল । হাসছিল ।
মাঝেসাঝে ওর হাতের সাথে হাত লেগে যাচ্ছিল । সব কিছুই যেন তন্নীর ভাল লাগছিল ।
ইস! প্রত্যেক দিনই যদি এমন হত ! তাহলে কতই না ভাল হত !
যখন অপু ওকে হোস্টেলের গেটে নামিয়ে দিল তখন দুপুর গড়িয়ে গেছে । অপু বলল
-এবার থেকে একটু সাবধানে থেকো , কেমন ?
তন্নী হাসল ।
প্রত্যেকবার অপু এই কথাটাই বলে যাবার সময় ।
-আচ্ছা ভাইয়া ।
-আর এবার থেকে আমার সাথে দেখা করতে ইচ্ছা হল এতো কিছু করার দরকার নেই । সরাসরি আমাকে ফোন দিও কেমন ?
এই কথাটা বলে অপু হাসল একটু ।
তারপর পেছন ঘুরে হাটা দিল ।
হায় হায়!! অপু তারমানে ওর চালাকী ধরে ফেলেছে!! কি লজ্জা !!
অপু এখন কি ভাববে!! লজ্জার ওর গাল দুটো লাল হয়ে এল !!
কিন্তু মনটাতে অসম্ভব এক ভাল লাগার অনুভুতি বয়ে গেল । অপু ওর মনের কথা বুঝতে পেরেছে!! এর থেকে আনন্দের আর কি হতে পারে !!





ফেবু লিংক


সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুন, ২০১২ বিকাল ৩:৩৪
৩০টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পার্বত্য চট্টগ্রাম- মিয়ানমার-মিজোরাম ও মনিপুর রাজ্য মিলে খ্রিস্টান রাষ্ট্র গঠনের চক্রান্ত চলছে?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:০১


মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা সেপ্টেম্বর মাসে আমেরিকা ভ্রমণ করেছেন । সেখানে তিনি ইন্ডিয়ানা তে বক্তব্য প্রদান কালে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী chin-kuki-zo দের জন্য আলাদা রাষ্ট্র গঠনে আমেরিকার সাহায্য চেয়েছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×