somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হরি দাস নতুন ভূত হয়েছে !!

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১২:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আমার মনে হয় চিন্তা করার জন্য সব থেকে ভাল স্থান হচ্ছে বাথরুম ! এখনে বসে যে সব যুগান্তকারী চিন্তা ভাবলা গুলো আসে তা আর অন্য কোথাও আসে না ।
আম অন্য দের কথা জানি না তবে আমি আমার জীবনে সব বড় চিন্তা গুলো এই বাথরুমেই বসে নিয়েছি । আজও বাথরুমেই বসে ছিলাম । কয়েকটা গবেষণার কথা উকি দিবে দিবে করছে এমন সময় চোখ গেল বাড়ির সানসেটের উপর !!
মনে হল কেউ যেন বসে আসে ! চারিদিকে মোটামুটি অন্ধকার । বলতে গেলে ঘুরঘুটর অন্ধকার । এই জন্য টয়লেটের দরজা খানিকটা খোলা রেখেছিলাম ।
আম্মা অবশ্য বলেছিল ভিতরের বাধরুমে যেতে । কিন্তু আমি কেন জানি বাইরের এই বাথরুমেই বেশি পছন্দ করি । এটা একেবারেই আমার নিজের বাথরুম । এটা আর কেউ ব্যব হার করে না। আমি যখন ঢাকা থাকি তখন এটাতে তালা মারা থাকে । বাসায় আসলে তালা খোলা হয় ।
বাথরুমটা ঠিক আমার ঘরের পাশে । বাম দিকে । বাথরুমের দরজা থেকে আমার ঘরের জানলা দেখা যায় । আর জানলার উপর সানসেট টাও দেখা যায় ।
আমি আবার তাকালাম সানসেট টার উপর । একদম ঠিক !! একটা কেমন মানুষের অয়বয় বুঝা যাচ্ছে । অন্ধকার আর একটু সয়ে আসলে লোকটার বডি শেপ আরো পরিষ্কার হয়ে উঠল । লোকটার সারা গা খালি । কোমরের কাছে কেমন একটা কাপড়ের মত জড়ানো আছে । কাপড়টার রং মনে হল সাদা টাইপ । ধুতির মত !
আমার সারা গায়ে কেমন একটা কাটা দিয়ে উঠল । কি করবো !!
এখনও কাজ শেষ হয় নি !! এই অবস্থায় উঠা সম্ভব না । আর ঘরের পাশে এভাবে ভয় পেলে কি চলে !! আমি বুকে একটু সাহস আনার চেষ্টা করলাম । গলা খায়ের দিয়ে বললাম
-কে রে ওখানে !!
-আমি কর্তা !
ভুল শুনলাম না তো ! কি বললম ওটা !! কোন চোর ছেচ্ড়া না তো !!
আমি আর একটু সাহস পেলাম
-আমি টা কে ?
-আমি কর্তা ! হরি দাস !!
আরে হরি দাস কে তো আমি চিনি । আমাদের গ্রামের পাশেই মলো পাড়ায় থাকে ! প্রায়ই আসে আামদের বাড়িতে মাছ বিক্রি করে । কিন্তু বেটা ঐখানে কি করে ? এখনই বা কি করে ? এই সময় ?
চুরি করার মতলব না তো !!
না, চুরি করার মতলব থাকলে কঠার জবাব দিতো না ।
আমি বললাম
-বেটা তুই ওখানে করিস ! দেখছিস না বাথরুমে আছি ।
-ক্ষমা দেন কর্তা । দরজা খোলা চিলতো তাই বুঝবার পারি নাই !
-যা দুর হ সামনে থেকে !
দেখলাম দ্রুত সরে গেল অয়বয়টা । আর ঠিক তখনই আমার মনে পড়লো কদিন আগেই মা ফোন করে বলেছিল যে হরি মালো মারা গেছে !!
বাথরুমে গিয়েছিল । কে বা কারা যেন বাথরুমের দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল বাইয়ে থেকে । বুড়োমানুষ ছিল । হার্ট এটার্ক করে মরে গেছে !!
তার মানে কি ! তাহলে কি এতোক্ষন কার সাথে কথা বললাম !! মনের ভুল ! না তাও তো না !
যখন বাথরুম থেকে বের হলাম দেখলাম হরিদাস কলপাড়টার কাছে কুজো হয়ে বসে আছে ।
না ঠিক আছে !! কোন ভুল না চোখের ! এখন কি করবো ! দৌড় মারবো? দরজা অবশ্য কাছেই । কিন্তু হরিদাস কে দেখে কেন জানি ভয় লাগলো না । সারা জীবন নিরীহ মানুষই ছিল লোকটা ! একে ভয় পাবার কিছু নাই ।
হরি দাস বলল
-কর্তা একটু বসবেন ? কয়টা কথা বলতাম ।
-কি কথা ?
-না তেমন কিছু না কর্তা ! অনেকদিন কারো সাথে কথাবার্তা বলতে পারি না । কথা বলতে গেলে সবাই কেমন ভয়তে পালায় !! আমি তো কাউকে ভয়টয় দেখাই না !
আমি বসলাম কলপাড়টার একপাশে । বললাম
-কি কথা বলবা বল !!
হরিদাস বলল
-সবাই কেমন ভয় পায় ! আপনি ভয় পেলেন না কেন?
-তোমাকে ভয় পাওয়ার কি আছে বল ? তোমাকে তো আমি খুব চিনি ! ছোট বেলা থেকে তোমার হাতের মাছ খেয়ে বড় হয়েছি ! মানুষ কেবল অজানা কে ভয় পায় । জানা কোন কিছুতে তার ভয় নাই ।
হরিদাসের মুখটা কেমন যেন হাসিহাসি হয়ে গেল ।
-কথাটা ঠিক বলেন না কর্তা !
-কেন ?
-তাইলে আমার বউ আমাকে সে দিন আমারে এতো ভয় পেল কেন !! আমার কথা শুনে তো অজ্ঞানই হয়ে গেল ।
-তাই নাকি ? কি ভাবে ?
-আর বলবেন না ! আমি যেদিন মরে যাই আমাকে আর পোড়ালো না । বুড়ো হয়েছি তো । সবাই বলল যে মাটি চাপা দিতে ! তাই দিয়ে দিল ! সন্ধা বেলা আমার বউটা আমার কবরের পাশে বসেছিল । আমি যেই না ডাক দিয়েছি ওমনি ভয়টে ঝেড়ে দৌড় !!
বলেই হরিদাস ফিক করে হেসে ফেলল ।
আমি বললাম
-এতে হাসির কি আছে ?
-কি বলব আর বলুন ! সারা জীবন বউটার কথা্য় উঠতে বসতে হয়েছে । বউটা খুব বজ্জাত ছিল । কোনদিন একটুও উচু গলায় কথা বলতে পারি নি । কিন্তু ঐ রকম দৌড় দেখ খুব মজা লাগলো !!
-তুমি দেখি ফাজিল আছো হরি দাস ।
-কি করবো কর্তা !! কি করবো বলেন সারা জীবন বউয়ের জীবন শেষ হয়ে গেছে । বউটা আমারে একটু শান্তি দিতে না । বুড়োকালে যে একটু শন্তি মত আরাম করবো সেইটাও করতে দিতো না । সারাক্ষন কানের কাছে ঘ্যানোর ঘ্যানোর করতো !! এখন একটু শিক্ষা হচ্ছে ।
-কি রকম ?
হরিদাস আবার হাসলো !
-আর বলবেন না, আমার বউ যখনই বাথরুমে যায় তখনই আমি পাশে গিয়ে তারে ডাক দেই । প্রথম প্রথম বুঝতে পারে না কিন্তু বুঝতে পারলে আর তাকে পায় কে !! সেদিন তো কিছু পরিষ্কার না কইরাই দৌড় দিল !! এক দৌড়ে ঘরের ভিতর !! হিহিহি !! সারা ঘরের....।হিহিহি !!
হরিদাস দাত বের করে হাসতে লাগলো !!
-তুমি তো দেখি খুব মজে আছো ।
হরিদাস বলল
-না কর্তা ঠিক মজে নাই । কারো সাথে কথা বলটে পারিনা । সবাই কেমন ভয় পায় । কতদিন পর যে আপনার সাথা বলতে পারলাম !!
-আচ্ছা অনেক কথা হল ! এখন যাই ঘুম আসছে !
-কালকি আবার আসবেন !!
-কেন ? একটু কথা বলতাম ।
আমি কি যেন ভাবলাম ! বললাম আসতে পারি তবে আমার একটা কাজ করে দিতে হবে !!
-কি কাজ বলেন ?
-আমার বউটা কে একটু ভয় দেখাতে হবে । পারবে?
-কি বলেন ?
-না তোমার বউয়ের মত আমারটাও আমাকে রাতদিন খুব জ্বালায় । বেশি না এই একটু ভয় দেখালা ! পারবা ?
হরিদাস দেখলাম কেমন করে হাসলো ! বলল
-খুব পারবো !
-এখানে না কিন্তু ! সে এখন তার বাপের বাড়ি আছে । পারবা?
-খুব পারবো !!
আমি হাসলাম মনে মনে !! আমার ব্উটা আসলেই জীবনটা আমার জ্বালাপালা করে ফেলেছে ।
যে কয়দিন বাসায় আসি একটু শান্তিতে থাকি । একটু না হয় মজা করলাম !
আমি মনের আনন্দ নিয়ে ঘরে শুতে গেলাম ।



)এটা কোন গল্প হয় নি । অনেকদিন ড্রাফট করা ছিল !! কিছু পোষ্ট করার ছিল না, তাই এটা পোষ্ট করলাম !!)
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১২:১৯
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×